• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

রেলওয়ে স্টেশনে পাগলীকে গণধর্ষণ

প্রকাশ:  ২২ মার্চ ২০১৯, ১৯:৪৫
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের শমশেরনগর চা বাগানের হাসপাতাল ল্যাবে পরপর দুই দিন যৌন হয়রানীর শিকার হয়েছেন বলে এক নারী চা শ্রমিক (২০) কমলগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। নারী চা শ্রমিকের অভিযোগে ল্যাব টেকনিশিয়ানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গত ১৫ ও ১৬ মার্চ পর পর দুই দিন এ নারী যৌন হয়রানির শিকার হলে গত বুধবার (২০ মার্চ) রাতে লিখিত অভিযোগ দিলে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ি অভিযুক্ত হাসপাতাল ল্যাব টেকনিশিয়ানকে আটক করলে শুক্রবার (২২ মার্চ) মামলায় গ্রেফতার দিখিয়ে আদালতে প্রেরণ করেছে।

এদিকে শমশেরনগর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে মাসকি বিকারগ্রস্থ এক নারী গণ ধর্ষণের শিকার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ২ জন নৈশ প্রহরীকে আটক করেছে। তারা হলেন-নৈশ প্রহরী তজমুল আলী (৪৫) ও নৈশ প্রহরী মনির মিয়া।

শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক অরুপ কুমার চৌধুরী বলেন, ঘটনাস্থল ও আশ পাশ এলাকার এ দুজন নৈশ প্রহরী। তাই জ্ঞিাসাবাদের জন্য তাদেরকেই আগে আটক করা হয়েছে।

অপরদিকে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে শমশেরনগর রেলওয়ে স্টেশনে একা পেয়ে এক মানসিক বিকারগ্রস্থ নারী গণ ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক অরুপ কুমার চৌধুরী নির্যাতিতা মানসিক বিকারগ্রস্থ নারীকে উদ্ধার করে পুলিশ ফাঁড়িতে এনে রেখেছেন।

শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ি ও চা বাগানের শ্রমিক সূত্রে জানা যায়, শমশেরনগর চা বাগানের শিব মন্দির এলাকার এক নারী শ্রমিক (২০) অসুস্থ্য হয়ে কানিহাটিস্থ ক্যামেলিয়ান ডানকান ফাউন্ডেশন হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সেখানে তার রক্ত পরীক্ষার নামে টেকনিশিয়ান ফারুক আহমদ গত ১৫ মার্চ তাকে একটি কক্ষে নিয়ে পরীক্ষার নামে যৌন হয়রানি করে। লজ্জায় নারী শ্রমিক এ ঘটনাটি কাউকে জানায়নি। পরদিন ১৬ মার্চ আবার সে যৌন হয়রানির শিকার হলে তার স্বামীকে (রবীন্দ্র বাউরীকে) অবহিত করে। এ নিয়ে গত ৩ দিন চা বাগানে চাপা ক্ষোভ সৃষ্টি হলে বুধবার (২০ মার্চ) সন্ধ্যার পর নির্যাতিতা নার চাপ শ্রমিক নিজে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়িতে এসে লিখিতভাবে অভিযোগ দেয়।

অভিযুক্ত ল্যাব টেকনিশিয়ানকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে পরদিন বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় চা বাগানের শ্রমিক সন্তানরা ক্যামেলিয়া ডানকান ফাউন্ডেশন হাসপাতালে অবস্থান নেয়। এ খবর পেয়ে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক অরুপ কুমার চৌধুরীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ক্যামেলিয়ান ডানকান ফাউন্ডেশন হাসপাতালে গিয়ে ভিক্ষোব্ধ শ্রমিক সন্তানদের আসামীকে গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়ে অবস্থান প্রত্যাহার করে বাড়ি ফেরার অনুরোধ জানালে তারা ঘরে ফিরে যায়।

এ দিন সন্ধ্যায় পুলিশ অভিযুক্ত ল্যাব টেকনিশিয়ান ফারুক আহমদকে আটক করা হয়।

ঘটনা সম্পর্কে ক্যামেলিয়া হাসপাতালের কেউ কথা না বললেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, একটি অভিযোগ পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করে নিয়েছে। সে অপরাধী হলে তার জন্য শাস্তি পাবে সে।

এদিকে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে শমশেরনগর রেলওয়ে স্টেশনে মানসিক বিকারগ্রস্থ এক নারী (৪৫)-কে একা পেয়ে লম্পটরা পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে। শুক্রবার সকালে এ ঘটনা শুনে পরিদর্শক অরুপ কুমার চৌধুরী শমশেরনগর স্টেশন প্লাট ফরম থেকে এই নির্যাতিতা নারীকে উদ্ধার করে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসনে। নির্যাতিতা নারীর বাড়ি মাধবপুর ইউনিয়নের ছয়সিড়ি গ্রামে। সে স্বামী পরিত্যক্তা বলেও পুলিশ সূত্র জানায়।

শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক অরুপ কুমার চৌধুরী বলেন-‘প্রথম ঘটনায় যৌন হয়রানির শিকার নারী শ্রমিকের লিখিত অভিযোটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হিসেবে গ্রহন করা হলে আটক অভিযুক্তকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। আর শুক্রবার গণ ধর্ষনের শিকার নারীকে উদ্ধারের পর থেকে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে আসলেই সে মানসিকভাবে বিকারগ্রস্থ বলে সঠিকভাবে কোন তথ্য দিতে পারছে না। তবে সে যে গণ ধর্ষণের শিকার হয়েছে তা বোঝা যাচ্ছে। তার বাড়ির লোকজনকে খবর দেওয়া হলেও তার সাথে দেখা করতে বা তার পাশে দাঁড়াতে কেউ এগিয়ে আসছে না।’

পিবিডি/আর-এইচ

মৌলভীবাজার

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close