ডাকসু নির্বাচন: হল সংসদে ‘জনপ্রিয়দের’ প্রার্থী করছে ছাত্র ইউনিয়ন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) পাশাপাশি হল সংসদগুলোতেও জয়ের ছক কষছে ছাত্র ইউনিয়ন। এ ক্ষেত্রে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয়- এমন নেতা-কর্মীদের হল সংসদে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে একসময় ক্যাম্পাসে আধিপত্য ধরে রাখা বামপন্থী এ সংগঠনটি। দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমনটা জানা গেছে।
দলীয় সূত্র জানায়, সৎ, ত্যাগী, মেধাবী ও কর্মঠ- এমন নেতাকর্মীদের তালিকা করেছেন ছাত্র ইউনিয়নের শীর্ষ নেতারা। এরই মধ্যে তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকও করেছেন তারা। এসব শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক মান ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জনপ্রিয়তার বিষয়টিও মাথায় রাখছে ছাত্র ইউনিয়ন হাইকমান্ড।
সম্পর্কিত খবর
ছাত্র ইউনিয়ন নেতারা বলছেন, ছাত্র ও জাতীয় স্বার্থের সাম্প্রতিক বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে পরিচিতি পেয়েছেন- এমন নেতা-কর্মীর তুলে ধরবে দলটি। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয়, একইসঙ্গে আদর্শিকভাবে সমমনা শিক্ষার্থীদেরও প্রার্থী করবে ছাত্র ইউনিয়ন।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক হাসিব মোহাম্মদ আশিক বলেন, তালিকা ধরে সম্ভব্য প্রার্থীদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছি আমরা। প্রার্থিতার ক্ষেত্রে নেতা-কর্মীদের ত্যাগ ও মেধাকেই গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা।সর্বোচ্চ গণতান্ত্রিক সংগঠন হিসেবে শিক্ষার্থীদের কাছে পরিচিত এমন নেতাদেরই প্রার্থী করা হবে হল সংসদগুলোতে।
ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দীকে বলেন, আবাসিক হলগুলোতে এখনও সহাবস্থান নেই। ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের দখলদারিত্ব বিরাজমান। এ অবস্থায় আমরা দাবি করেছিলাম, ভোটকেন্দ্র হলের বাইরে নিকটস্থ একাডেমিক ভবনে স্থাপন করতে হবে। প্রশাসন দাবি না মানলেও আমরা ধারবাহিকভাবে আন্দোলন- কর্মসূচি পালন করে আসছি। একইসঙ্গে নির্বাচনেরও প্রস্তুতি নিচ্ছি।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর প্রথম ডাকসু নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল ছাত্র ইউনিয়ন। সে সময় হল সংসদগুলোতেও ছাত্র ইউনিয়নের সহাবস্থান ছিল। নির্বাচনে ছাত্র ইউনিয়নের প্রার্থীরাই জয় পেয়েছিল। এবারের নির্বাচন প্রায় তিন দশক পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ নির্বাচনেও জয় পেতে চায় আমরা। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অধিকায় আদায়ে ভূমিকা রেখেছে- এমন নেতা-কর্মীদেরই প্রার্থী করবো আমরা।
হল সংসদে সম্ভব্য প্রার্থী যারা
স্যার এ এফ রহমান হলে ছাত্র ইউনিয়নের প্যানেলে ভিপি পদে প্রাচ্য কলা বিভাগের জাহিদ জামিল ও জিএস পদে অংকন ও চিত্রায়ন বিভাগের আব্দুল করিম নির্বাচন করতে পারেন। হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের মাইনউদ্দিন ভিপি পদে ও মৃৎশিল্প বিভাগের তানভীর আহমেদ মঈন জিএস পদে প্রার্থী হবার কথা রয়েছে।
মাস্টারদা সূর্যসেন হলে ভিপি হিসেবে অর্থনীতি বিভাগের রুদ্রনীল রানার নাম জানা গেছে। জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা রয়েছে নৃবিজ্ঞান বিভাগের মোস্তাফিজুর রহমান রাহাতের। বিজয় একাত্তর হলে ভিপি হিসেবে প্রার্থী হচ্ছেন রাগীব নাইম। পারফরমেন্স স্টাডিজের এই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ভাস্কর্য বিভাগের শিমুল কুম্ভকার দাঁড়াতে পারেন জিএস হিসেবে।
মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে অর্থনীতি বিভাগের সাদনান সাকিব ও আইইআরের সজীব তালুকদারের কথা ভাবছে দলটি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিষ্টেমস বিভাগের মাহির শাহরিয়ার রেজা ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রত্ন প্রতীম মেহেদী কথা ভাবা হচ্ছে। কবি জসীমউদ্দিন হলে আইন বিভাগের ফাহিম শিহাব রেওয়াজ, স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের জুলফিকার হাওলাদার জিসান প্রার্থী হতে পারেন।
ড মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হল থেকে ভিপি প্রার্থী হচ্ছেন রসায়ন বিভাগের সালাউদ্দিন আহমেদ নিলয় ও পদার্থবিজ্ঞানের শোয়েব অনন্ত। জগন্নাথ হলে ইসলামের ইতিহাস বিভাগের অনুপম দত্ত ও জিএস হিসেবে টুরিজম এন্ড হসপিটালিটি বিভাগের নির্ঝর কান্তি পাল প্রার্থী হচ্ছেন। সলিমুল্লাহ হলে ক্রিমিনোলজির আদনান আজিজ চৌধুরী, নৃবিজ্ঞানের আবু সায়েম রাব্বীর কথা ভাবছে দলটির হাইকমাণ্ড। এছাড়া শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল থেকে সংস্কৃতি বিভাগের শাহবুদ্দিন, এফ এইচ হল থেকে ফলিত গণিত বিভাগের মাসুম রানা জয়, অমর একুশে হলে ইমরান মির্জার নাম শোনা গেছে।
পিবিডি/টিএইচ