মুখ খুললেন তামিল নায়িকা ইয়াশিকা, যেভাবে যৌন নিপীড়নের শিকার হন
ভারতীয় তামিল চলচ্চিত্রের নায়িকা ইয়াশিকা আনন্দ। ধুরুবঙ্গল পথিনারু’ ও ‘নোটা’র মতো দর্শকনন্দিত সিনেমায় অভিনয় করে দারুণ জনপ্রিয়তা পান। যৌন নিপীড়নবিরোধী ‘হ্যাশট্যাগ মি টু আন্দোলন’- এ এবার ১৯ বছর বয়সী এই নায়িকা মুখ খুলেছে।
মডেলিং থেকে রূপালী পর্দায় পা রেখে সাফল্য পাওয়া এ অভিনেত্রী জানান, প্রথমবার মডেলিংয়ের জন্য স্টিল ফটোসেশনের ফটোগ্রাফার তাকে নামি-দামি ব্রান্ডের বিজ্ঞাপনে কাজের সুযোগ জুটিয়ে দেবেন বলে তাকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেন। চেন্নাইয়ের নামকরা ওই মাঝ বযসী ফটোগ্রাফার বড় কাজ পাওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে ইয়াসিকাকে তার এপার্টমেন্টে যাওয়ার জন্য বলেন। ইয়াশিকা সঙ্গে তার মাকে নিয়ে যেতে রেগে গিয়ে বাবার বয়সী ফটোগ্রাফার বলেন, তোমার মায়ের সঙ্গে লেনদেন হবে না। যা লেনদেন হবে তোমার আর আমার মধ্যেই। তোমাকে আমি দেব, বিনিময়ে তোমার কাছ থেকে নেব।
সম্পর্কিত খবর
এ কথা শোনার পর ইয়াশিয়া যা বোঝার বুঝে নেন। দ্বিতীয়বার তিনি ওই ফটোগ্রাফারের কাছে যাননি। এমনকি ফটোসেশনে ছবিগুলোও আনেননি।
দক্ষিণের এক জনপ্রিয় চলচ্চিত্র পরিচালকের বিরুদ্ধেও ‘যৌনসুবিধা’ নেওয়ার অভিযোগ জানিয়ে ইয়াশিকা বলেন, একাধিকবার ওই পরিচালক আমাকে তার সঙ্গে রাত্রিযাপনের প্রস্তাব জানিয়ে প্রত্যাখাত হন। তবে তিনি এতে দমে যাননি। আমাকে একান্তে পেতে সরাসরি আমার মায়ের কাছেও প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
ইয়াশিকা আনন্দ আরও জানন, একবার তিনি এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়ার উদ্যোগ নেন, যিনি তাঁর সঙ্গে ‘সীমা অতিক্রম’ করেছিলেন। পুলিশ স্টেশনেই ওই কর্মকর্তা তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছিলেন।
পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এ তরুণ তামিল অভিনেত্রী জানানন, ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে একটি সিনেমার শুটিং চলাকালে পরিচালক ও টিমের অন্যরা তাঁর সঙ্গে নোংরা আচরণ করেছিলেন। এমনটা অনেক অভিনেত্রীর সঙ্গেই হয় বলে মত দেন ইয়াশিকা।
ইয়াশিকা আনন্দ বলেন, যারা অশালীন আচরণ করেন। নোংরা প্রস্তাব দেন এবং নারীকে যৌন নিপীড়ন করেন তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে হবে। দোষ তাদেরই যারা নারীকে পন্য হিসেবে দেখেন, তাদের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠতে হবে। যৌন হেনস্তাকারীদের বিরুদ্ধে নারী মুখ খুললে ধীরে ধীরে এ অপরাধ কমে যাবে।
তামিল পরিচালক বিজয় দেবারাকোনড়ার ‘নোটা’ ছবিতে সর্বশেষ ইয়াশিকাকে অভিনয় করতে দেখা গেছে। তাঁর হাতে এখন বেশ কয়েকটি ছবি রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ভারতের দক্ষিণী চলচ্চিত্র অঙ্গনের জনপ্রিয় মুখ বৈরামুথু, রাধা রবি, সুসি গনেশ ও জন বিজয়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে।
গত মাসে বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা নানা পাটেকারের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ তোলেন সাবেক বলিউড অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্ত। তাঁর অভিযোগ, এক দশক আগে ‘হর্ন ওকে প্লিজ’ ছবির শুটিং চলাকালে নানা তাঁকে হেনস্তা করেছিলেন। এর পরই শুরু হয় মিটু আন্দোলন। বলিউডের অলোক নাথ, সুভাষ ঘাই, বিকাশ বেহল ও অন্যান্য বিখ্যাত চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বের নাম উঠে আসে হেনস্তাকারীর তালিকায়।[সূত্র : ইন্ডিয়া টুডে]