• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

রূপগঞ্জে ব্যবসায়ী হত্যার জেরে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ, আহত ৮

প্রকাশ:  ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৯:৩৯
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এক মাটি ব্যবসায়ীকে হত্যার জের ধরে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিনত হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর সাথে পুলিশের ব্যাপক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ফাকাঁ গুলিবর্ষণ ও বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

এতে পুলিশ সাংবাদিকসহ অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী প্রায় ঘন্টাব্যাপী দুই পুলিশকে অবরুদ্ধ রেখে নাজেহাল করেন।

সম্পর্কিত খবর

    মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের দুয়ারা এলাকার এমএবি ২ ইটভাটার ভেতরের একটি ঘর থেকে পুলিশ ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।

    নিহত ব্যবসায়ীর বাবা শাহজাহান সিরাজ জানান, সোমবার সন্ধ্যায় ইটভাটায় দেওয়া মাটির বকেয়া টাকা তুলতে তার বড় ছেলে রফিকুল ইসলাম(৩৯)বাড়ি থেকে বের হন। রাতে বাসায় না ফেরায় পরিবারের সবাই বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার কোন সন্ধান মেলেনি। আজ মঙ্গলবার সকালে দাউদপুরের এমএবি-২ ইটভাটার ভিতরের একটি টিনশেড ঘরের ভেতর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

    তিনি জানান, তার ছেলে নিহত রফিকুল ইসলাম সব সময় একটি বড় তোয়ালে ব্যবহার করতো। তার গলায় সেই তোয়ালেটি প্যাচানো ছিলো। তার আভিযোগ, রূপগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হক, এসআই রহুল আমিন ও এএসআই রিয়াজসহ পুলিশের লোকজন তড়িঘরি করে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যেতে চায় এবং তিন আসামীকে কোন কিছু জিজ্ঞাসাবাদ না করেই একটি সিএনজিতে উঠিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে নিয়ে যায়। এতে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী পুলিশ কেন তড়িঘড়ি করছে তা জানতে চায় ও লাশ নিতে বাধা দেয়। এসময় পুলিশ নিহতের চাচাতো ভাই সেলিমকে লাঠিপেটা করে।

    কিন্তু পুলিশ কোন কথা না শুনে দ্রুত লাশ ও আসামীদের নিয়ে এলাকা ত্যাগ করে। এতে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে এএসআই রিয়াজ ও কনস্টেবল সফিকে ধরে স্থানীয় আওয়ামীলীগ অফিসের ভিতর অবরুদ্ধ করে রাখে।

    একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা অবরুদ্ধ দুই পুলিশ সদস্যকে শারিরিকভাবে নাজেহাল করে। এসময় তাদের ছাড়াতে গিয়ে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার জয়নাল আবেদীন জয়সহ বেশ কয়েজন আহত হন।

    অপরদিকে আত্মীয়স্বজনদের না দেখিয়ে লাশ নিয়ে যাবার জেরে উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়ি ধাওয়া করে বেলদী বাজারে লাশবাহি গাড়িটি আটক করে। এসময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে বেশ কয়েক রাউণ্ড ফাঁকাগুলি ছুড়ে ও লাঠিচার্জ করে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে লাশ নিয়ে চলে যায়। এসময় আহত হয় অন্তত ৪জন।

    পরে ভোলাবো ফাড়ির ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম উত্তেজিত লোকজনকে বুঝিয়ে শান্ত করে দুই পুলিশ সদস্যকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। এদিকে ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে ইটভাটার পাহারাদার স্থানীয় খাস কামালকাটি এলাকার সাহেব আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর, ইটভাটার শ্রমিক সর্দার সাতক্ষীরার তালা থানাধীন কলাপুডা এলাকার অমল দাসের ছেলে পিন্টু দাস ও একই জেলার পাটকেলঘাটা থানার আব্দুল হালিম সর্দারের ছেলে মোতালিবকে পুলিশ আটক করেছে।

    রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল হক দুই পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ, নাজেহাল করা ও ফাকাঁগুলি বর্ষনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্বজন হারানো লোকজন আবেগ প্রবন হয়ে পুলিশের উপর উত্তেজিত হয়ে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়। এসময় পুলিশকে ধাওয়া দেয়। তিনি বলেন, প্রাথমিক ময়নাতদন্তে ধারনা করা হচ্ছে রফিকুল ইসলামকে গলায় তার জাতীয় বস্তু পেচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। কারা কি কারণে রফিকুল ইসলামকে হত্যা করলো তা তদন্ত করে বের করা হবে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে।

    পিবিডি/আর-এইচ

    সারাদেশ

    অনুসন্ধান করুন
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close