দ.আফ্রিকায় দশ দিনে ফেনীর তিন যুবক খুন
দক্ষিণ আফ্রিকায় ফেনীর তিন প্রবাসী যুবক গত ১০ দিনের ব্যবধানে হত্যার শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের মাঝে বিদ্যমান খুন-হামলার আতঙ্ক আরও বেড়ে গেছে।
স্থানীয় সময় গত শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে জোহানেসবার্গের সোয়েটো লোকেশনের এলডেরাডো পার্কের একটি দোকানে নাজমুল হুদা বিপ্লব (২৫) নামে এক প্রবাসীকে গুলি করে হত্যা করে কৃষ্ণাঙ্গ সন্ত্রাসীরা।
সম্পর্কিত খবর
বিপ্লব দাগনভূঞা পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের উত্তর শ্রীধরপুর গ্রামের হোসেন সেরাং বাড়ির আবদুর রাজ্জাক প্রকাশ রেজু মিয়ার ছেলে।
নিহতের মামা জাহিদ হোসেন টিপু জানান, ঘটনার দিন এলডেরাডো পার্কের দোকানে একা ছিলেন তিনি। রাত ৮টার দিকে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা দোকানে লুটপাট চালানোর সময় বিপ্লব বাঁধা দেন।
এ সময় সন্ত্রাসীরা গুলি করলে ঘটনাস্থলেই নিহত হন বিপ্লব। নিহতের বাবা আবদুর রাজ্জাক জানান, পাঁচ বছর পর এবার দেশে ফিরে বিয়ে করার কথা ছিল বিপ্লবের।
গত ২৭ জানুয়ারি রাতে দক্ষিণ আফ্রিকার জুলু নাটাল প্রভিন্সের পিটা মেরিজবার্গ শহরে প্রবাসী মোহাম্মদ শাহ পরান (৩০) হত্যার শিকার হন। তিনি ফেনী শহরের মহিপাল মধ্যম চাডিপুর ভূঁইয়া বাড়ির পেয়ার আহাম্মদ ভূঁইয়ার ছেলে।
নিহতের ভাই আনোয়ার হোসেন জানান, প্রায় ১৩ বছর আগে দেশটিতে পাড়ি জমান শাহ পরান। ঘটনার দিন এক সুপার মার্কেটে তার ভাইয়ের দোকানের ক্যাশ কাউন্টারে স্থানীয় এক কৃষ্ণাঙ্গের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয় তার। একপর্যায়ে হাতাহাতির সময় কৃষ্ণাঙ্গ সন্ত্রাসীরা শাহ পরানের বুকে ছুরিকাঘাত করে। তাকে স্থানীয় এক হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
গত ২৩ জানুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকার নর্থ-ওয়েস্ট প্রভিন্সের রাস্টেনবার্গ এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার মহিন উদ্দিন (৪০)। মহিনের ভাই হুমায়ুন কবির জানান, ঘটনার আগে থেকে কৃষ্ণাঙ্গ সন্ত্রাসীরা চাঁদার দাবিতে মহিনকে হুমকি দিয়ে আসছিল। ২৩ জানুয়ারি রাতে কয়েকজন সন্ত্রাসীরা দোকানে লুটপাট চালানোর সময় মহিন বাঁধা দিলে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয় ।
দীর্ঘদিন ধরে দেশটির জোহানেসবার্গে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামের আবুল হাসান রাজীব (৩০)। তিনি বলেন, প্রিটোরিয়া, জোহানেসবার্গ লোকেশন, সয়েটো কনটেইনসহ প্রায় সব এলাকাতেই প্রবাসীরা নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হন। দেশটিতে ছিনতাই, ডাকাতির পরিমাণ বেশি। তিনি আরও বলেন, সেখানে শ্রমিকের চাহিদা কম থাকায় প্রবাসীরা প্রত্যন্ত অঞ্চলে কনটেইনারে ভ্রাম্যমাণ দোকান দিয়ে ব্যবসা করে। এসব দোকানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকায় দুর্ঘটনা আরও বাড়ছে।
আর- এইচ