মাদারীপুরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভ্রাম্যমাণ মধুচাষ
মাদারীপুরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভ্রাম্যমাণ পদ্ধতিতে মধুচাষ। রবিশস্যের ক্ষেতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা হয় মৌমাছির বাক্সগুলো। বাক্স থেকে বের হয়ে ফসলে আসা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে থাকে মৌমাছিগুলো। এভাবে বাক্সবন্দি হয় মধু। নির্দিষ্ট সময় পরে ওই বাক্স থেকে সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করা হয় মধু।
বিশেষ করে সরিষা, ধনিয়া ও কালোজিরা ক্ষেতে মৌমাছি চাষ করে মধু আহরণ করা হয়ে থাকে। এবং এই পদ্ধতিটি গত কয়েক বছর ধরে মাদারীপুরের বিভিন্ন স্থানে এই পদ্ধতি মধুচাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এতে করে একদিকে বিপুল পরিমান মানসম্মত মধু উৎপাদন হচ্ছে অন্যদিকে ক্ষেতে মৌমাছি বিচরণের ফলে পরাগায়নের মাধ্যমে বাড়ছে ফলনও।
সম্পর্কিত খবর
মধু চাষীরা মনে করছেন সরকারী সহযোগিতা পেলে মধু উৎপাদনের পরিমান আরো বৃদ্ধি পাবে এবং বিপুল পরিমান মধু বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব হবে।
জানা গেছে, মাদারীপুরের চারটি উপজেলার বিস্তীর্ণ সরিষা, কালোজিরা ও ধনিয়া ক্ষেতে প্রতি বছরই মধুচাষীরা তাদের মৌমাছি নিয়ে হাজির হন। পুরো মৌসুম তারা এই মৌমাছির বাক্স নিয়ে এ সকল এলাকায় থাকেন। ক্ষেতের পাশে বাক্সগুলো ছড়িয়ে রাখেন। মৌমাছির দল ক্ষেতে উড়ে উড়ে ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে বাক্সে রাখা মৌচাকে জমা করে। একটা নির্দিষ্ট সময় পরে সেই মৌচাক থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে মানসম্মত সুস্বাদু মধু! এসব ফসলের ক্ষেতে ফুল থাকা পর্যন্ত চলবে মধু সংগ্রহ।
এদিকে কৃষি অফিসের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন মৌমাছির মাধ্যমে মধু সংগ্রহের ফলে ফসলের পরাগায়নে সুবিধা হয়। আর এতে করে বাড়ে ফসল উৎপাদনের পরিমানও। প্রায় ২০ থেকে ২৫ ভাগ উৎপাদন বৃদ্ধি পায় বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
মধু সংগ্রহকারীরা জানান, স্থানীয়ভাবে সংগ্রহকৃত এই মধু বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩ শত টাকা কেজি দরে। তবে এই পদ্ধতি উৎপাদিত মধুর একটা উল্লেখযোগ্য পরিমান ঢাকাতে নিয়ে যাওয়া হয়।
মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে মাদারীপুর জেলার ৪ টি উপজেলায় ১৩ হাজার ৮’শ হেক্টর জমিতে ১৫ জাতের সরিষার আবাদ করা হয়েছে। গত বছর এই আবাদের পরিমান ছিলো ১০হাজার হেক্টর। সে হিসেবে মাদারীপুরে আবাদ বেড়েছে ৩হাজার হেক্টর জমিতে এবং এই জমির বেশির ভাগ স্থানেই কৃত্রিম উপায়ে মৌমাছি দিয়ে সংগ্রহ করা হচ্ছে মধূ।
মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক, জি এম গফুর জানান, ক্ষেতে পাশের লাখ লাখ মৌমাছি থাকায় তারা ফুলে ফুলে বসে সুষ্ঠু পরাগায়নে সাহায্য করছে। এতে ফসলের ফলন ২৫ থেকে ৩০ ভাগ বেড়ে যাবে। এলাকার চাষীদের মধ্যে মৌচাষে যথেষ্ঠ আগ্রহ দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে অনেক কৃষক এ ব্যাপারে যোগাযোগ করেছেন।
/পিবিডি/পি.এস