আপনার অবসরের তারিখটা জানতে চাই, প্রধানমন্ত্রীকে রিজভী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজনীতি থেকে কবে অবসরে যাচ্ছেন সেই তারিখটি জানতে চেয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেছেন, পত্রপত্রিকায় আজ একটি খবর দেখে চমকে উঠলাম- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বলেছেন, তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণ করে বাকি জীবনটা কাটাবেন তার পূর্বপুরুষের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলব, খুব ভালো খবর। জনগণ সেই মাহেন্দ্রক্ষণ গণনা শুরু করেছে। কবে আসবে সেই সুখবর যে, আপনি রাজনীতি থেকে অবসর নিচ্ছেন। আমরা সেই তারিখটা জানতে চাই।
সম্পর্কিত খবর
বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, এর আগে ১৯৯৬-২০০১ এ প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে আপনি ঘোষণা করেছিলেন-৫৭ বছর বয়সে রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন। গত বছর ২৭ সেপ্টেম্বর আপনি ৭২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করেছেন। আর আট মাস পরে আপনার ৭৩তম জন্মবার্ষিকী পালিত হবে। তাহলে আর কত বছরে ৫৭ বছর বয়স হবে?
রিজভী বলেন, দেশের জনগণ আজ পর্যন্ত শেখ হাসিনার কোনো কথার সত্যতা খুঁজে পায়নি। মানুষ এখন মনে করে তিনি যেটা বলেন, করেন সেটির উল্টোটা। আমরা দেখেছি তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রসিকতা করেন, কখনো কাঁদেন, কখনো হাসেন, কখনো গান করেন। হরেক রকমের কথা বলেন। তিনি মদিনা সনদে দেশ পরিচালনার অঙ্গীকার করেন। মানুষের বিশ্বাসের জায়গাটা পুরোপুরি নষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, আমরা বিনীতভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করবো- আপনি অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত দ্রুত কার্যকর করুন। খুব তাড়াতাড়ি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। দেশের ‘জনপ্রিয় নেত্রী’ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে এ মূহূর্তে মুক্তি দিন। দেশের সাধারণ জনগণ ও গনতন্ত্রকে মুক্তি দিন। মানুষের ক্ষোভ ও ধিক্কার থেকে নিজেকে হেফাজত করুন। জনগণের ঘাড়ে আর অশরীরি জীবনের মতো জবরদস্তি করে চেপে বসে থাকবেন না। অনেক হয়েছে। এবার রেহাই দিন।
বর্তমান সরকার রোজ কেয়ামত পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চায় উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ২৯ ডিসেম্বর নিশীথ রাতে ভোট ডাকাতি করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী জোট ক্ষমতা দখলের পর তাদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা বা আত্মগ্লানি দেখা যাচ্ছে না। বরং তারা বেপরোয়াভাব সব সীমা লঙ্ঘন করেছে। তারা একের পর এক নির্লজ্জ বেহায়ার মতো লাগামহীন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে রোজ কেয়ামত পর্যন্ত মিড নাইট সরকার ক্ষমতায় থাকতে চায়।
রিজভী বলেন, গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে শেখ হাসিনার সম্মতিতে জিয়া স্মৃতি জাদুঘরকে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তরের জন্য প্রস্তাব এনেছেন মিডনাইট ইলেকশনের শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তার পরদিন গতকাল নামফলক কালি দিয়ে মুছে দেয়া হয়েছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলতে চাই, জোর করে কোনো কিছু চাপিয়ে দিলেও হৃদয়ের উপর কোনো হুকুম চলে না, জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদী দর্শন ও আদর্শের পিতা। জনগণের প্রেরণার উৎস। তার নাম বাংলাদেশি মানুষের হৃদয়ে গেঁথে রয়েছে। কোনো ষড়যন্ত্র তাকে বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারবে না।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম, আবুল খায়ের ভুইয়া, আব্দুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পিবিডি/এসএম