• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

কুষ্টিয়ায় ২৩৭টি পূজা মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের দুর্গাপূজা

প্রকাশ:  ১৫ অক্টোবর ২০১৮, ১৩:৫৮ | আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০১৮, ১৪:০৪
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রতিমা তৈরি শেষ। বাহারি রং চড়েছে প্রতিমার গায়। নিপুণ শিল্পী তার তুলির আলতো ছোঁয়ায় জাগিয়ে তুলেছেন মা দুর্গাকে। জেগে উঠছেন সরস্বতী। গণেশের গায় উঠেছে নকশীদার কুচির দুধসাদা ধুতি। মা লক্ষীর হাসি যেন ঝরে পড়ছে। ভোরের শিউলি ছড়াচ্ছে মোহনীয় গন্ধ। এমন শারদীয় আবহেই সোমবার (১৫ অক্টোবর) থেকে শুরু হয়েছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। শঙ্খ, উলুধ্বণি আর ঢাকের বাদ্যির তালে রোববার সায়ংকালে আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন দেবী দুর্গা।

বোধনের ঘট স্থাপনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। পঞ্জিকার সূচি অনুযায়ী, সকাল ৮টা ১৪মিনিট থেকে ষষ্ঠী শুরু হয়ে সোমবার সকাল ৯টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হয়। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় দেবীর বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বোধন দুর্গাপূজার অন্যতম একটি আচার। ‘বোধন’ শব্দের অর্থ জাগরণ বা চৈতন্যপ্রাপ্ত।

পূজা শুরুর আগে সন্ধ্যায় বেলশাঁখায় দেবীর বোধন দুর্গাপূজার একটি অত্যাবশ্যকীয় অঙ্গ। শরৎকালের দুর্গাপূজায় এই বোধন করার বিধান রয়েছে। পাঁচদিনের এ উৎসব শেষ হবে ১৯ অক্টোবর শুক্রবার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। ইতিমধ্যে কুষ্টিয়ার প্রতিটি মন্দিরে শেষ হয়েছে প্রস্তুতি। মন্দিরে আসা ভক্তের মনোরঞ্জনে ব্যতিক্রমধর্মী সাজ সজ্জায় বাড়তি আকর্ষণ বাড়াতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন আয়োজকরা। দেবী দুর্গা এবার তার বাপের বাড়ি এসেছেন ঘোড়ায় চড়ে। তাই তার আগমন বার্তায় প্রতিটি বাড়িতে চলছে উৎসবের আমেজ। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও জেলার ৬ টি উপজেলার ২৩৭ টি মণ্ডপে সার্বজনীন শারদীয় দূর্গা উৎসব। প্রতিমায় প্রলেপ সহ শেষ মুহৃর্তের সব আয়োজন ব্যস্ততার সাথে করে চলছেন প্রতিমা শিল্পীরা। দূর্গা দুর্গতিনাশিনী-দশভূজা দেবী দুর্গা আমাদের মাঝে আসছেন। তাই প্রতিমা শিল্পীরা দেবী দূর্গা, স্বরসতী, লক্ষী, কার্তিক ও গনেশসহ নানা দেব-দেবীর প্রতিমার রূপকে ফুঁটিয়ে তুলেছেন নিপুণ হাতের ছোঁয়ায়। এদিকে চাহিদার সাথে এবার বেড়েছে প্রতিমা তৈরির খরচও।

জেলা পুরোহিত প্রশিক্ষক বাপ্পী বাগচী জানান, রোববার পঞ্চমী তিথিতে বোধন পুজার মধ্যে দিয়ে দূর্গা পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। আজ ৬ষ্ঠী পূজায় অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে মূল পর্ব। দেবী দুর্গা এবার তার বাপের বাড়ি আসছে ঘোড়ার চড়ে। যাবার সময় পালকীতে চড়ে যাবেন। জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. জয়দেব বিশ্বাস জানান, এবারে জেলার দৌলতপুর উপজেলায় ১০টি, ভেড়মারায় ৯টি, মিরপুরে ২৪টি, কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ৮১টি, কুমারখালীতে ৫৪টি ও খোকসা উপজেলার ৬০টি মন্দিরে দূর্গা পুজা অনুষ্ঠিত হবে।

এদের মধ্যে অন্তত ৪০টি মন্দির বিভিন্ন কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পুলিশ সুপার বরাবর লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। সেই সব মন্দিরগুলোতে আলাদা নজরদারি থাকবে। এছাড়া যে কোন পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জের সরকারী মোবাইল ফোন নম্বরে এবং কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের কন্ট্রোলরুম কিংবা তদারকি কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

এদিকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব নির্বিঘ্ন করতে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের পক্ষ হতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। সোমবার থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে পূজা। কুষ্টিয়া জেলার ৬টি উপজেলায় মোট ২৩৭টি পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি আনসার সদস্য মোতায়েনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি সাদা পোশাকে ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ নিয়োজিত থাকবেন।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস,এম তানভীর অরাফাত জানান, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

/পি.এস

কুষ্টিয়া,দুর্গাপূজা

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close