বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত সৈয়দ আশরাফের বোন লিপি
আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রীর সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া কিশোরগঞ্জ-১ (সদর ও হোসেনপুর) আসনের পুনর্নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
রোববার (১০ ফেব্রুয়ারি) মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় বিকেল ৫টার পর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তাকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী।
সম্পর্কিত খবর
আজ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল আসনটিতে। শেষ বিকালে নাটকীয় আবহ তৈরি হয়। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে বিকেল পাঁচটা ৪০ মিনিটে শেষ প্রতিপক্ষ গণতন্ত্রী পার্টির প্রার্থী অ্যাডভোকেট ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন সশরীরে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে গিয়ে তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করায় আসনটিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি একক প্রার্থী হয়ে যান।
এর আগে শনিবার বিকালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মো. মোস্তাইন বিল্লাহ তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। ফলে তার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র। সে অপেক্ষা সন্ধ্যার পর ঘুচিয়ে দেন জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী। তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থী ডা. জাকিয়া নূর লিপির বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এ আসনের সংসদ সদস্য হওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন।
গত ৩১ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি, গণতন্ত্রী পার্টির প্রার্থী হিসেবে জেলা গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মো. মোস্তাইন বিল্লাহ মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর পর ৩ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাইকালে রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. সরাওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাকিয়া নূরের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে গণতন্ত্রী পার্টি ও জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র কাগজপত্রে কিছু ভুলত্রুটির কারণে বাতিল করেন।
পরে বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনে আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পান গণতন্ত্রী পার্টির প্রার্থী অ্যাডভোকেট ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. মোস্তাইন বিল্লাহ। প্রার্থিতা ফিরে পেলেও শেষ মুহূর্তে তারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থা সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এই আসন থেকে বিপুল ভোটে জেতেন। ১৯৯৬ সাল থেকে প্রতিবার বড় জয় পেয়ে আসছিলেন তিনি। ফলে আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবেই পরিচিতি পায়।
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রবাসী সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এই আসন থেকে ভোটে লড়তেন। ১৯৭৫ সালে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যার পর আশরাফ পারি জমান যুক্তরাজ্যে। ১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনের আগে তিনি দেশে ফিরে ভোটে লড়েন।
আশরাফের মৃত্যুর পর তার পরিবারেই মনোনয়ন রাখার সিদ্ধান্ত নেন শেখ হাসিনা, যদিও ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে এই আসনে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন মশিউর রহমান হুমায়ূন।
পিবিডি/এসএম