শরীয়তপুরে গড়ে উঠছে কিশোর গ্যাং, বাড়ছে সংঘর্ষের মতো ঘটনা !
শরীয়তপুরের কিশোররা ভয়ঙ্কর অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। ইভটিজিং, মাদক ব্যবসাসহ বড় অপরাধ ঘটছে তাদের দ্বারা। সম্প্রতিক উঠতি বয়সী যুবকদের বখাটেপনা ছাপিয়ে এসব অপরাধের জন্ম নিচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠছে কিশোর গ্যাং। যে বয়সে এসব শিশু-কিশোদের লেখাপড়া আর খেলাধুলায় মনোনিবেশ হওয়ার কথা সেই বয়সে তারা ফৌজদারী অপরাধের আসামী হয়ে পালিয়েও বেড়াচ্ছে কেউ কেউ। এতে করে হুমকির মুখে পড়ছে তাদের আগামীর সম্ভাবনা।
এদিকে শরীয়তপুরের সম্প্রতি কিছু ঘটনা সূত্র ধরে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত বেশির ভাগ এলাকায় বখাটেদের সঙে স্থানীয় তরুণ-যুবকদের যোগাযোগে গড়ে উঠছে একাধিক গ্রুপ। আর এসব কিশোর যুবকদের সেল্টার দিচ্ছে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। এতে করে তাদের প্রভাব বিস্তারের মাত্রাও বেড়ে যায় কয়েকগুন। আক্রমনের শিকার হচ্ছে অনন্যরা। অনেক সময় দ্বিধাদ্বন্ধে উভয়পক্ষ নামছে সংঘর্ষে। একপর্যায়ে গিয়ে তা রূপ নিচ্ছে পারিবারিক পূর্বের শত্রুতায়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে এলাকার মাতুব্বরদের বিচারের আশ্বাসে দু-পক্ষ মিলছে মিমাংসায়। এতে করে অপরাধীর শাস্তির নামে ক্ষতিপূরণ বাবদ কিছু অর্থে ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে বড়বড় অপরাধ। এতে করেই দিনদিন বাড়ছে আহত, নিহতের ঘটনা। এর সাথে সাথে বাড়ছে পারিবারিক কলহের মামলার সংখ্য। বেশির ভাগ ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার সঠিক ভাবে পাচ্ছে না তাদের আইনি বিচার। ফলে ক্রমেই বেড়েই চলছে এর ভয়াবতা।
সম্পর্কিত খবর
তবে সামাজিক অবক্ষয় এর জন্য দায়ী হলেও আইনী দুর্বলতা, পরিবারের নজরদারী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতাই মূল কারণ হিসেবে মনে করেন স্থানীয় সচেতন মহল।
অন্যদিকে, নির্বাচনের পরপর বেশির ভাগ এলাকায় সংঘর্ষের লিপ্ত হয়েছে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের স্থানীয় পর্যায়ের নেতা কর্মীরা। সবচেয়ে বেশি সদর ও জাজিরা উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে ঘটনা ঘটেছে অর্ধশতাধিক। কিন্তু নির্বাচনে বিজয়ী হয়েই সংঘর্ষে না জড়াতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়ে ছিলেন স্থানীয় সাংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু। এরপরও নেতাকর্মীরা জড়িয়ে পড়ছে মারপিট, ভাংচুর, মামলা হামলাসহ নানান ঘটনায়।
শরীয়তপুর ১ আসনের সংসদ ইকবাল হোসেন অপু (এমপি) জানান, স্থানীয় পর্যায়ে কিছু ঘটনা ঘটেছে। তবে এরজন্য কিছু কিছু দলীয় লোকজন দায়ী। তবে সংঘর্ষে বা গ্রুপিংয়ের জন্য আওয়ামী লীগ কখনো কোন ব্যাক্তিকে সাপর্ট করবে না। অপরাধ করলেই সাথে সাথে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয় বলেও জানায় তিনি।
এবিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মেমেন (পিপিএম) জানান, অপরাধী যেই হোক তাকে ছাড় দিবে না পুলিশ। যারাই সংঘর্ষে জড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত জানুয়ারি মাসের মাসিক অপরাধ পরিসংখ্যানে সর্বমোট রুজুকৃত মামলা-১১৬ টি, গ্রেফতারকৃত আসামির সংখ্যা-৩০৯ জন, যানবাহনের মামলার সংখ্যা-৯৩৯ টি, যানবাহনের জরিমানা আদায়-৩ লক্ষ ২ হাজার ৮শ' টাকা এবং সর্বমোট ২ হাজার ৭২ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ২ কেজি ২৩০ গ্রাম গাজা, ১৮৫ ক্যান বিয়ার, ১০ বোতল বিদেশী মদ, ৬ বোতল দেশি মদ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পিবিডি/জিএম