• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

সোনাগাজীতে দুই শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার

প্রকাশ:  ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১১:৩৮
ফেনী প্রতিনিধি

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় এখন অস্থায়ী শহীদ মিনারই শ্রদ্ধা জানানোর একমাত্র ভরসা। একুশে ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে স্বীকৃত হলেও এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ভাষা শহীদদের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা জানাতে পারছে না। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দিনটি পালনের নির্দেশনা থাকলে ও হাতে গোনা কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কলাগাছ, কাপড় ও বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরী করে পালন করে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।

সোনাগাজী উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, সোনাগাজী উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নে ৪টি কলেজ ২৪টি মাধ্যমিক, ১০৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৮০টি কিন্ডারগার্টেন, ৩৩টি এম.পি.ও ও নন এমপিও মাদরাসা রয়েছে। এর মধ্যে পৌরসভা এলাকায় অবস্থিত এনায়েত উল্যাহ মহিলা কলেজে, আল হেলাল একাডেমী, সোনাগাজী বালিকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, সোনাগাজী সরকারী প্রাথমিক, মাদ্রাসা, সরকারী প্রাথমিক, বালিকা, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ উপজেলার প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই।

এছাড়াও উপজেলার এমপিও ও নন এমপিও ৩৩টি মাদরাসা ও ৮০টি কিন্ডারগার্টেন কোনটিতেই শহীদ মিনার নেই। সোনাগাজী সরকারি কলেজে শহীদ মিনার থাকলেও তা অনেকটা পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তবে প্রাথমিকে ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে বলে জানা গেছে। পৌর এলাকায় অবস্থিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীরা সকল দিবসেই উপজেলা স্মৃতিসৌধে ও শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পন করে প্রশাসনিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে থাকে।

সোনাগাজী উপজেলার উত্তর চর সাহাভিকারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মাঈন উদ্দিন জানান, বিদ্যালয়টি উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে দুরবর্তী এলাকায় অবস্থিত। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে ২০১৭ সালে এলাকার সবার উদ্যোগে টাকা সংগ্রহ করে বিদ্যালয় আঙ্গিনায় একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে।

কুঠির হাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু তৈয়ব জানান, বিদ্যালয়টিতে শহীদ মিনার না থাকায়। শহীদ মিনার নির্মানের জন্য সহযোগীতা চেয়ে উপজেলা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও প্রশাসনের কাছে একাধিকবার লিখিত আবেদন দিয়েও কোন লাভ হয়নি।

সোনাগাজী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হিটলারুজ্জামান বলেন, উপজেলায় ১০-১২টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার আছে। এছাড়াও সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ম্যানেজিং কমিটিসহ এলাকার বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপন করা সম্ভব হবে।

সোনাগাজী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নুরুল আমিন বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ে হাতে গোনা ৪-৫টিতে শহীদ মিনার নাই। বাকী সবগুলোতে শহীদ মিনার আছে। তবে সকল প্রতিষ্ঠান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে থাকে।

সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহেল পারভেজ বলেন, নতুন প্রজন্মেও কাছে মাতৃভাষার অর্জন, ইতিহাস, ঐতিহ্য সম্পর্কে জ্ঞানঅর্জন ও তাদের মধ্যে ভাষা দিবসের তাৎপর্য উপস্থাপন করার জন্য অবশ্যই শহীদ মিনার নির্মাণ করা জরুরী। নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান প্রধান ও পরিচালনা পর্ষদ অর্থ সঙ্কটের কথা বলে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নিতে চায়না। তারপরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকলের সহযোগিতা নিয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানদেরকে শহীদ মিনার স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এছাড়া স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মানে বরাদ্দ দিয়ে সহযোগীতা করার জন্য বলা হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও উপজেলা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে উপজেলায় অবস্থিত শতাধিক কাওমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ও জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা ও সরকারি দিবসগুলো পালনকল্পে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।


পিবিডি/এসএম

ফেনী

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close