• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

টাঙ্গাইলে রুপা গণধর্ষন ও হত্যা মামলার স্বাক্ষ্য গ্রহণ শুরু

প্রকাশ:  ০৩ জানুয়ারি ২০১৮, ২০:১০
তপু আহম্মেদ, টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে ঢাকার আইডিয়াল ল’ কলেজের ছাত্রী জাকিয়া সুলতানা রুপাকে গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় আদালতে স্বাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। বুধবার সকাল ১১টায় টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া এ স্বাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করেন।

এতে স্বাক্ষ্য প্রদান করবেন মোট ১১জন। এর মধ্যে রয়েছেন মামলা বাদী, ও স্থানীয় ৮জন। এ স্বাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম পর্ব চলে সকাল ১১ থেকে দুপুর ১ পর্যন্ত। এরপর বেলা ৩ টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলে দ্বিতীয় পর্বের স্বাক্ষ্যগ্রহণ। এ স্বাক্ষ্যগ্রহণের প্রথমে স্বাক্ষ্য দেন মামলার বাদী ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আমিনুল ইসলাম। স্বাক্ষ্য গ্রহণের প্রথমদিন একজনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ হয়। এরপর রোববার ৪ জন ও সোমবার ৪ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে বলে আদেশ দেন আদালতের বিচারক।

সম্পর্কিত খবর

    এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিশেষ পিপি এ কে.এম মো. নাছিমুল আখতার জানান, বুধবার সকাল ১১টায় টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া এ স্বাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করেন। এতে স্বাক্ষ্য প্রদান করবেন মোট ৯জন এর মধ্যে মামলা বাদী ও স্থানীয় ৮জন।

    এ স্বাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম পর্ব চলে সকাল ১১ থেকে দুপুর ১ পর্যন্ত। এরপর বেলা ৩ টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলে দ্বিতীয় পর্বের স্বাক্ষ্যগ্রহণ। এ স্বাক্ষ্যগ্রহণের প্রথমে স্বাক্ষ্য দেন মামলার বাদী ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আমিনুল ইসলাম। স্বাক্ষ্য গ্রহণের প্রথমদিন একজনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ হয়। এরপর রোববার ৪ জন ও সোমবার ৪জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে বলে আদেশ দেন আদালতের বিচারক।

    এর মধ্যে আগামী ৭ জানুয়ারী রোববার স্বাক্ষ্য প্রদান করবেন ৪জন । এরা হলেন আবুল হোসেন, প্রবীর এম কুমার, রহিজ উদ্দিন ও আব্দুর রশিদ। এরপর ৮জানুয়ারী সোমবার স্বাক্ষ্য প্রদান করবেন অপর ৪জন। এরা হলেন লাল মিয়া, হাসমত আলী, আব্দুর রৌফ ও জয়নাল আবেদীন। ইতিপূর্বে বুধবার সকাল ১১টায় স্বাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হলেও আসামী পক্ষের আইনজীবী মো. দেলোয়ার হোসেন এ ঘটনার আসামী জাহাঙ্গীর আলম কিশোর দাবি করায় আদালত ওই আসামী প্রকৃত কাগজপত্র দেখানোর জন্য ২ ঘন্টা আদালতের মুলতবি ঘোষণা করেন।

    তবে এরপর দুপুরে পুনরায় আদালত বসলে ওই আসামীর সকল কাজগপত্র আদালতে ভুয়া প্রমানিত হওয়ায় আবেদনটি খারিজ করে দেন আলালত। এ মামলায় রাষ্ট্র পক্ষের সহায়তা ছিলেন বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার টাঙ্গাইল জেলার সমন্বয়কারি এডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ। আসামী পক্ষের আইনজীবি ছিলেন শামীম চৌধুরী দয়াল ও ঢাকা জর্জ কোর্টের এডভোকেট মো. দেলোয়ার হোসেন।

    আদালত সূত্রে জানা যায়, বুধবার রূপা হত্যা মামলার অভিযোগ গঠণের দিন ধার্য ছিল এবং গনধর্ষণ ও হত্যা মামলার ৫ আগামীর উপস্থিতিতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠিত হয়। ৩১ আগস্ট রূপার মরদেহ উত্তোলন করে তার ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তাকে সিরাজগঞ্জের তাঁরাশ উপজেলার নিজ গ্রাম আসানবাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়। ১৫ সেপ্টেম্বর নিহত রূপার দাঁত ও পরিধেয় বস্ত্র ঢাকায় ডিএনএ পরিক্ষার জন্য পাঠানো হয়।

    ১৫ অক্টোবর আদালতে এ মামলার চার্জশীট দাখিল করে পুলিশ। ১৩ নভেম্বর এ মামলার চার্জ গঠণের দিন ধার্য ছিল। এর আগে চাঞ্চল্যকর রূপা হত্যা মামলার অভিযোগ গঠণের দিন ধার্য থাকলে আদালতের বিচারক মো. আব্দুল মান্নান ছুটিতে থাকায় এর দিন পিছিয়ে পরবর্তীতে দ্বিতীয় দফায় ২২ নভেম্বর এ মামলার আসামীদের চার্জ গঠণের দিন ধার্য করেন আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ও অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া। চাঞ্চল্যকর রূপা হত্যা মামলার অভিযোগ গঠণের দিন ধার্য থাকলেও আসামী পক্ষের আইনজীবীদের সময় আবেদনের প্রেক্ষিতে এর দিন পিছিয়ে ২৯ নভেম্বর ধার্য করেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. আব্দুল মান্নান।

    এ স্বত্তেও ২৯ নভেম্বর আসামী পক্ষের আইনজীবীরা আসামীদের অব্যাহতি, মামলার পুনঃ তদন্ত ও জামিনের বিষয় নিয়ে তিনটি আবেদন করেন। তবে এই তিনটি আবেদনের বিষয়ে আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারকের ছোঁয়া পরিবহনের হেলপার শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯) এবং চালক হাবিবুর (৪৫) ও সুপারভাইজার সফর আলীকে (৫৫) বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও দন্ডবিধি ৩০২ ধারায় অভিযোগ গঠিত হয়। মামলার পরবর্তী তারিখ ও স্বাক্ষীর জন্য দিন আগামী বছরের ৩ জানুয়ারি ধার্য করেন আদালত।

    উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রুপাকে চলন্ত বাসে ধর্ষণ করে পরিবহন শ্রমিকরা। বাসেই তাকে হত্যার পর মধুপুর উপজেলায় পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের মধ্যে রুপার মরদেহ ফেলে রেখে যায়। এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ওই রাতেই অজ্ঞাত পরিচয় মহিলা হিসেবে তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে রুপার মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে মধুপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে।

    পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি দেখে তার ভাই হাফিজুর রহমান মধুপুর থানায় গিয়ে ছবির ভিত্তিতে তাকে শনাক্ত করেন। ২৮ আগস্ট এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ময়মনসিংহ-বগুড়া সড়কের ছোঁয়া পরিবহনের হেলপার শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯) এবং চালক হাবিবুর (৪৫) ও সুপারভাইজার সফর আলীকে (৫৫) গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা প্রত্যেকেই আদালতে হাজির করা হয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার আসামীরা প্রত্যেকেই এখন টাঙ্গাইল কারাগারে রয়েছে।

    /এসএইচ

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close