• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

‘কসবা সীমান্তের রোহিঙ্গারা জাতিসংঘের ভারতীয় কার্ডধারী শরণার্থী’

প্রকাশ:  ২২ জানুয়ারি ২০১৯, ১০:৩০ | আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০১৯, ১০:৩৫
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের কাজিয়াতলীতে বাংলাদেশ ভারত ২০২৯ সীমান্ত পিলারের কাছ দিয়ে ৩১ জন রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করার চেষ্টা অব্যাহত রাখছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী (বিএসএফ)। গত চার দিন ধরে সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থান করছেন ওই রোহিঙ্গা নাগরিকরা। এ নিয়ে দু' দেশের বিজিবি ও বিএসএফ অধিনায়ক পর্যায়ে দফায় দফায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সূত্রে জানা গেছে, রোববার অধিনায়ক পর্যায়ে দুই দফা পতাকা বৈঠক হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। তবে সোমবার রাতে বিএসএফ তাদের ফিরিয়ে না নিয়ে তাঁবু করে দিয়েছে। ওই রোহিঙ্গাদের রয়েছে ভারতের জম্মু-কাশ্মিরের হেলথ ও শরণার্থী কার্ড। এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ২৫ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক (সিও) গোলাম কবির সোমবার দুপুরে বলেন, শূন্যরেখায় অবস্থানকারীদের হাতে ভারতীয় শরণার্থী ও রেশন কার্ড রয়েছে। পতাকা বৈঠকে এগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে।

তবে বিএসএফের দাবি, তারা ভারতীয় নাগরিক নয়। বিজিবি বলেছে, অন্য দেশের নাগরিক আপনাদের এলাকায় থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হলেও তা নিচ্ছেন না কেন?

স্থানীয় সূত্র জানায়, কাজিয়াতলী সীমান্ত দিয়ে শুক্রবার রাতে ৩১ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পাঠানোর চেষ্টা করে বিএসএফ। এ সময় বিজিবি বাধা দিলে রোহিঙ্গারা দুই দেশের শূন্যরেখায় অবস্থান করছে।

গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম মান্নান জাহাঙ্গীর বলেন, দুই দেশের শূন্যরেখায় অবস্থান ৩১ জন রোহিঙ্গার মধ্যে ১৭ জনই শিশু। বাকি ১৪ জনের ছয়জন নারী । তিনি বলেন, তাদের কাছ থেকে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচআরসি) দেওয়া রিফিউজি কার্ড, রিফিউজি সার্টিফিকেট, জম্মু-কাশ্মীরের হেলথ কার্ড থাকার বিষয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। সেসব কার্ডের মেয়াদ আরো পাঁচ-ছয় মাস পর্যন্ত রয়েছে। এসব কার্ডে লেখা রয়েছে- জোরপূর্বক তাদের দেশ থেকে বের করা যাবে না। আশ্রয় নেওয়াদের কাছ থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন কার্ড ও তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে মনে করা হচ্ছে তারা ভারতে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের নাগরিক। সোমবার রাতে বিএসএফের পক্ষ থেকে শূন্যরেখার ভারতীয় অংশে আশ্রিতদের জন্য তাঁবু ও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে তিনি জানান

ইউএনএইচসিআর ভারতের সঙ্গে কথা বলবে জানা গেছে, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভারতের অংশে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের বিষয়ে নয়াদিল্লির সঙ্গে কথা বলবে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)।

ঢাকায় নিযুক্ত ইউএনএইচসিআরের নতুন আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফেন কর্লিস সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। এর আগে স্টিফেন কর্লিস পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের কাছে তার পরিচয়পত্র পেশ করেন।

স্টিফেন কর্লিস বলেন, নিরাপদে এবং স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে মিয়ানমারের সঙ্গে কাজ করছে ইউএনএইচসিআর। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভারতের অংশে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের বিষয়ে নয়াদিল্লির সঙ্গে কথা বলব। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য রাখাইন এখনও নিরাপদ নয়। যে পর্যন্ত রাখাইনের পরিস্থিতি প্রত্যাবাসনের অনুকূলে না যায়, ততদিন পর্যন্ত বাংলাদেশ, ভারতসহ যেসব দেশে রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়েছে সেখানেই তাদের আশ্রয় দিতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানাবো।

স্টিফেন কর্লিস আরও জানান, কক্সবাজারে একাধিক শিবিরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের আস্থা অর্জন করে রাখাইনে ফেরত পাঠাতে সহযোগিতা করা হবে। সে বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

পিবিডি/পি.এস

ব্রাহ্মণবাড়িয়া,রোহিঙ্গা,জাতিসংঘ,শরণার্থী

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close