বাংলাদেশের ইমরান টেক্কা দিতে চান অ্যামাজনকে
বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় অনলাইন শপিং হচ্ছে অ্যামাজন।আর এ অনলাইনে শপিং করার আনন্দ ফিরিয়ে আনতে চান বাংলাদেশের ইমরান।বর্তমানে অ্যামাজনের নেতৃত্বাধীন ই-কমার্স জগতে মানুষের মাঝে নতুন নতুন পণ্য খুঁজে বের করার আনন্দ আর কাজ করে না বলেই তার বিশ্বাস। সেজন্যই খুলেছেন ভেরাইশপ নামে একটি নতুন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান।
গত সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) এক ব্লগপোস্টে নিজেদের আগমনীবার্তার জানান দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এ খবর দিয়েছে মার্কিন ব্যবসা সংক্রান্ত সংবাদের ওয়েবসাইট সিএনবিসি।
সম্পর্কিত খবর
ইমরান খান নিজে কোনো ছোটখাটো কেউ নন। তিনি জনপ্রিয় সোস্যাল ম্যাসেজিং অ্যাপ স্ন্যাপচ্যাটের সাবেক প্রধান স্ট্র্যাটেজি অফিসার। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পরই ছিল তার অবস্থান।
তার নেতৃত্বেই স্ন্যাপচ্যাটের মুনাফা মাত্র ৪ বছরে বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এছাড়া পুঁজিবাজার থেকে স্ন্যাপচ্যাটের কয়েক বিলিয়ন ডলার তুলে আনার পেছনেও কৃতিত্ব দেওয়া হয় সাবেক ব্যাংকার ইমরানকে। তার ব্যাংকিং ক্যারিয়ারও কম উজ্জ্বল নয়। সুইজ্যারল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাংক ক্রেডিট সুইসের ইন্টারনেট ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান থাকার সময় চীনের বিখ্যাত ই-কমার্স সাইট আলিবাবা’র শেয়ার বিক্রির চুক্তি বগলদাবা করতে সক্ষম হন। সেবার সর্বকালের রেকর্ড ২১ বিলিয়ন ডলার শেয়ারবাজার থেকে তুলে আনে আলিবাবা। তখন থেকেই ব্যাপক আলোচিত নাম ইমরান খান।
ফলে অ্যামাজনের বিকল্প হিসেবে নতুন ই-কমার্স সাইট নামানোর যে পদক্ষেপ তিনি নিয়েছেন, তাকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। অ্যামাজন বা অন্যান্য ই-কমার্স সাইটের সঙ্গে তার ভেরাইশপের পার্থক্য হলো, এটি কেবল চিহ্নিত সুনামধারী প্রতিষ্ঠানের পণ্যই তাদের ওয়েবসাইটে বিক্রি করবে। অ্যামাজন সহ বড় বড় অনেক সাইটে তৃতীয়-পক্ষের বিভিন্ন পণ্য বিক্রি হয়, যেখানে গ্রাহকদের ঠকার ঝুঁকি থেকে যায়। ইতিমধ্যেই ভেরাইশপের সঙ্গে কাজ করতে রাজি হয়েছে প্রসাধনী পণ্য বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান উরসা মেজর ও ইন্ডি লি, বিছানাপত্র বিক্রির প্রতিষ্ঠান প্রাইমারি গুডস, পোশাক প্রতিষ্ঠান জে.ও.এ, ফাইন্ডার্স কিপার্স ও এন: ফিলানথ্রপি। ভেরাইশপের নেতৃত্বে ইমরান ছাড়াও আছেন তার স্ত্রী কেট খান, যিনি নিজেও অ্যামাজনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ৮ বছর কাজ করেছেন। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১ কোটি ৭৫ লাখ ডলার সংগ্রহ হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ঢাকার গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলে পড়াশুনা করা ইমরান যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে। ২০০০ সালে তিনি ডেনভার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিন্যান্স ও অর্থনীতি নিয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। বাংলাদেশে থাকাকালে বিতর্ক সংগঠন বাংলাদেশ ডিবেট ফেডারেশনেরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে মূলত রিসার্চ অ্যানালিস্ট হিসেবে যাত্রা শুরু করেন তিনি। পরে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শীর্ষ বিনিয়োগ ব্যাংক জেপি মরগ্যানে গবেষক হিসেবে যোগ দেন। সেখানে তিনি ব্যাংকটির গ্লোবাল ইন্টারনেট ও ইউএস এনটারটেইনমেন্ট ইকুইটি গবেষণা দলের প্রধান হিসেবে পদোন্নতি পান। ব্যাংকটিতে কাজ করার সময় ইন্সটিটিউশনাল ইনভেস্টর্স-এর বার্ষিক গবেষক সূচকে দ্বিতীয় সেরা ইন্টারনেট গবেষক হিসেবে স্বীকৃতি পান। জেপি মরগ্যানে ৬ বছর শেষে তিনি ক্রেডিট সুইসে যোগ দেন।এরপর আর তাকে ফিরে তাকাতে হয়নি।
পিবিডি/জিএম