ভাগ্যিস সাংবাদিক সম্মেলন শেষ হতে দেরি হল...
কথা ছিল বেলা দেড়টার দিকে আল নুর মসজিদে যাবেন তারা। কিন্তু সাংবাদিক সম্মেলনটা শেষ করতে একটু দেরি হয়ে গিয়েছিল। তাই বেলা ১টা ৪০ মিনিটের দিকে সাংবাদিক সম্মেলন শেষেই মসজিদে যাওয়ার উদ্দেশে বাসে উঠেছিল পুরো বাংলাদেশের ক্রিকেট দল। বাস তখন মসজিদের সামনে পৌঁছেও গিয়েছিল। সবাই বাস থেকে নেমে মসজিদের দিকে যাচ্ছিলেন। সেখানেই সাপ্তাহিক নমাজে অংশ নেওয়ার কথা ছিল তাদের। ঠিক তখনই নজরে আসে ভয়ঙ্কর দৃশ্য। মধ্য বয়সের এক মহিলা রক্তাক্ত অবস্থায় মসজিদের ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে হুমড়ি খেয়ে পড়ে গেলেন। ক্রিকেটাররা তখনও বুঝতে পারেননি আসলে কী ঘটছে ভিতরে।
ঠিক তখনই এল সতর্কতা। একজন চিৎকার করে বলে ওঠেন মসজিদের ভিতর গুলি চলছে। তিনি জানান, তার গাড়িতেও লেগেছে গুলি। বেগতিক বুঝে বাসে উঠে পড়েন তারা। ততক্ষণে পুলিশ গোটা রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে বেশ কিছুক্ষণ বাসেই বসে থাকতে হয় তামিম, মুশফিকুরদের। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ থাকার পর নিরাপদে মাঠে ফিরে আসেন তারা।
সম্পর্কিত খবর
শুক্রবার (১৫ মার্চ) স্থানীয় সময় বেলা দেড়টার দিকে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে বন্দুকবাজের হামলায় ভাগ্যক্রমে বাঁচলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। এই মুহূর্তে নিউজিল্যান্ড সফরে রয়েছেন তারা। শনিবার (১৬ মার্চ) থেকে টেস্ট শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হামলার ঘটনার পর সফর বাতিলের কথা ঘোষণা করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। শিগগিরিই নিরাপদে জাতীয় ক্রিকেটারদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
জানা গেছে, এদিন সকালে লিটন দাস ও নইম হাসান ছাড়া দলের সবাই ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলে ওভাল মাঠে অনুশীলনে করেন। সেখান থেকেই আল নুর মসজিদে যাচ্ছিলেন সাপ্তাহিক নমাজে যোগ দিতে। এ দিনের হামলার পরই টুইট করেন বাংলাদেশের ক্রিকেটার তামিম ইকবাল। এই ঘটনাকে ‘ভয়ের অভিজ্ঞতা’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
তামিম লেখেন, পুরো দলই বন্দুকবাজের হামলা থেকে রক্ষা পেয়েছে। সবাই আমাদের জন্য প্রার্থনা করবেন।
সামনে থেকে এমন ঘটনা দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি দলের অন্যতম সদস্য মুশফিকুর রহিম। মাঠে ফিরেও আতঙ্ক কাটছিল না তার।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মুখপাত্র জালাল ইউনুস জানিয়েছেন, দলের বেশির ভাগ সদস্য মসজিদে যাওয়ার জন্য বাসে ছিলেন। মসজিদে ঢোকার মুহূর্তে হামলার ঘটনাটি ঘটে। ঈশ্বরের কৃপায় সবাই ভালো আছেন।
এ দিনের ঘটনা ২০০৯ সালে পাকিস্তানের লাহৌরে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের উপর হামলার কথাকে আরও একবার মনে করিয়ে দিল। সেদিন ক্রিকেটারদের টিম বাসে জঙ্গি হামলার ঘটনায় আহত হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারও। তারপর বহুদিন পাকিস্তানে অনেক দেশ সফর বন্ধ হয়ে দিয়েছিল।
/অ-ভি