• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

নারীরা কতটা স্বাধীন!

প্রকাশ:  ০৮ মার্চ ২০১৯, ১০:৫০ | আপডেট : ০৮ মার্চ ২০১৯, ১০:৫৫
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। ‘সবাই মিলে ভাবো, নতুন কিছু করো নারী-পুরুষ সমতার নতুন বিশ্ব গড়ো’-এই প্রতিপাদ্য নিয়ে শুক্রবার যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস।

বাংলাদেশের সমাজে নারীরা স্বাধীনতা এবং অধিকারের প্রশ্নে এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন। শিক্ষা, কৃষি, চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্যে উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে নারীর অংশগ্রহণ। কিন্তু এখনও অনেকক্ষেত্রেই নারীর ইচ্ছার মূল্যায়ন হয় না। শিক্ষা, পেশা, পোশাক এমনকি জীবনসঙ্গী বাছাইয়ের মতো ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে প্রতিবন্ধকতার শিকার হন নারীরা।

সম্পর্কিত খবর

    বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয় শিক্ষা, পেশা, জীবনসঙ্গী এমনকি পোশাকের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার স্বাধীনতা কতটা?

    উত্তরে মরিয়ম আক্তার নামের এক ছাত্রী বলেন, মেয়েরা ফিল্ম বানাবে, ডিরেক্টর হবে এইটা সমাজ দেখতে চায় না, দেখতে চায় মেয়েরা ক্যামেরার সামনে থাকবে। ওনারা চান না এটা আমি প্রফেশন হিসেবে নেই।

    তিনি বলেন, চাইলেই আমি অনেক কিছু করতে পারি না। কোথাও যেতে চাইলেও হয় না। যেমন আমার বন্ধুরা শুটিংয়ে যায় বিভিন্ন যায়গায়, আমি যদি বলি যে আমি যাব বা আমি এ কাজ করবো তখন বলে যে এটাতো ছেলেদের কাজ। তুমি করতে পারবা না। ওইদিক থেকে তারাই একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয় যে পারবে না!

    আরেক ছাত্রী জেরিন তাসনিম বলেন, আমার ভাইরা ছোটবেলা থেকে তাদের মনমতো ঘুরছে। যখন খুশি বাসা থেকে বের হয়, বাসায় আসে। কিন্তু আমার ডেডলাইন হচ্ছে সাতটা। আমি যদি সাতটা ত্রিশেও বাসায় ঢুকি তখন দেখা যায় আমার ভাই উল্টা আমার ওপর চড়াও হয়ে যায় যে তুমি কেন এত দেরি করলা?

    মেয়েদের জীবনসঙ্গী এমনকি বন্ধু বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও নানা বিধি-নিষেধের কবলে পড়তে হয় এখনও। মেয়ে হওয়ার কারণে সিদ্ধান্ত নেয়ার ব্যাপারটি পরিবারের হাতেই থাকে, চাইলেও অধিকাংশ মেয়ে স্বাধীনভাবে বন্ধু নির্বাচন করতে পারে না।

    ফারজানা আক্তার বলেন, রাতে দেরি করে বাসায় গেলে অনেক কথা শুনতে হয়, খারাপভাবে দেখা হয়। আর পোশাকের ব্যাপারটাও আমি অতটা স্বাধীন না। ওয়েস্টার্ন টাইপের পোশাক পরলে অনেকে মনে করে অভদ্র মেয়ে। হিজাবি যারা তাদেরকে ভদ্র মনে করা হয়। সবাই এরকম না কিন্তু কিছু মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি এমনই।

    তবে জেরিন বলেন, আগে আঠারো বছর হলেই বিয়ে দিতো। আমাকেও বলেছিল বিয়ের কথা কিন্তু আমি অনেক বুঝিয়েছি অনেক কষ্ট করতে হয়েছে আমি পড়ালেখা করবো, নিজের পায়ে দাঁড়াবো তারপর আমি বিয়ে করবো। এই জায়গাটায় আমাকে স্বাধীনতা দিয়েছে কিন্তু সব জায়গায় না। ফ্যামিলির মন মতো যদি হয় তখন আমার পছন্দের মানুষকে আমি বাছাই করতে পারবো, এছাড়া না। পুরোপুরি স্বাধীনতা নেই।

    গ্রামের আর দশজন সাধারণ নারীর মতোই রান্নাবান্না, বাড়ির কাজে ব্যস্ততার মধ্যে দিন কাটে জেসমিন আক্তারের। নিম্নবিত্ত পরিবারে একজন গৃহিনী হিসেবে গৃহস্থালির সব কাজের দায়িত্ব তার কাঁধে। ইচ্ছা থাকা স্বত্বেও প্রাথমিকের গণ্ডি পেরিয়ে মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষালাভের সুযোগ হয়নি। অল্প বয়সে বিয়ে হয়েছিল তাও সম্পূর্ণ পরিবারের পছন্দে।

    জেসমিন আক্তার বলেন, এ জীবন তার কাছে অনেকটাই পরাধীন। কেননা নিজের পছন্দ বা ইচ্ছামতো কাজ বা সময় কাটানোর সুযোগ তার খুব একটা হয়নি। আজকে যদি আমি একটু পড়ালেহা করতাম, একটা চাকরি করতাম তাইলেতো এই সমস্যা থাকতো না।

    জেসমিন আক্তার চান না তার তার সন্তানের ভবিষ্যৎ নিজের মতো হোক। মেয়ে আনিকা সুলতানা শিমুকে ডিগ্রি পর্যন্ত পড়িয়ে বিয়ে দিয়েছেন। শিমু সন্তান হওয়ার পর মায়ের বাড়িতে এসেছেন। নানী এবং মাকে দেখিয়ে বলেন, আগের দুই প্রজন্মের তুলনায় নারী হিসেবে তিনি যথেষ্ট ভালো আছেন। ডিগ্রি পাশ করে তিনি স্কুল শিক্ষক হতে চান তিনি।

    /অ-ভি

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close