• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

কার্লোসের প্রেরণায় ইডেনের রাত

প্রকাশ:  ২৩ মার্চ ২০১৯, ১৩:৩৩
স্পোর্টস ডেস্ক

২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে শেষ ওভারে তার চারটি ছয় ক্রিকেট ইতিহাসে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে। ইংল্যান্ড বোলার বেন স্টোকসের বিরুদ্ধে কার্লোস ব্রাথওয়েটের সেই বিধ্বংসী ব্যাটিং ওয়েস্ট ইন্ডিজকে করেছিল বিশ্বসেরা। ইডেনের সেই ঐতিহাসিক রাতের কথা ভুলতে পারেননি ক্যারিবিয়ান তারকা। এবার আইপিএলে ইডেনই ঘরের মাঠ হতে চলেছে ব্রাথওয়েটের। যা দ্বিগুণ করে দিয়েছে আত্মবিশ্বাস।

এবার নিলামে ৫ কোটি টাকা দিয়ে ব্রাথওয়েটকে দলে নিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। আন্দ্রে রাসেল, ক্রিস লিন, সুনীল নারাইনের সঙ্গে চতুর্থ ‘পিঞ্চহিটার’ (যারা বড় শট নিতে পারে) হিসেবে ব্রাথওয়েটকে ব্যবহার করার পরিকল্পনায় রয়েছে কেকেআর শিবির। ব্রাথওয়েটও মরিয়া তার অন্যতম প্রিয় মাঠে সেরাটা দিতে।

সম্পর্কিত খবর

    শুক্রবার কেকেআর টিম হোটেলে ব্রাথওয়েট বলেন, গত বার সানরাইজার্সের হয়ে মাত্র চার ম্যাচে খেলার সুযোগ পেয়েছি। কিছু করে দেখাতে পারিনি। এ বার প্রথম ম্যাচ থেকেই সুযোগ কাজে লাগাতে চাই। আমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে এই ইডেন। এখান থেকেই আন্তর্জাতিক পরিচিতি পেয়েছিলাম। এখনও সেই রাতের কথা মনে করলে গায়ে কাঁটা দেয়। এবার ইডেনকে কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার সময় হয়ে গিয়েছে।

    কলকাতার হয়ে খেলার সময়েও এমন পরিস্থিতি আসতে পারে, যেখানে অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলে ম্যাচ জেতাতে হবে। কার্লোস বলছিলেন, জেতার ইচ্ছের থেকেও বেশি প্রয়োজন মন থেকে হারের ভয়কে দূর করে ফেলা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালের প্রসঙ্গ টেনে বললেন, ওই ম্যাচে শেষ ওভারে ব্যাট করার সময় একটি কথাই মাথায় ছিল, যদি জিতি তো ভাল, হারলে কী আর করা যাবে। হারতে ভয় পাইনি। তাই জয়ের আনন্দটা দ্বিগুণ হয়েছিল।

    ‘পিঞ্চহিটারের’ তকমা কতটা উপভোগ করেন তিনি? কার্লোসের উত্তর, আমাদের দেশে পিঞ্চহিটারের সংখ্যা কখনও কমবে না। আগে ক্রিস (গেল), রাসেল, পোলার্ডকে ধরা হত। এখন ওদের সঙ্গে আমার নামও জুড়ে গিয়েছে। এটা বড় প্রাপ্তি। দর্শককে যদি আমি আনন্দ দিতেই না পারি, তা হলে ক্রিকেট খেলার মজা কোথায়।

    বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজে দেশের হয়ে নিয়মিত খেলেছেন ব্রাথওয়েট। যার অর্থ বিশ্বকাপের নকশায় রয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ তারকা। ক্রিকেটের বিশ্বযুদ্ধের আগে আইপিএলের মতো বড় প্রতিযোগিতা বারবার একটি বিতর্ক উস্কে দিয়ে যাচ্ছে। আদৌ এতটা পরিশ্রম করা উচিত হবে কি না ক্রিকেটারদের। কার্লোস কিন্তু মনে করেন, কেকেআর শিবিরে বিশ্বমানের ফিজিও (অ্যান্ড্রু লিপাস) রয়েছেন যার সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা হয় তার। আমি সারা বছর টি-টোয়েন্টি লিগ খেলি। কতটা পরিশ্রম করলে কী হতে পারে, সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা রয়েছে। কেকেআর টিম ম্যানেজমেন্ট জানিয়েছে, ছোটখাটো ব্যথা লাগলেও ঝুঁকি না নিতে, প্রতিক্রিয়া তার।

    পিঞ্চহিটার হিসেবে পরিচিতি তার বেশি হলেও নিজেকে পেসার অলরাউন্ডার বলতেই বেশি পছন্দ করেন। এ বার আইপিএলে লেগকাটার, অফকাটারের পাশাপাশি দেখা যাবে তার ‘ফ্লোটার ডেলিভারি’। যা নাকল বলের চেয়ে একটু আলাদা। নাকল বল করা হয় নখের সাহায্য। ফ্লোটারে ব্যবহার করতে হয় হাতের তালু। বল ছাড়ার পরে ব্যাটসম্যানের কাছে পৌঁছনোর আগে হাওয়ায় গোঁত্তা খেয়ে মাটিতে পড়ে। ফলে লেংথ বুঝতে অসুবিধা হয় ব্যাটসম্যানের। বেড়ে যায় উইকেট পাওয়ার সম্ভাবনা। কার্লোসের কথায়, সিপিএল খেলার সময়েই এই ডেলিভারি আবিষ্কার করি। তার পর নেটে ঝালিয়ে নিই। এখন সাবলীল ভাবে এই বল করতে পারি।

    ছোটবেলায় পপস্টার রিহানার ক্লাসমেট ছিলেন তিনি। এখন অবশ্য তাঁর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। ব্রাথওয়েট বললেন, আমি গর্বিত, রিহানার মতো তারকার সঙ্গে ক্লাস করতে পেরে। ছোটবেলায় পারফর্ম করার জন্য বেশি ক্লাস করতে পারত না। আমরা বলতাম ক্লাস কেন করিস না। কিন্তু তার পিছনে যে এত বড় স্বপ্ন লুকিয়ে রয়েছে তা বুঝতে পারিনি।

    ব্রাথওয়েট আসায় ব্যাটিং গভীরতা যে বেড়েছে তা মানছেন নাইটদের সহকারী কোচ সাইমন ক্যাটিচ। তিনি বলেন, গত বার আমাদের ব্যাটিং লাইন-আপের প্রথম ছ’ব্যাটসম্যান সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারীর ২৫ জনের তালিকায় ছিল। কার্লোস আসায় তা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। আইপিএলে ওর স্ট্রাইক রেট ১৬৮.৩২।

    শোনা যাচ্ছে, রবিবার প্রথম ম্যাচে থাকতে পারেন শাহরুখ খান। তা যদি হয় এবং তাঁর সামনে ফের ঝলসে ওঠে ক্যারিবিয়ান তারকার ব্যাট, তা হলে ইডেনের গ্যালারি যে ক্যালিপসোর সুরতরঙ্গে নেচে উঠবে, তা বোধহয় বলার অপেক্ষা রাখে না।

    /এস কে

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close