পপগুরু আজম খান মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত
মরণোত্তর একুশে পদক পাচ্ছেন পপগুরু আজম খান। বাংলা পপ সঙ্গীতে অনবদ্য অবদানের জন্য প্রয়াত এ সঙ্গীত তারকা ও মুক্তিযোদ্ধাকে এই সম্মানে ভূষিত করা হচ্ছে।
আজম খান ১৯৫০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার আজিমপুরে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মোহাম্মদ আফতাব উদ্দিন খান, মা জোবেদা খাতুন।
সম্পর্কিত খবর
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময়ে আজম খান পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। তখন তিনি ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠীর সক্রিয় সদস্য ছিলেন এবং পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর শোষণের বিরুদ্ধে গণসঙ্গীত প্রচার করেন। ১৯৭১ সালে আজম খানের বাবা আফতাব উদ্দিন খান সচিবালয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে ছিলেন। বাবার অণুপ্রেরণায় যুদ্ধে যাবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
১৯৭১ সালে যুদ্ধ শুরু হলে, তিনি পায়ে হেঁটে আগরতলা চলে যান। আগরতলার পথে সঙ্গী হন তার দুই বন্ধু। এসময় তার লক্ষ্য ছিল সেক্টর ২ এ খালেদ মোশাররফের অধীনে যুদ্ধে যোগদান করা। আজম খান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন ২১ বছর বয়সে। তার গাওয়া গান প্রশিক্ষণ শিবিরে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণ যোগাতো।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকায় সংঘটিত কয়েকটি গেরিলা অভিযানে তিনি অংশ নেন। প্রথম কনসার্ট প্রদর্শিত হয় বাংলাদেশ টেলিভিশনে ১৯৭২ সালে।
১৯৭১ সালের পর তার ব্যান্ড উচ্চারণ এবং আখন্দ (লাকী আখন্দ ও হ্যাপী আখন্দ) ভ্রাতৃদ্বয় দেশব্যাপী সঙ্গীতের জগতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। বন্ধু নিলু আর মনসুরকে গিটারে, সাদেক ড্রামে আর নিজেকে প্রধান ভোকাল করে করলেন অনুষ্ঠান। ১৯৭২ সালে বিটিভিতে সেই অনুষ্ঠানের এতো সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে ও চার কালেমা সাক্ষী দেবে গান দু'টি সরাসরি প্রচার হলো। ব্যাপক প্রশংসা আর তুমুল জনপ্রিয়তা এনে দিলো এ দু'টো গান। দেশজুড়ে পরিচিতি পেয়ে গেলো তাদের দল।
১৯৭৪-১৯৭৫ সালের দিকে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে বাংলাদেশ (রেললাইনের ঐ বস্তিতে) শিরোনামের গান গেয়ে হৈ-চৈ ফেলে দেন।
২০১১ সালের ৫ জুন তিনি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগীদের কাঁদিয়ে পাড়ি জমান অন্য সুরের ভুবনে।
পিবিডি/ ইকা