নুসরাত হত্যাকাণ্ড: ওই মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি বাতিল
নুসরাত জাহান রাফির নির্মম হত্যাকাণ্ডে মাদ্রাসা কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠায় সোনাগাজী ইসলামীয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা ১৩ সদস্য বিশিষ্ট পরিচালনা কমিটি বাতিল (বিলুপ্ত) ঘোষণা করেছেন ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা।
মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. হোসাইন আহমদ জানান, ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. আহছান উল্লাহ কমিটি বাতিল(বিলুপ্তির)বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সম্পর্কিত খবর
তিনি আরো জানান আগামী২/১দিনের মধ্যে ৫সদস্য বিশিষ্ট এডহক কমিটি গঠন করা হবে।
উল্লেখ্য, ২৭ মার্চ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা নুসরাতকে যৌন হয়রানির করার মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর ৬ এপ্রিল নুসরাত হত্যার ঘটনায় মাদ্রাসা কমিটির সহ-সভাপতি উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিনসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ উঠে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও পুলিশ সদর দপ্তরের প্রাথমিক তদন্তে তা প্রমাণিতও হয়।
গত ৬ এপ্রিল ওই মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারীরা। এর আগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা প্রত্যাহারের জন্য নুসরাতকে চাপ দেয় তারা।
পরে আগুনে ঝলসে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে নুসরাত মারা যান।
শ্লীলতাহানির মামলায় আগে থেকেই কারাবন্দি ছিলেন সিরাজ উদদৌলা। হত্যা মামলা হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ১৭ জন গ্রেফতার হয়েছে। সিরাজ উদদৌলার ‘ঘনিষ্ঠ’ নূর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম, শরীফ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আদালতে।
বাকি আসামিদের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সিরাজ উদদৌলাকে ৭ দিন, আওয়ামী লীগ নেতা ও পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলমকে ৫ দিন, জাবেদ হোসেনকে ৭ দিন, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, আবছার উদ্দিন, আরিফুল ইসলাম, উম্মে সুলতানা পপি ও যোবায়ের হোসেনকে ৫ দিন করে রিমান্ড দেয়া হয়েছে, কামরুন নাহার মনি, শামীম ৫ দিন রিমান্ড।
এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক হয়েছেন সহপাঠী মো. শামীম ও জান্নাতুল আফরোজ মনি।
এদিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার জানান, তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনায় জড়িত পরোক্ষদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
এরই মধ্যে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করতে থানায় যাওয়ার পর নুসরাতের ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেয়ায় সোমবার (১৫ এপ্রিল) সোনাগাজী থানার ওই সময়ের ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করা হয়েছে। এ মামলাও তদন্তের জন্য পিবিআইকে দায়িত্ব দিয়েছেন আদালত।