মানুষের সর্বস্ব কেড়ে নিচ্ছে আকস্মিক বন্যা
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় বিভিন্ন স্থানে মনু নদীর বাধ ভেঙ্গে সৃষ্ট আকস্মিত বন্যায় মানুষের সর্বস্ব কেড়ে নিচ্ছে। মানুষের আর্তচিৎকার আর অবিরাম বিলাপে যেন ব্যাঙ্গ করছে নদীর পানি। কিছুই অবশেষ রেখে যাচ্ছে না সর্বনাশা বন্যার পানি।
সম্পর্কিত খবর
কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের গনকিয়া এলাকায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বন্যার পানি মানুষের ঘরের ছাউনি পর্যন্ত পৌছাচ্ছে। কোথাও কোথাও ঘরের পুরোটা পানির নিচে। তীব্র স্রোতের ঢেউয়ে এই এলাকার মবশ্বির আলী, রুস্তম মিয়া, কনা মিয়ার ঘরের দেয়াল ভেঙ্গে ফেলেছে। এরকম আরও প্রায় ২০ থেকে ২৫টি ঘরের দেয়াল ভেঙ্গে পানি ঢুকেছে। মূল্যবান ছোট-খাট সম্পদ হাতে নিয়ে মানুষ নিরাপদ স্থানের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিতে দেখা যাচ্ছে। প্রত্যেক মানুষের চোখের কোনে অশ্রু জমা। ঝিরি ঝিরি বৃষ্টির কান্নার মাঝে ভুক্তভোগী বানভাসী মানুষও কাঁদছে। কেউ কেউ হাউ-মাউ করে কাঁদছে।
ইতিমধ্যে কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের তেলিবিল, চাতলা ব্রিজ এলাকা, নিশ্চিতন্তপুর, বিজিবি চেকপোস্ট এলাকা, পৃথিমপাশা ইউনিয়নের বেলেরতল, রাজাপুর, কলিরকোনা, টিলাগাও ইউনিয়নের বলিয়ার, মিয়ারপাড়া, সন্ধাবাজার, খন্দকার গ্রাম, তাজপুর, ডরিতাজপুর, শাহজাদপুর, বাগৃহাল, লহরাজপুর গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
কুলাউড়ার হাজীপুরের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত বাচ্চু জানান, মাতাবপুর, মাদানগর, চক রণচাপ, হাসিমপুর, বাড়ইগাও ও মন্দিরাসহ ৬/৭ টি এলাকায় নদীর প্রতিরক্ষা বাধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। চকরনচাপ বাড়ইগাও ও মাদানগরে এলাকাবাসী বাধ রক্ষায় প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে। এছাড়া সাধনপুর, কাউকাপন, বাশউরী ও নোয়াগাও এলাকার নদী তীরবর্তী পরিবারগুলোর ঘরবাড়িতে পানি উঠায় তারা নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে। মাতাবপুর, বাড়ইগাও ও তুকলী এলাকায় বাধ গড়িয়ে সমতলে পানি বের হচ্ছে।
বানভাসী মানুষের হাহাকার কুলাউড়া উপজেলার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। সর্বস্তরের মানুষ ভুক্তভোগীদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। ইতিমধ্যে কুলাউড়ার সাংসদ আব্দুল মতিন, উপজেলা চেয়ারম্যান আসম কামরুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী মো. গোলাম রাব্বী, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাও. ফজলুল হক খান সাহেদ সরেজমিন গিয়ে বানভাসী মানুষের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।
কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রেনু, পৃথিমপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান নবাব আলী বাকর খান ত্রান ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।
এদিকে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক কামাল হাসান, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল, জেলা বিএনপির সদস্য বদরুজ্জামান সজল, উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি লুৎফুল হক, সাধারণ সম্পাদক এ.এস.এম সিদ্দিক আহমদ বানভাসী মানুষের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।