• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

কোনভাবেই বন্ধ হচ্ছে না গফরগাঁওয়ে ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি

প্রকাশ:  ১৩ মার্চ ২০১৯, ১২:৩৩
গফরগাঁও প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায় বাংলাদেশ রেলওয়ের ‘ঢাকা-ময়মনসিংহ-তারাকান্দি-দেওয়ানগঞ্জ’ রুটের অন্যতম গফরগাঁও রেলস্টেশন।

আশেপাশের আর কোনো স্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেন না থামার কারণে এবং এই এলাকার সড়ক যোগাযোগ ভাল না থাকায় গফরগাঁওয়ের মানুষের পাশাপাশি ত্রিশাল, নান্দাইল, হোসেনপুর উপজেলা থেকেও অনেকে এই রেলস্টেশন দিয়ে ঢাকা ও বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করে থাকেন।

যে কারণে প্রতিদিন এখান থেকে কয়েক হাজার মানুষ পাড়ি জমান রাজধানী ঢাকা কিংবা নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে টিকিট কালোবাজারি চক্র।

সূত্র জানায়, গফরগাঁও রেলস্টেশনে সরকারি বা বেসরকারি সব ট্রেনের টিকিট কালোবাজারে পাওয়া যায়। বেসরকারি ট্রেনের ক্ষেত্রে টিকিট ও বিক্রি করছে কালোবাজারিরা। যারা প্রথমেই কালোবাজারিদের হাতে টিকিট দিয়ে সাধারণ যাত্রীদের আসনশূন্য টিকিট দেয়।

অপরদিকে সরকারি আন্তঃনগর ট্রেনের ক্ষেত্রে গফরগাঁও ও ময়মনসিংহ স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে কর্তব্যরত কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে কালোবাজারিদের হাতে টিকিট পৌঁছায়।

এক্ষেত্রে গফরগাঁও এলাকার একটি সিণ্ডিকেট কাজ করে। তারা তাদের সহযোগীদের দিয়ে কাউন্টারের সামনে ট্রেন ছাড়ার এক ঘণ্টা বা তার কিছু সময় আগে যাত্রীদের কাছে মাছ বাজারের মত হাঁক ডাক করে টিকিট বিক্রি করে।

কালোবাজারি বন্ধ করতে টিকেট কাউন্টারের আশেপাশে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয় এতে ও কোন কাজ হয় না।কিছুদিন পূর্বে চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের টিম সার্চ লাইন টিকেট কালোবাজারির চিত্র ধারন করতে গেলে কালোবাজারির হাতে আহত হন ক্যামেরাম্যান শাহীন রেজা।

সরেজমিনে দেখা যায়, গফরগাঁও থেকে ঢাকাগামী তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়া ১০৫ টাকা কিন্তু সাধারণ যাত্রীরা কা‌উন্টারে টিকিট না পেয়ে কালোবাজারিদের কাছ থেকে তিনগুণ বা কখনো কখনো চারগুণ বেশি দামে টিকিট কিনছেন।

আবার হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়া ৮০ টাকা কিন্তু ওই চক্রটি এই টিকিট ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি করছেন। একইভাবে তারা সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট দ্বিগুণ বা তিনগুণ দামে বিক্রি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এর ফলে যাত্রীরা নির্ধারিত টিকিট কাউন্টারে টিকিট না পেয়ে কালোবাজারিদের কাছ থেকে টিকিট কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। আবার অনেকে কাউন্টারে টিকিট না পেয়ে বিনাটিকিটে পাড়ি দিচ্ছেন নিজ গন্তব্যে। ফলে এ খাত থেকে সরকার প্রতিনিয়ত হারাচ্ছে রাজস্ব।

নান্দাইলের থেকে আসা ঢাকাগামী তিস্তা এক্সপ্রেসের যাত্রী রাসেল আহমেদ পূর্বপশ্চিম কে বলেন, ট্রেনে ঢাকায় যাতায়াত করলে সময় কম লাগায় ট্রেনেই সবসময় যাতায়াত করি। কিন্তু কাউন্টারে টিকিট পাওয়া না গেলেও কালোবাজারির কাছে সবসময় টিকিট পাওয়া যায়। দুই-তিনগুণ বেশি দামে তাদের কাছ থেকে টিকিট কিনতে হয়। আমরা এর থেকে পরিত্রাণ চাই।

ময়মনসিংহের মমিনুননেসা কলেজের ছাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে পূর্বপশ্চিম কে বলেন, কাউন্টার থেকে কখনই আসনযুক্ত টিকিট পাওয়া যায় না। প্রায় সব টিকিট কালোবাজারিদের হাতে চলে যায়। প্রশাসন সব জানলেও এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না,হয়ত নিবে।

এ বিষয়ে জানতে গফরগাঁও স্টেশন মাস্টার আশরাফ চৌধুরী বলেন, আমি নতুন আসছি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পিবিডি/আর-এইচ

ময়মনসিংহ,গফরগাঁও,ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close