নোয়াখালীতে কলা গাছের তৈরি শহীদ মিনারে শিক্ষার্থীদের শ্রদ্ধা
মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কলা গাছের তৈরি শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানালো নোয়াখালীর সেনবাগের ধর্মপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা।
ছাত্রছাত্রীরা জানিয়েছে, বই পড়ে মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস জানতে পেরে ভাষা শহীদদের প্রতি এভাবেই গভীর শ্রদ্ধা জানায় তারা। তাদের বিদ্যালয়ে স্থায়ী কোনো শহীদ মিনার না থাকায় কলা গাছের অস্থায়ী শহীদ মিনারে তার ফুল দিয়ে প্রতি বছর শ্রদ্ধা নিবেদন করে। তাদের অনেকে টিফিনের টাকা দিয়ে ফুল কিনে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানায়।
সম্পর্কিত খবর
সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, নোয়াখালীর সেনবাগের ধর্মপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা মাঠে মাটি দিয়ে উচু করে কলাগাছ পুতে শহীদ মিনার বানিয়ে তার উপর ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে।
এসময় স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ জানান, প্রায় ৫০ বছর পূর্বে নির্মিত এই বিদ্যালয়টি। কিন্তু এতো বছর পার হয়ে গেলেও বিদ্যালয়ে একটা শহীদ মিনার নির্মিত হয় নি। সরকারের কাছে দাবী জানাই শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে দ্রুত একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হোক।
বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাবেয়া আক্তার রুবি বলেন, ভাষা আন্দোলনের বিষয়ে বই পড়ে ইতিহাস জেনেছি। আমরা কয়েক বছর ধরে টিফিনের টাকা দিয়ে ফুল কিনে কলা গাছের শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আসছি।
এসময় ছাত্রছাত্রীরা তাদের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় জানায়, ভাষা শহীদদের সম্মানে আমরা সবাই মিলে কয়েকদিন সময় ব্যয় করে শহীদ মিনার বানিয়েছি। বৃহস্পতিবার সকালে সে শহীদ মিনারে সবাই ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছি। যদি আমাদের বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকতো তাহলে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে আমাদের এতো কস্ট করতে হতো না।
বিদ্যায়ের কয়েকজন ছাত্র জানান, বুধবার শহীদ মিনার বানিয়েছি। কেউ যেন কলা গাছের শহীদ মিনার ভেঙ্গে না ফেলে সেজন্য রাত জেগে সেটা আবার পরিচর্যা করেছি। প্রতি বছর ভাষা শহীদদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে আমাদের খুব ভালো লাগে। তাই একটু কষ্ট হলেও এ আয়োজন আমরা প্রতিবছর করে থাকি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জানান, আমরা ছাত্রছাত্রীদের পাঠদানের মাধ্যমে শিখিয়েছি ভাষার জন্য রফিক, শফিক, জব্বারসহ অনেকে শহীদ হয়েছেন।তাদের সম্মান করতে হবে। তাই ছাত্রছাত্রীরা শহীদদের সম্মানে সকালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। তবে বিদ্যালয় স্থায়ী শহীদ মিনার না থাকায় বাচ্চারা ঠিক মতো শ্রদ্ধা জানাতে পারে না। তারা শহীদদের ভালবেসে কস্ট করে কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে। আমরা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সরকারী ভাবে শহীদ মিনার নির্মাণের আবেদন করেও আশ্বাস ছাড়া কোনো সুরাহ পাই নি।
পিবিডি/এআইএস