অপু খন্দকার: সুর-সাগরের তরুণ সাঁতারু
সুরেলা এক কণ্ঠস্বরের নাম অপু খন্দকার। পেশায় সংবাদকর্মী। নেশায় সুর সাধক। সম্প্রতি অন্তর্জালে মুক্তি পেয়েছে তাঁর প্রথম গান ‘প্রিয়া তু জানে না’। তরুণ এই শিল্পীর সঙ্গে কথা বলেছে পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজ। আলাপচারিতায় উঠে এসেছে সঙ্গীতের সাথে এই তরুণের ভালোবাসার গল্প।
সম্পর্কিত খবর
পূর্বপশ্চিম: কেমন আছেন?
অপু খন্দকার: আলহামদুলিল্লাহ! ভালো আছি।
পূর্বপশ্চিম: আপনার প্রথম গান ‘প্রিয়া তু জানে না’ প্রকাশিত হয়েছে অন্তর্জালে। গানটি তৈরীর ইতিবৃত্ত জানতে চাই।
অপু খন্দকার: গানটি ‘প্রিয় মিউজিক স্টেশন’ এর ইউটিউব চ্যানেল থেকে রিলিজ দেয়া হয়েছে। বেশ কয়েক বছর গানের ‘স্থায়ী’ অংশটুকু লিখে সুর করে ফেলি। কিন্তু ‘অন্তরা’ আর সঞ্চারী অংশ ধরা দেয় না। খুব মন খারাপ হয়। দিনের পর দিন কেটে যায়। একটা অসম্পূর্ণ গানের যন্ত্রণা নিয়ে ঘুরে বেড়াই।
একদিন ‘প্রিয় মিউজিক স্টেশনের’ আলামগীর গানের ‘স্থায়ী’টুকু শুনেই মুগ্ধ হলেন। বললেন এটা তিনি প্রডিউস করতে চান। আমি রীতিমত সারপ্রাইজড। এক অভূতপূর্ব আনন্দ আমাকে আচ্ছন্ন ফেলে। সেই আনন্দের ডানায় ভর করে আমার অজান্তেই গানের বাকি অংশ আমাকে ধরা দেয় একদিন!
পূর্বপশ্চিম: আপনি দীর্ঘদিন সংবাদকর্মী হিসেবে কাজ করছেন। হঠাৎ সঙ্গীতে কেন এলেন?
অপু খন্দকার: আমার যখন ৭ বছর বয়স তখন থেকেই আমি গান গাই। আমার গানের প্রথম গুরু আমার স্কুলের গনিত শিক্ষক ওস্তাদ শ্রী প্রদীপ সিংহ স্যার। আমি যখন ক্লাস সিক্সের ছাত্র তখন স্কুলের সংষ্কৃতিক অনুষ্ঠানের রিহার্সালে স্যার আমার গান শুনে মুগ্ধ হন। সেই থেকে শুরু। এরপর উপমহাদেশের অন্যতম বিখ্যাত শুদ্ধ সংগীতের পন্ডিত ওস্তাদ নিয়াজ মোহাম্মাদ চৌধুরীর কাছে পাঠ নেয়ার সৌভাগ্য হয়।
পূর্বপশ্চিম: গানের সাথে শুরু হওয়া এই সংসার নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
অপু খন্দকার: ছোটবেলা থেকেই গান গাওয়া ও লেখার চর্চা। গান আমার নেশা। কিন্তু সাংবাদিকতা আমার পেশা। গানের প্রতি তীব্র ভালোবাসা আছে। আছে পরিকল্পনাও। কিন্তু সেসব এখনই বলতে চাই না।
পূর্বপশ্চিম: একজন সংবাদকর্মী সমাজের অন্যায়-অসঙ্গতি তুলে ধরে সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারেন। তেমনই একজন কৃষক খাদ্য উৎপাদন করে ভূমিকা রাখেন। সেভাবে একজন কণ্ঠশিল্পীর পক্ষে কোন ইতিবাচক ভূমিকা রাখা সম্ভব কিনা?
অপু খন্দকার: অবশ্যই সম্ভব। আসলে ভাত-মাছ-চাল-ধানের মতো গানও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস। কারণ, খাবার আমাদের শরীরকে সবল রাখে। আর আমাদের আত্তাকে সতেজ রাখে সুর। শিল্পী সুরের মাধ্যমে অন্তরের কালি-ঝুলি দূর করেন। তাই একজন চাষীর মতো একজন শিল্পীও সমাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বলে আমি বিশ্বাস করি।
পূর্বপশ্চিম: কোন বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে আপনি একটি গান গাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন?
অপু খন্দকার: গানের ধরন, কথা ও সুরকে গান বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আমি বিবেচনায় রাখি।
পূর্বপশ্চিম: আপনার গানটা সুন্দর। যত্ন নিয়ে ভিডিও করতেও সচেষ্ট ছিলেন। কিন্তু গানের শিরোনাম এমন কেন?
অপু খন্দকার: গানের শিরোনাম অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। এই গানটির নামকরণের সময় একটা চরিত্র আমার কল্পনায় ভেসে ওঠে। আমার মনে হয়েছে গানটা আসলে কল্পনার ওই মানুষটার হৃদয়ের কথা। তো, কল্পনার ঐ মানুষটা কেমন? সে আসলে কেমন ভাষায় কথা বলে? এইসব প্রশ্ন থেকেই গানের এমন শিরোনাম। আমার কল্পনার ওই মানুষটা আসলে এভাবে কথা বলে বলে আমার মনে হয়েছিল।
পূর্বপশ্চিম: আপনার পছন্দের তিনটি গান এবং তিনজন শিল্পী সম্পর্কে জানতে চাই।
অপু খন্দকার: প্রশ্নটা কঠিন। পছন্দের গান তো অনেক আর এরা চেঞ্জ হতে থাকে। এই মুহুর্তে ‘আমায় নহে গো, ভালোবাসো মোর গান’-এর কথা মনে পড়ছে।
পূর্বপশ্চিম: আপনাকে ধন্যবাদ। পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজ পরিবারের পক্ষ থেকে আপনার সঙ্গীত জীবনের জন্য শুভ কামনা।
অপু খন্দকার: আপনাকে এবং পূর্ব-পশ্চিমবিডি.নিউজকেও অনেক ধন্যবাদ।
পিবিডি/ হাসনাত/সাগর