শেরপুর বারের নির্বাচন ২৮ ফেব্রুয়ারি
আ’লীগ-বিএনপিতে চলছে প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া
ঐতিহ্যবাহী শেরপুর জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী পরিষদের নির্বাচন আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ২নং বার ভবনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচনকে ঘিরে এখনও আওয়ামী লীগ ও সমমনাদের সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ এবং বিএনপি ও সমমনাদের সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য ফোরামের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী চূড়ান্ত না হলেও চলছে বাছাই প্রক্রিয়া।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ও বারের সাবেক সভাপতি এডভোকেট নারায়ণ চন্দ্র হোড় জানান, ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। ওই তালিকা অনুযায়ী এবার ১৯৪ জন আইনজীবী ভোটার হয়েছেন। ১৭ ফেব্রুয়ারি তফসিল ঘোষণা করা হবে।
সম্পর্কিত খবর
এদিকে ওই নির্বাচনকে সামনে রেখে এখনও সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য ফোরামের প্রার্থী বাছাই শেষ না হলেও সমন্বয় পরিষদে সম্ভাব্য সভাপতি প্রার্থী হিসেবে বিদায়ী সভাপতি এডভোকেট রফিকুল ইসলাম আধার, সাবেক সভাপতি এডভোকেট চন্দন কুমার পাল পিপি ও এডভোকেট একেএম মোছাদ্দেক ফেরদৌসীর নাম শোনা যাচ্ছে।
বারের নির্বাচনের রেওয়াজ অনুযায়ী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে অংশ নিয়ে কোন প্রার্থী নির্বাচিত হলে বা পরাজিত হলে পরবর্তী নির্বাচনে স্বেচ্ছায় সরে না দাঁড়ালে তিনিই প্রার্থী হয়ে থাকেন। সে অনুযায়ী, এবার বিদায়ী সভাপতি এডভোকেট রফিকুল ইসলাম আধার তার মেয়াদকালে আইনজীবীদের ঐক্য প্রতিষ্ঠা, বার-বেঞ্চের মধ্যে সু-সম্পর্ক স্থাপনসহ কলুষমুক্ত বিচারঅঙ্গণ প্রতিষ্ঠা এবং আইনজীবীদের দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত জেলা জজ আদালত অঙ্গনে সিজেএম ভবন নির্মাণে কার্যকর ও সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করায় তিনিই প্রার্থী হচ্ছেন- সেটাই ভাবা হচ্ছিল।
কিন্তু দলীয় গ্রুপিংয়ের কারণে তার প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই ক্ষীণ হয়ে উঠছে। তবে তাতেও মাঠ ছাড়েননি তিনি। আলোচনা-গুঞ্জনে রয়েছেন এগিয়ে। আর তার বিকল্প হিসেবে সাবেক সভাপতি এডভোকেট একেএম মোছাদ্দেক ফেরদৌসী বেশ কিছুদিন থেকেই প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ এবং উপর মহলের আশির্বাদ আদায়ে তৎপর থাকলেও তার সময়কালে বিচার অঙ্গণের পরিস্থিতি ও বার-বেঞ্চের মধ্যকার দূরত্বসহ নানা কারণে হঠাৎ করেই চলে আসে সাবেক সভাপতি, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা দায়রা জজ আদালতের পিপি এডভোকেট চন্দন কুমার পালের নাম। যদিও জেলা পর্যায়ের শীর্ষ আইন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত থেকে বারের মতো একটি দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার হিসেবে দায়িত্ব পালন অনেকটা অসামঞ্জস্য ও দূরূহ তারপরও তার নাম চলে আসার পর অনেকটাই চুপসে যান অপর ২ সম্ভাব্য প্রার্থী রফিকুল ইসলাম আধার ও মোছাদ্দেক ফেরদৌসী। দলীয় অঙ্গণ ছাপিয়ে বিপরীত অঙ্গণেও গুঞ্জন উঠেছে এডভোকেট চন্দন কুমার পালকে সভাপতি পদে ছাড় দিতে। তবে তাকে বলয়ের সভাপতি প্রার্থী করা হলে অপর ২ সম্ভাব্য প্রার্থীকে নিবৃত করা যতোটা সহজ হবে, তিনি সরে দাঁড়ালে অপর ২ জনের কাউকেই নিবৃত করা একেবারেই দূরূহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়াতে পারে।
দলের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের দাবি, এডভোকেট চন্দন কুমার পালই শেষ পর্যন্ত সভাপতি প্রার্থী হচ্ছেন। এছাড়া সমন্বয় পরিষদে সাধারণ সম্পাদক পদে গত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী এডভোকেট তারিকুল ইসলাম ভাসানী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবুল মানসুর স্বপন, বিদায়ী সহ-সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ইসমাইল হোসেন, সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মমতাজ উদ্দিন মুন্না ও এডভোকেট ফারহানা পারভীন মুন্নীসহ সাবেক অডিটর এডভোকেট শাহীদ উল্লাহ শাহীর নাম শোনা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে বলয়ের সভাপতি প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার উপর নির্ভর করবে শক্তিশালী প্রার্থী এডভোকেট তারিকুল ইসলাম ভাসানীর প্রার্থী হওয়া-না হওয়া।
অন্যদিকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য ফোরাম থেকে সভাপতি পদে সাবেক সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি এডভোকেট তৌহিদুর রহমান ও গত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী এডভোকেট মিজানুর রহমানের নাম মৃদু শোনা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে জাতীয় নির্বাচন পরবর্তী দলের বিধ্বস্ত অবস্থায় শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত সিরাজুল ইসলাম ও তৌহিদুর রহমান নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে অনেকটা নিরুৎসাহ হলেও আগ্রহ রয়েছে মিজানুর রহমানের। তবে এ বলয়ে সভাপতি প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়াটা নির্ভর করবে অনেকটা সমন্বয় পরিষদের সভাপতি প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার উপর। সেক্ষেত্রে ওই ৩ জনের বাইরেও সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমকে মুরাদুজ্জামানও সভাপতি প্রার্থী হিসেবে আবির্ভূত হতে পারেন।
এছাড়া এ বলয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট খন্দকার মাহবুবুল আলম রকীব, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমকে মুরাদুজ্জামান, সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মুন্সী মোঃ মহসীন ও এডভোকেট আশরাফুল আলম লিচুর নাম শোনা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে বলয়ের সভাপতি প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার উপর নির্ভর করবে বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম রকীবের প্রার্থী হওয়া-না হওয়া। তবে মাঠে চাওর হয়েছে, এ বলয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে শক্তিশালী প্রার্থী এমকে মুরাদুজ্জামানই লড়তে পারেন।
/অ-ভি