আত্মহত্যার আগে সুন্দরী স্ত্রীকে নিয়ে যে চিরকুট লিখে গেলেন ডাক্তার
‘পরকীয়ায়’ প্রেমে জড়িত স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের এক তরুণ চিকিৎসক ফেসবুক স্ট্যাটাসে দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) ভোর ছয়টা ২০ মিনিটে ডা. মোস্তফা মোরশেদ আকাশ (৩২) নামের ওই চিকিৎসককে চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সম্পর্কিত খবর
এর আগে ডা. আকাশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনে স্ট্যাটাস, ছবি ও ভিডিও দিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির ঘটনাবলি তুলে ধরেন। তার সর্বশেষ স্ট্যাটাস ছিল ‘ভাল থেক আমার ভালবাসা তোমার প্রেমিকাদের নিয়ে।’
চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার জানান, চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের (১৩ নম্বর ওয়ার্ড) চিকিৎসক ছিলেন ডা. আকাশ। সকালে তার ভাই নেওয়াজ মোরশেদ চান্দগাঁও আবাসিকের বি-ব্লকের ২ নম্বর সড়কের ২০ নম্বর বাসা থেকে গুরুতর অবস্থায় তাকে চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। ধারণা করা হচ্ছে, ইনসুলিনের সাহায্যে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
জানা যায়, চন্দনাইশ উপজেলার বরকল বাংলাবাজার এলাকার মৃত আবদুস সবুরের ছেলে ডা. আকাশের সঙ্গে তানজিলা চৌধুরী মিতুর পরিচয় ২০০৯ সাল থেকে। ২০১৬ সালে বিয়ে হয় তাদের।
ডা. মোস্তফা মোরশেদ আকাশ ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আমার সাথে তানজিলা হক চৌধুরী মিতুর ২০০৯ সাল থেকে পরিচয়। প্রচণ্ড ভালোবাসি ওকে। ও নিজেও আমাকে অনেক ভালোবাসে। আমরা ঘুরে বেড়াই, প্রেম করে বেড়াই। আমাদের ভালোবাসা কম বেশি সবাই জানে। অনেকে বউ পাগলাও ডাকতো।…আমিতো বেঁচে থেকেও মৃত হয়ে গেলাম। তারপর ক্ষমা চাইল শবে কদরের রাতে, কান্না করে পা ধরে আর কখনো এমন হবে না। আমিও ক্ষমা করে দিয়ে ১ বছর ভালোভাবেই সংসার করলাম। তারপর ও দেশের বাইরে আমেরিকা গেল। মাঝখানে একবার ঈদ পালন করতে আসল, সেপ্টেম্বরে ২০১৮ আবার চলে গেল ইউএসএমএলই এর প্রিপারেশন নিচ্ছিল সাথে ফেব্রুয়ারিতে ২০১৯ এ আমার ইউএসএ যাওয়ার কথা।…আমি বারবার বলছি আমাকে ভালো না লাগলে ছেড়ে দাও কিন্তু চিট কর না মিথ্যা বল না।’
‘আমার ভালোবাসা সবসময় ওর জন্য ১০০% ছিল। আমি আর সহ্য করতে পারিনি। আমাদের দেশে তো ভালোবাসায় চিটিং এর শাস্তি নেই। তাই আমিই বিচার করলাম আর আমি চির শান্তির পথ বেচে নিলাম। তোমাদেরও বলছি কাউকে আর ভালো না লাগলে সুন্দরভাবে আলাদা হয়ে যাও চিট কর না মিথ্যা বল না। আমি জানি অনেকে বিশ্বাস করবে না এত অমায়িক মেয়ে আমিও এসব দেখে ভালোবেসেছিলাম। ভিতর বাহির যদি এক হতো। সবাই আমার দোষ দিবে সবকিছুর জন্য তাই ব্যাখ্যা করলাম।…ও মা তুমি মাফ করে দিও তোমার স্বপ্ন পূরণ করতে পারলাম না। মায়ের ভালোবাসার কখনও তুলনা চলে না।’
‘বারবার বলছি ভালো না লাগলে আলাদা হয় যাও চিট করনা, মিথ্যা বল না বিশ্বাস ভাঙ্গিওনা। হাজার হাজার ছবি আছে ,আরো খারাপ খারাপ। দিলাম না যারা বিলিভ করবে এতেই করবে, না করলে নাই। এই ৯ বছরে বয়ফ্রেন্ড স্বামী-স্ত্রীর মত আবার সাথে সবি করে গেল।’
‘ও আমাকে আর কি ভালোবাসল? কিসের বিয়ে করল? আমি শেষ পর্যন্ত চাইছি সব চুপ রেখে সমাধান করে অকে নিয়ে থাকতে। আমার শশুর আর শাশুড়িকে বারবার বলছি উনারা সমাধান করতে পারতো! আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী আমার বউ। ৯টা বছর যাকে ১০০% ভালোবাসছি, ওকে প্ররোচনা দিছে মইন মিথি নামে দুই ফ্রেন্ড। ওর মা-বাবা আমাকে মানসিক কষ্ট দিয়ে মারছে। আমি এই বেইমানি মেনে নিতে পারি নাই। তারপর ও ভুলে আমি সুন্দর সংসার করতে চাইছি আমার শাশুড়ি-শশুড় আর বউ নামের কলংক করতে দিল না। আমাকে প্রতি নিয়ত প্রেশার দিয়ে গেছে আমার বউ আমার মার নামে যা তা যা তা বলে গেছে। আমাকে ভালো না লাগলে ছেড়ে চলে যাইতে বলছি ১০০ বার। আমি বোকা ছিলাম তুমি সুখে থেকো। অনেকেকে ওর ফ্যান বিলিভ করবে না আমি জানি। তবে এটাই সঠিক মরার আগে কেউ মিথ্যা বলে না আর বাইরে থেকে মানুষের ভিতরের চেহারা বুঝা যায় না।’
‘ও সুন্দরী, পড়ায় ভালো, গান পাড়ে সত্য কিন্তু ও ভালো অভিনেত্রী, ভাল চিটার। যাদের ঈচ্ছা বিলিভ করবে যাদের ঈচ্ছা নাই করবে না। তবে কাউকে ভালোবেসে চিটারগিরি করো না।’