• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

নারী উপাখ্যান

প্রকাশ:  ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৩:১৩
আরিফ হাসান

নারী, এক স্বপ্নের নাম। তৃতীয় শ্রেণীতে পড়া এক ছাত্রও এই নারীকে নিয়ে মনের রাণী বানায়। রাজ্যে যুদ্ধ ঘোষণা করে,প্রতিপক্ষ তৈরি করে। জয় করে, অন্যের সাথে তুমুল যুদ্ধ করে। মনের মাঝে মহল বানায় আরও কত কি! কিন্তু কথা হচ্ছে বিয়ের পর কি এই নারী আপাদমস্তক পুরুষটির সবকিছুর জন্য স্বমর্থক?

তার নিজের জ্ঞান, মেধায়, মননে? হয়তো হ্যা! নয়তো না! আমার সংশয়! কিন্তু কথা হচ্ছে... এখন তো স্মার্ট কাজ হচ্ছে বিবাহ বিচ্ছেদ! এক বছর বা এক মাস বিয়ে-বিয়ে খেলে হাতিয়ে নাও লাখ লাখ টাকা! মজা নাহ দারুণ মজা কিন্তু হুমমম! আর একটা ছেলেকে ডিভোর্স করার সবচেয়ে সহজ কথা হচ্ছে- তার শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা আছে! শরীরের কথা তো সমাজে আরও বেশি গ্রহণযোগ্য। মেয়ে, একটু কেঁদে... একটু কেটে এ কথা কইলেই হয়, খাল্লাস..... সবাই ছেলেটার দিকে ঢ্যাপ ঢ্যাপ করে তাকায় হয়তো!

এটা বলে টাকা নাও। আর ইজিলি ওই আগের প্রেমিকের সাথে গিয়ে আরেকবার বাসরঘর বানাও। মেয়েটা চলে যাবার পর সবার চোক্ষু ওই পোলার দিকে! নিশ্চয়ই এ পোলার সমস্যা আছে নইলে বউ ছাইরা যায়....হুমমম!!

আমার মামারটা গেছে, এক বড় ভাইয়েরটাও গেছে। আবার নতুন আসছে। ও শূন্যস্থান পূরণ হয়। এটা ওই মহান ঈশ্বর এর লীলা! আদমের একাকীত্ব দূর করতে হাওয়া এসেছিলেন। তাদের দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। আবার সেই দূরত্ব ঘুচেও গিয়েছিল! আচ্ছা, তাহলে বাচ্চা কাল থেকে নারীকে জয় করার এত ধান্দা কেন? পাহাড়ে ফুল ফুটানো, সমুদ্রে সাতরানো, তাজমহল বানানো কি দরকার?

ছেলেগুলো কোন এক জায়গায় নারীকেন্দ্রীক! উৎসাহের কোন উৎসে নারীকেই পায়! আর নারীকুলও জানে, কাকে কিভাবে ব্যাবহার করতে হবে। শুধু একা গর্ভধারণ করতে না পারাটাই মনে হয় ব্যর্থতা! ফোরজি জেনারেশন যা! এই পদ্ধতি ও আবিষ্কার করে ফেলবে! হয়তো আবিষ্কৃত হয়েও গেছে!

নারীতে সুখ আছে- ঠোঁটে, বুকে, উরুতে, ভুরুতে। আর এজন্যই ছেলেগুলোর এত্ত অসুখ! কিছু দিনপর ছেলেগুলো অডিশন দিতে হবে নারীকে পালা পোশাবার জন্য। মেয়ের বাবা হয়তো বলবে- চুল চিরনি করে দিতে পারো? উকুন বেছে দিতে পারো? মাছে কাটা বেছে দিতে হবে কিন্ত। চুমু দিতে পার কতক্ষণ? বিছানায় কেমন সার্ভিস দাও? তোমার ঠোঁট এত কালো কেন? দেখি বুকে লোম কেমন? এমন হতে পারে নাও পারে! তারপরও আমাদের মহাকবি মহাজনেরা এই নারীকে এত সম্মান ভালবাসা দিয়ে গেছেন। আমাদের শিখিয়েছেন। কিন্ত তারা কি এর পুরোপুরি যোগ্য? প্রাপ্য?

থাক আর কিছু না ই বলি! পাঠক না আবার ভেবে বসে আমি নারীবিদ্বেষী! এটা ভেবে হাইকোর্টে তুলুক! দেশত্যাগ করতে বলুক! নারী আরও শিক্ষিত হোক পুরুষকে সম্মান দিতে এবং নিজের সম্মান আদায়ে সচেতন হোক! মেয়ে...বালিকা...কিশোরী...নারী থেকে উপরে উঠে, নিজেকে নারী না ভেবে মানুষ ভাবুক!

লেখক: গবেষক, নাট্যকলা ও পরিবেশনাবিদ্যা বিভাগে কর্মরত, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ।


/পিবিডি/একে

নারী
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close