ইয়াবা কারবারিদের আত্মসমর্পণের অনুষ্ঠানে আসবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি
শীর্ষ ইয়াবা কারবারিদের আত্মসমর্পণ নিয়ে আলোচনা থাকলেও এতোদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিষ্কার করে এব্যাপারে কিছু বলেনি। তবে সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজারের টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ইয়াবা কারবারিদের আত্মসমর্পণের অনুষ্ঠানে আসবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি।
বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি)এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস।
সম্পর্কিত খবর
সরেজমিনে দেখা গেছে,সকাল থেকে টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে এই মঞ্চ নির্মাণের কাজ শুরু করেন শ্রমিকরা। কাজ পরিদর্শনে আসেন কক্সবাজার জেলা পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের একটি দল। আগামী শনিবার এই অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী উপস্থিত থাকবেন বলে কথা রয়েছে।
সকাল থেকে চারটি সিএনজি নিয়ে টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানকে ঘিরে মাইকিং করা হচ্ছে পুলিশের পক্ষ থেকে। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন বলে মাইকিংয়ে বলা হচ্ছে। একইসঙ্গে সীমান্তের জনসাধারণকেও উপস্থিত থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
মাঠে মঞ্চের কাজ করার সময় এবাদ উল্লাহ নামে এক শ্রমিক জানান, দুই দিনের মধ্যেই এই মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ করবেন তারা।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস বলেন, টেকনাফ সীমান্তে ইয়াবা বন্ধ করতে জীবন দিতেও প্রস্তুত আমরা। যে কোনও মূল্যেই ইয়াবা বন্ধ করা হবে। এখনও যেসব ইয়াবাকারবারিরা আত্মসর্পন করেনি তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, ইয়াবা কারবারিরা স্বাভাবিক জীবনে না এলে মামলা চলবে। আর স্বাভাবিক জীবনে এলে এদের মামলা আমরা দেখবো। ইয়াবা পাচার করে বিপুল অর্থের মালিক হওয়া ব্যক্তিরা আত্মসমর্পণ করলে তাদের অবৈধ সম্পদ বৈধতা পাবে কি না- সে প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিয়ে তিনি বলেছিলেন, সম্পদের বিষয়টি দুদক বা এনবিআর দেখবে।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে প্রতীকীভাবে ইয়াবা ট্যাবলেট জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করবেন প্রায় ১২০ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী। তাদের মধ্যে অন্তত ৩৫ জন গডফাদার। আত্মসমর্পণের জন্য এরই মধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জিম্মায় এসেছেন তারা। তাদের মধ্যে রয়েছেন টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির তিন ভাই আবদুল আমিন, মো. সফিক ও মো. ফয়সাল, ভাগ্নে সাহেদুর রহমান নিপু এবং বেয়াই শাহেদ কামাল। রয়েছেন টেকনাফ সদরের এনামুল হক মেম্বার, ছৈয়দ হোসেন মেম্বার, শাহ আলম, আবদুর রহমান, মোজাম্মেল হক, জোবাইর হোসেন, নূরল বশর নুরশাদ, কামরুল হাসান রাসেল, জিয়াউর রহমান, মো. নুরুল কবির, মারুফ বিন খলিল ওরফে বাবু, মো. ইউনুছ, ছৈয়দ আহমদ, রেজাউল করিম, নুরুল হুদা মেম্বার, দিদার মিয়া, জামাল হোসেন মেম্বার, মো. শামসুসহ অনেকে।
সংশ্লিষ্ট তথ্যমতে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় কক্সবাজার জেলায় ১ হাজার ১৫১ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী রয়েছে। এদের বেশিরভাগ সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের। ইয়াবার বিরুদ্ধে গত বছরের ৪ মে থেকে শুরু হয়েছে বিশেষ অভিযান। এ পর্যন্ত সীমান্তে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন অন্তত ৪২ কারবারি। এর মধ্যে ৩৭ জনই টেকনাফের। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ৭৩ জন গডফাদারের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন চারজন।
পিবিডি/জিএম