• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

চলতি বছর রোহিঙ্গাদের জন্য প্রাক্কলিত বাজেটে অর্ধেক ঘাটতি রয়েছে

প্রকাশ:  ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৫:২৪
বিজনেস ডেস্ক

চলতি বছর রোহিঙ্গাদের জন্য প্রাক্কলিত বাজেটের অর্ধেক ঘাটতি রয়েছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এলেও মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা এই বিপুল জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও জরুরি চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে অর্থের ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে।

রোহিঙ্গা সংকটের বছর পূর্তিতে রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ মুসা বলেন, নির্ধারিত বাজেটের বিপরীতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তায় ঘাটতি নিয়েই চলছে বিভিন্ন কাজ। ফলে বিভিন্ন কাজে বিলম্ব ঘটছে। সূত্র: শেয়ার বিজ।

তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে একটা বাজেট দাঁড় করানো হলো ৪৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের। শুরুতে সেটা উঠল ৩৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার। ওই অর্থ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডের মধ্যে বিতরণ করা হলো। তার মানে আমরা ১০ কোটি ডলারের ঘাটতি নিয়েই শুরু করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০১৮ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯৫ কোটি ডলার বাজেট ধরা হলেও তার মধ্যে অর্ধেকের মতো এ পর্যন্ত উঠেছে। তার মানে অর্ধেক বাজেট নিয়েই কাজ শুরু করেছি। একটা ঘাটতির অবস্থা থেকেই যাচ্ছে। এখন আরেকটা বাজেটের প্রক্রিয়া চলছে ২০১৯ সালের জন্য।’ সমন্বিত সহায়তা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্র্যাকের পাঁচ কোটি ৬৪ লাখ ডলার প্রয়োজন হলেও এখন পর্যন্ত দুই কোটি ৪২ লাখ ডলারের সংস্থান হয়েছে বলে জানানো হয় অনুষ্ঠানে।

বাজেট ঘাটতির কারণে বিভিন্ন কাজে বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানিয়ে ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘আমাদের কথা বলি। ৫০টা হেলথ সেন্টার করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেছি। পরে সেটা ৩০-এ নামিয়ে এনেছি। ১১টা ক্লিনিকের জন্য যে খরচ হয়, সেজন্য সমস্যা মোকাবিলা করছি। আমরা নিজস্ব তহবিল থেকেও টাকা দেওয়া শুরু করেছি। আমরা তো কাজ বন্ধ করে দিতে পারছি না।’

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে গতবছর আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। আর কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে আরও প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও গত ১০ মাসে প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি।

রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে ‘জটিল’ হিসেবে বর্ণনা করে মোহাম্মদ মুসা বলেন, ‘এটা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার বিষয়। মিয়ানমারের রাখাইনে তাদের ফিরে যাওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে হবে। যে পরিস্থিতিটা নিরাপদ, সম্মানজনক, স্বেচ্ছাকৃত এবং টেকসই হতে হবে। সেই পরিস্থিতি মিয়ানমারকেই তৈরি করতে হবে।’

ব্র্যাকের গবেষণার তথ্য তুলে ধরে মোহাম্মদ মুসা বলেন, ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে রোহিঙ্গারা নাগরিকত্ব, ক্ষতিপূরণ, নিরাপত্তা এবং বিচারের চারটি স্পষ্ট শর্ত দিয়েছে। সেসব পূরণ হলেই তারা ফিরতে চায়।

ব্র্যাক ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রেও সরকারের সঙ্গে কাজ করছে বলে জানিয়ে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক মুসা বলেন, ‘আমরা এখনও সন্দিহান, ভাসানচরের কোথায় কী হবে? তাদের সেখানে নেওয়ার আগে ব্যবস্থাটা করা জরুরি।’

তিনি জানান, জুলাইয়ের আগে প্রক্রিয়া শুরুর কথা থাকলেও ঝড়বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে সেটা হয়নি। এখন সরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং ব্র্যাকের প্রতিনিধিদল সেখানে গিয়ে প্রস্তুতির কাজ করবে।

ব্র্যাকের অ্যাডভোকেসি, টেকনোলজি অ্যান্ড পার্টনারশিপ বিভাগের পরিচালক কেএএম মোর্শেদ এ বিষয়ে বলেন, ‘ভাসানচরে যদি আমরা এক লাখ রোহিঙ্গাকেও নিয়ে যাই, বাকি ৯-১০ লাখ তো কক্সবাজারে থাকছে। ভাসানচরে তাদের পুনর্বাসনের প্রক্রিয়ার সঙ্গে এখানকার বিষয়ও দেখতে হবে।’ রোহিঙ্গা সংকটের এক বছর পূর্তিতে এই সংবাদ সম্মেলনে ‘স্পেস অন আর্থ’ শিরোনামে একটি আন্তর্জাতিক প্রচার কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দেয় ব্র্র্যাক। অন্যদের মধ্যে ব্র্যাকের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক আকরামুল ইসলাম ও কমিউনিকেশন অ্যান্ড আউটরিচ বিভাগের পরিচালক মৌটুসী কবির সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন।

ওএফ

বাজেট,রোহিঙ্গা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close