তারেক রহমানকে দেশে আনতে একদলীয় শাসন ভাঙতে হবে: দুদু
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষক দলের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, দেশে স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এটা ভাঙতে হবে। এটা না ভাঙতে পারলে আমাদের নেত্রীকে জেল থেকে মুক্ত করতে পারব না। এটা না ভাঙলে আমাদের নেতা তারেক রহমানকে দেশে আনতে পারব না। তারেক রহমানকে দেশে আনতে একদলীয় শাসন ভাঙতে হবে।
বুধবার (৬ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসনের নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে অনুষ্ঠিত মানবন্ধনে এ কথা বলেন তিনি।
সম্পর্কিত খবর
দুদু বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে একদলীয় শাসন ভাঙতে হবে। আসুন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এক জায়গায় এক প্লাটফর্মে দাঁড়াই।
সাবেক এই ছাত্রদলের সভাপতি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য কারাবরণ করছেন। তাকে মুক্ত করতে, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক, মেহনতী মানুষ, যুবক সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। যেমন- ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে আমরা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম, যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম ৯০ এর গণঅভ্যুত্থান -সেইভাবে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
এসময় মানববন্ধনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের আরোগ্য কামনা করে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
তিনি বলেন, সবার চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার আছে। উনাদের এক নেতা বললেন, কাদের সাহেব ও খালেদা জিয়া এক নন। আমরা বলতে চাই, বেগম জিয়ার কোনো ক্ষতি হলে এর দায়দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, বেগম জিয়া আজকে কারাগারে। কোনো বিচারিক কারণে নয়, রাজনৈতিক কারণে তাকে কারাগারে রাখা হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের সব মানুষকে বন্দি রাখা হয়েছে।
গণআন্দোলনের মাধ্যমে বেগম জিয়াকে মুক্তি করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বেগম জিয়াকে জেলে রেখে গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরে পেতে হলে গণতন্ত্রের মাকে রাজনৈতিক অঙ্গনে ফিরে পেতে হবে।
মানববন্ধনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস-চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান, শামসুজ্জামান দুদু, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজজামান সেলিম, আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম, যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোর্তাজুল করিম বাদরু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বেগম জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। তাকে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে এই অবৈধ সরকার। সব মামলা জামিনযোগ্য হলেও শুধুমাত্র সরকারের প্রতিহিংসার কারণে তাকে মুক্ত করা যাচ্ছে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার খালেদা জিয়াকে ভয় পায়। কারণ কারাগারে যাওয়ার পর তিনি গণতন্ত্রের মাতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। তারা বেগম জিয়াকে এতটাই ভয় পায় যে, মনে করে তাকে সুচিকিৎসা করালেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারাবে।
বিএনপি নেতাদের নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, সারাদেশে আমাদের নেতাকর্মীদের নামে ৯৮ লাখ মামলা দেয়া হয়েছে। আসামি করা হয়েছে ২৫ লাখ।
সিটি নির্বাচন জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই নির্বাচনে তারা (জনগণ) ভোট দিতে যায়নি। কারণ এই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি জনগণের আস্থা নেই, তারা নির্বাচন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছি। একটি নির্দলীয় নির্বাচন কমিশন এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন দিতে হবে। এখন আমাদের সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। এর মাধ্যমে সরকারকে পুনরায় নির্বাচন দিতে বাধ্য করা হবে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান মিন্টু, কৃষকদলের নবগঠিত কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক নাজিম উদ্দীন মাষ্টার, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম, মিয়া মো. আনোয়ার, আব্দুর রাজী, কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, মৎস্যজীবী দল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ।
পিবিডি/এআইএস
