অবশেষে ৩১ রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিল বিএসএফ
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের শূন্যরেখায় ভারতের অংশে অবস্থান নেয়া ৩১ রোহিঙ্গাকে ভারতে ফিরিয়ে নিয়েছে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের কাজিয়াতলী সীমান্তের শূন্যরেখা ভারতীয় অংশ থেকে তাদের ফিরিয়ে নেয়া হয়।
২৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মুহাম্মদ গোলাম কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সম্পর্কিত খবর
স্থানীয় সূত্র জানায়, কাজিয়াতলী সীমান্ত দিয়ে শুক্রবার রাতে ৩১ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পাঠানোর চেষ্টা করে বিএসএফ। এ সময় বিজিবি বাধা দিলে রোহিঙ্গারা দুই দেশের শূন্যরেখায় অবস্থান করছে।
গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম মান্নান জাহাঙ্গীর বলেন, দুই দেশের শূন্যরেখায় অবস্থান ৩১ জন রোহিঙ্গার মধ্যে ১৭ জনই শিশু। বাকি ১৪ জনের ছয়জন নারী।
তিনি জানান, তাদের কাছ থেকে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচআরসি) দেওয়া রিফিউজি কার্ড, রিফিউজি সার্টিফিকেট, জম্মু-কাশ্মীরের হেলথ কার্ড থাকার বিষয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। সেসব কার্ডের মেয়াদ আরো পাঁচ-ছয় মাস পর্যন্ত রয়েছে। এসব কার্ডে লেখা রয়েছে- জোরপূর্বক তাদের দেশ থেকে বের করা যাবে না। আশ্রয় নেওয়াদের কাছ থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন কার্ড ও তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে মনে করা হচ্ছে তারা ভারতে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের নাগরিক। সোমবার রাতে বিএসএফের পক্ষ থেকে শূন্যরেখার ভারতীয় অংশে আশ্রিতদের জন্য তাঁবু ও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে টানা চার দিন সীমান্তের শূন্যরেখায় কৃষি জমিতে অবস্থান করেন রোহিঙ্গারা। এতে করে প্রচন্ড শীত ও অনাহারে থাকায় অসুস্থ হয়ে পড়ে রোহিঙ্গা শিশুরা। বিষয়টি সমাধানে একাধিকবার পতাকা বৈঠকে মিলিত হন বিএসএফ ও বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
অবশেষে ঢাকায় নিযুক্ত ইউএনএইচসিআরের নতুন আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফেন কর্লিস সোমবার পররাষ্ট্র পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের কাছে তার পরিচয়পত্র পেশ করেন। স্টিফেন কর্লিস গণমাধ্যমকে বলেন, নিরাপদে এবং স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে মিয়ানমারের সঙ্গে কাজ করছে ইউএনএইচসিআর। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভারতের অংশে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের বিষয়ে নয়াদিল্লির সঙ্গে কথা বলেন ইউএনএইচসিআর।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য রাখাইন এখনও নিরাপদ নয়। যে পর্যন্ত রাখাইনের পরিস্থিতি প্রত্যাবাসনের অনুকুলে না যায়, ততদিন পর্যন্ত বাংলাদেশ, ভারতসহ যেসব দেশে রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়েছে সেখানেই তাদের আশ্রয় দিতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোরপ্রতি আহ্বান জানান ইউএনএইচসিআর। স্টিফেন কর্লিস আরও জানান, কক্সবাজারে একাধিক শিবিরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের আস্থা অর্জন করে রাখাইনে ফেরত পাঠাতে সহযোগিতা করা হবে। সে বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
পিবিডি/পি.এস