• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

চট্টগ্রামে ফরম পূরণ জটিলতায় অনিশ্চয়তায় ৬২৬ মাস্টার্স পরীক্ষার্থী

প্রকাশ:  ১৭ এপ্রিল ২০১৯, ১১:০৬
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের ৬২৬ মাস্টার্স (প্রাইভেট) পরীক্ষার্থী ফরম পূরণ করতে না পারায় শিক্ষা কার্যক্রম অনিশ্চয়তায় পড়েছে। স্নাতকোত্তর পর্যায়ের এ শিক্ষার্থীরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নগরীর সরকারি তিন কলেজ থেকে প্রথম পর্বের (প্রিলি) ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা।

রেজিস্ট্রেশন কার্ড না পাওয়ায় এখন পর্যন্ত ফরম পূরণ করতে পারেননি তারা। এরই মধ্যে ফরম পূরণের জন্য কর্তৃপক্ষের বেঁধে দেয়া সময় সোমবার শেষ হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে তাদের কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি সংশ্লিষ্টরা।

শিক্ষার্থীরা জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভার সমস্যায় ভর্তি প্রক্রিয়ায় ত্রুটির কারণে তাদের রেজিস্ট্রেশন হয়নি। ভর্তি হওয়ার ১০ মাস পর কর্তৃপক্ষের এমন জবাবে চরম হতাশায় ভুগছেন ভুক্তভোগীরা। কিছু শিক্ষার্থী আছেন, যাদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বেশি দিন নেই।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আঞ্চলিক কেন্দ্র চট্টগ্রামের পরিচালক প্রফেসর আবুল কাশেম বলেন, বিষয়টি তিনি অবগত নন। আঞ্চলিক কেন্দ্র শুধু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা গ্রহণে খাতা ও ওএমআর শিট সংগ্রহ এবং সরবরাহের দায়িত্ব পালন করে থাকে।

সূত্র জানায়, প্রায় ১০ মাস আগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। ব্যাংকের মাধ্যমে ফি জমা দিয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করেন তারা। শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোনে ভর্তি নিশ্চিতকরণ ক্ষুদে বার্তাও পাঠানো হয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি রেজিস্ট্রেশন কার্ড সংগ্রহ করতে গেলে ভর্তি প্রক্রিয়ায় ত্রুটি হয়েছে বলে শিক্ষার্থীরা জানতে পারেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের বলা হয়, ওই সময় (ভর্তি প্রক্রিয়া চলাকালীন) শিক্ষার্থীদের বিষয় নির্ধারণ ভুল হয়।

তবে সার্ভার সমস্যায় গ্রহণ করা হলেও পরবর্তীতে এসব শিক্ষার্থীর ভর্তিতে জটিলতা দেখা দেয়। এমন ৬২৬ জন শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন হয়নি। এদের মধ্যে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের ৩৫০ জন, হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের ১৫০ জন ও চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজের ১২৬ জন পরীক্ষার্থী রয়েছেন। এরপর থেকে শিক্ষার্থীরা শিক্ষামন্ত্রী, উপমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক দফতরে যোগাযোগ করেছেন।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সম্মিলিত ছাত্র পরিষদ নামক একটি ব্যানারে ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করেছেন।

এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারসহ চট্টগ্রাম কলেজ অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। এরপরও কোনো সুরাহা হয়নি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় এমনটা হয়েছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সম্মিলিত ছাত্র পরিষদ আহ্বায়ক মহিউদ্দিন হাজারী বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা অনুসরণ করে ১০০ টাকা জমা দেয়ার মাধ্যমে ভর্তি রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণ করি। ভর্তি আবেদনের ভিত্তিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর বিষয় নির্ধারণ করে দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে ফি বাবদ ১ হাজার ১৫০ টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দেই।

টাকা জমা দেয়ার রশিদ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কলেজে দিয়ে ভর্তি হই। বর্তমানে প্রথম পর্বের ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নিতে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিন্তু ১০ মাস পর আমরা জানতে পারি, আমাদের ভর্তিতে ত্রুটি ছিল। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা চরম হতাশায় ভুগছেন।

চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল হাসান বলেন, মেধা অনুসারে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট বিষয়ে মাস্টার্স করতে পারেন। এক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মনীতি রয়েছে। কিন্তু রেজিস্ট্রেশন না আসা শিক্ষার্থীরা সার্ভার ত্রুটির কারণে এ সমস্যায় পড়েছেন। ভর্তির সময় মেধা অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা যে বিষয় পাওয়ার কথা নয়, তারা এমন বিষয় পেয়ে যান। পরবর্তী সময়ে ভুল ধরা পড়ায় তাদের রেজিস্ট্রেশন কার্ড আসেনি। বিষয়টি বিবেচনার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করা হয়েছে।

পিবিডি/এআইএস

চট্টগ্রাম

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close