যারা ভালো চায় না তাদের দরকার নেই
সম্প্রতি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস ভাঙচুর, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর উপর হামলা ও মামলার প্রতিবাদে অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজমান অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান এর উপস্থিতিতে সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন কলা অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. মুশাররাত শবনম,সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. মোঃ নজরুল ইসলাম, প্রফেসর ড. সুব্রত কুমার দে, প্রোক্টরিয়াল বডির সদস্য সহ বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহ অন্যান্য শিক্ষক, কর্মকর্তা।
সম্পর্কিত খবর
উপাচার্য তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, আমার শিক্ষার্থীরা একটি যৌক্তিক আন্দোলনে নেমেছিলো । আমার শিক্ষার্থীরা গাড়ি ভাঙচুর করতে পারে না । যারা গাড়ি ভাঙচুর করেছে তারা সাধারন কেউ নয় । আমার শিক্ষককে , শিক্ষার্থীকে যখন স্থানীয় সন্ত্রাসীরা হামলা করলো তখন কে কোথায় ছিলো ? আমার শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছিলো । আর ১৪ মে আন্দোলনের ২য় দিন যারা সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া দুজন গণমাধ্যম কর্মীকে আহত করেন তাদের তদন্ত করে বিচার হবে । কিন্তু এই আশ্বাস ও ময়মনসিংহ সাংবাদিক নেতাদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সর্বোচ্চ দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা দুঃখ প্রকাশ করলেও তারা তা মানতে পারে নি ।
চিকিৎসার ব্যয় ভার নেয়ের আশ্বাস দিলেও মানেন নি। এর প্রতিবাদে মানববন্ধনে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-রাজনৈতিকদের নিয়ে কটুক্তি করে বক্তব্য রাখেন কালের কন্ঠের ময়মনসিংহ প্রতিনিধি নিয়ামুল কবীর সজল যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অল্প সময়ে ভাইরাল হয়ে পড়ে । তখন সাধারন শিক্ষার্থীরা আবারো বিক্ষুব্ধ হয়ে পরে । তখন এক প্রকার চাপে দুঃখ প্রকাশ করেন সেই প্রতিনিধি । বিষয়টা এখানে শেষ হলেও পারতো কিন্তু তা না করে তারা শিক্ষার্থীদের নামে মামলা করলো । তাও ১টি নয় ৩টি মিথ্যা মামলা অজ্ঞাত ৫০০ জন শিক্ষার্থীর নামে দায়ের করে বিভিন্ন পক্ষ দেখিয়ে যার কোন যৌক্তিকতা নেই । মামলা তো আমরাও দিতে পারতাম কিন্তু আমরা তা করিনি ।
আমরা চেয়েছি শান্তিপূর্ন সমাধান। আমাকে রেখে আমার শিক্ষার্থীদের কেউ গ্রেফতার করতে পারবে না । মামলার প্রত্যাহারের বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন, ময়মনসিংহ পুলিশ এর ডিআইজি, পুলিশ সুপার সহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সংগঠন আশ্বাস দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সাথেও যোগাযোগ রয়েছে। এই অস্থিতিশীল পরিবেশ যারা তৈরী করার চেষ্টা করছে তাদের হুশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই তারা রক্ষা পাবে না । যারা আমাদের ভালো চায় না তাদের দরকার নেই ।
আমি আমার শিক্ষার্থীদের পাশে আছি তারা কোন অন্যায় করে নি । যারা উগ্রতা দেখিয়েছে তারা কয়েকজন মাত্র তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে তেমনি যারা আমাদের শিক্ষক , ছাত্র এমনকি ছাত্রীদের আহত ও যখম করেছে তাদের দ্রুত ট্রাইব্যুনাল-এ বিচারের আওতায় বিচার করবো । বিচার হীনতার সংস্কৃতি আমি ও আমার প্রশাসন দূর করবো শুধু আপনারা পাশে থেকে সাহায্য করুন । আমরা আন্তরিক সকলে আন্তরিক হলে এই সমস্যা সমস্যাই থাকতো না। তবে সকলের প্রতি আমাদের আহবান আসুন সব কিছু ভুলে গিয়ে একসাথে সামনে এগিয়ে চলি ।
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি তপন কুমার সরকার বলেন আমরা চাইলে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কোটি টাকা করে মানহানির মামলা দিতে পারতাম কিন্তু করিনি কেননা আমরা শিক্ষক । তবে শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তান তাই মামলা প্রত্যাহার না হলে আমরা শিক্ষক সমিতিও ব্যবস্থা নিবো ।
আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী বলেন আমরা অহিংস আন্দোলন করি । একদল এসে হঠাৎ করে এমন করেছে এরা মূলত কারো এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে এসেছিলো । সাংবাদিক লাঞ্ছনার ঘটনায় আমরা লজ্জিত তবে সেটা ভুল বুঝাবুঝি থেকে হয়েছে ।একই সাথে সজল নামের যে সাংবাদিক শিক্ষকদের ছাগল বলে যে কটুক্তি করেছে তাও নিন্দনীয় । আমরা চাই এই মিথ্যা বানোয়াট মামলা প্রথাহার করা হোক ও আমাদের মুখোমুখি শ্রমিক ,সাংবাদিকদের যারা ষড়যন্ত্র করে দাড় করিয়ছে তাদের চিহ্নিত করে বিচার করা হোক ।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি সাংবাদিক লাঞ্চনার প্রতিবাদ জানান একই সাথে সকল সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার আহবান জানান।
উল্লেখ্য গত ১৩ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গাড়িতে ট্রাকের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে পরবর্তীতে আন্দোলন মোড় নেয় ভিন্ন খাতে । তবে এ পর্যন্ত শিক্ষক শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারীদের গ্রেফতার অভিযান চলছে সেই সাথে তা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল এ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান । গত ১৪ মে রাতে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় ৫০০-৬০০ জন অজ্ঞাত শিক্ষার্থীর নামে একটি মামলা দায়ের করেন, একই থানায় ৫০ জন আরো অজ্ঞাত নামা শিক্ষাক্ষার্থীর নামে মামলা করেন ময়মনসিংহ এটিএন বাংলার প্রতিনিধি । অপর আরেকটি মামলা করেন ত্রিশাল উপজেলা পরিবহণ মালিক সমিতি ।
ওএফ