সুনামগঞ্জে আ.লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত ১৩
উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সুনামগঞ্জে দোয়ারাবাজারে আওয়ামী লীগ মনোনীত ডা. আব্দুর রহিম ও দলটির বিদ্রোহী স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী দেওয়ান তানভির আশরাফী বাবুর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উপভয়পক্ষের ১৩ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার (৯ মার্চ) বেলা ১১টায় উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের টেংরাটিলাবাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সম্পর্কিত খবর
আহতরা হলেন, স্থানীয় গিরিশনগর গ্রামের মিজানুর রহমান, আবুল কালাম, আনোয়ার হোসেন, আব্দুল মতিন, সুজন, তামিম, সিরাজুল, রতন, টেংরাটিলা গ্রামের তৌহিদুল ইসলাম, আব্দুল মুকিত আকাশ। তাদেরকে দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
গুরুতর আহত ইউপি সদস্য আব্দুল মতিন ও তাজুল ইসলামকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী তানভীর আশরাফী বাবুর কর্মী কামরুল, নজরুল, রাজ্জাক ও করিম উপজেলা সদর থেকে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র নিয়ে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি যাচ্ছিলেন। টেংরাটিলাবাজারের আজবপুর মোড়ে পৌঁছালে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মামুন খন্দকারের ভাই ইমু ১৫-১৫ জনের যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের একটি গ্রুপ নিয়ে তাদের মোটরসাইকেলের পথরোধ করে সাথে কী আছে তল্লাসি করে দেখতে দেখতে চান। এতে চারজন প্রতিবাদ করলে ইউপি চেযারম্যান মামুনকে ফোন করে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসেন তার ভাই ইমু।
বাবু সমর্থকদের অভিযোগ, ইউপি চেয়ারম্যান মামুন ঘটনাস্থলে এসে স্বতন্ত্র প্রার্থী বাবুর চার সমর্থককে চড় থাপ্পড় দিতে শুরু করেন। তার কেন নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করলে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে বলে হুমকি দেন। চেয়ারম্যানের দেখাদিখি অন্যানরাও মারধর করেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওই চার সমর্থককে। তাদের চিৎকার শোনে এলাকার লোকজন এসে আক্রমণকারীদের হাত থেকে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যান।
এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিলে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিরা উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করে দেয়ার লক্ষ্যে শালিস বৈঠক ডাকেন।
শনিবার বেলা ১১টায় টেংরাটিলাবাজারে এ সালিশ বৈঠক বসে। বৈঠক শুরুর প্রাক্কালে কথা কাটাকাটি এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।ঘণ্টাব্যাপি সংঘর্ষে ১৩ জন আহত হন।
সংঘর্ষের পর এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ। স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান তানভির আশরাফী বাবু বলেন, আমার সুনিশ্চত বিজয় দেখে নৌকার সমর্থকরা পরিকল্পিতভাবে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটিয়েছেন।
বক্তব্য জানাতে সুরমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী প্রাথী ডা. রহিমের সমর্থক খন্দকার মামুনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুশীল রঞ্জন দাস বলেন, নৌকা এবং কাপ-পিরিচ প্রতীকের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পেয়েছি। তারা দুপক্ষই আওয়ামী লীগ। এক পক্ষ নৌকার সমর্থক, অন্যপক্ষ বিদ্রোহী প্রার্থীর।
তিনি বলেন, নির্বাচনী সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)।
পিবিডি/জিএম