কোচিং সেন্টারে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ
রাজশাহী জেলা দুর্গাপুরে কোচিং সেন্টারে শিক্ষকের লালসার শিকার হয়েছেন কলেজ পড়ুয়া এক ছাত্রী (১৮)। গত সোমবার দুপুরে পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজারে ইউনিক কোচিং সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় অভিযুক্ত রবিউল ইসলাম (২২) পুঠিয়ার দুর্গাপুর উপজেলার চৌপুকুরিয়া দিঘীর পাড় গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে। রবিউল ইউনিক কোচিং সেন্টারে অস্থায়ী ভিত্তিতে শিক্ষকতা করেন।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর মামা জানান, ওই ছাত্রী ভয়ে প্রথমে বাড়ির কাউকে বিষয়টি বলেননি। ঘটনার দিন রাতের খাবার খাওয়ার পর ভুক্তভোগী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পেট ব্যাথার জন্য তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেওয়া হলে বিষয়টি বুঝতে পারেন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসকরা। এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তখনও বিষয়টি অস্বীকার করেন ওই ছাত্রী।
সম্পর্কিত খবর
রামেকে সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন ছাত্রী জানান, রবিউলের সঙ্গে আগে থেকে পরিচয় ছিল। তার মাধ্যমে পুঠিয়ার বানেশ্বর বাজারে অবস্থিত ইউনিক কোচিংয়ে ভর্তি হন। পরে তাকে কোচিংয়ের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থাও করে দেন। ফলে রবিউলের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি হয় ভুক্তভোগী ছাত্রীর। কিন্তু কিছুদিন পরই তাকে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য প্রস্তাব দেয় রবিউল। ভিকটিম ছাত্রী বেশ কিছুদিন যাবত রবিউলের প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি।
ছাত্রী আরও জানান, এরপর থেকে তিনি রবিউলকে এড়িয়ে চলছিলেন। তবে ৭ জানুয়ারি কোচিং সেন্টারে গেলে রবিউল ‘গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে’ বলে তাকে কোচিং শেষে দেখা করতে বলেন। কোচিং শেষে সবাই চলে গেলে ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে শিক্ষক রবিউল।
ছাত্রী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি কান্নাকাটি শুরু করলে সে আমি নানা হুমকি-ধামকি দেয়। পরে দ্রুত বিয়ে করার প্রলোভন দেখায়। আমি বাড়িতে গিয়ে কাউকে বিষয়টি বললে, সে আমাকে দেখে নেবে এবং বিষয়টি সে অস্বীকার করবে বলে জানায়। তাতে আমার নিজের এবং আমার মামাদের বেশি সম্মান যাবে বলে ভয় দেখায়। তাই বাড়িতে এসেও কাউকে কিছু বলতে পারিনি আমি।’
এদিকে, এলাকায় ঘটনা জানাজানি হলে প্রথমে তা অস্বীকার করে শিক্ষক রবিউল ইসলাম। পরে এলাকাবাসীর চাপের মুখে সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। ওই এলাকার কয়েকজন জানায়, ঘটনার পর তা ধামাচাপা দিতে তৎপর হয়ে ওঠে রবিউলের পুরো পরিবার। প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে যোগাযোগ করে রফাদফা করার চেষ্টা করে। ঝালুকা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একজন নেতা চাপ দিয়ে এখনও থানায় কোনো মামলা করতে দেয়নি।
তারা বলেন, ‘ভিকটিমের মামাকে মোটা অংকের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে অভিযুক্ত শিক্ষক রবিউল ও তার পরিবার।’ তবে ভিকটিমের মামা বলেন, ‘আমরা এ ঘটনার বিচার চাই। শিক্ষিত মুখোশধারী শয়তানের উপযুক্ত বিচারের জন্য থানায় মামলা করবো।’
জানতে চাইলে দুর্গাপুর থানার ওসি আব্দুল মোতালেব বলেন, ‘ঘটনাটি আমার জানা নেই। কেউ এ ধরনের কোনো অভিযোগও থানায় করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবার বাড়ি রাজশাহী নগরীর মতিহার থানার কাপাশিয়া গ্রামে। তার বাবা ও মায়ের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ায় ওই ছাত্রী ছোটবেলা থেকে দুর্গাপুরে মামার বাড়িতে বসবাস করছেন। তিনি ২০১৯ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থী।
পিবিডি/ওএফ