‘মৃত’ ঘোষিত শিশুটিই ‘জীবিত’ শিশু কি না সন্দেহ ঢামেকের
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ‘মৃত’ ঘোষিত শারমিনের (২০) নবজাতকটিই গোরস্থানে ‘জীবিত’ হয়ে ওঠা শিশু কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এ কে এম নাসির উদ্দিন। বিষয়টি তদন্তের জন্য ৪ সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
সোমবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
সম্পর্কিত খবর
তিনি বলেন, ২৭ সপ্তাহের প্রেগনেন্সি নিয়ে শারমিন আমাদের এখানে ভর্তি হন। এদিন সকালে একটি মৃত সন্তান প্রসব করেন তিনি। এখনও তার ব্লিডিং হচ্ছে। বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি। মৃত বাচ্চা হওয়ার বিষয়টি তার স্বজনদের জানানো হয় এবং মৃত বাচ্চাটিই হ্যান্ডওভার করা হয়।
তিনি বলেন, মৃত সন্তান প্রসব নিয়ে শিশুটির মা সন্দেহ প্রকাশ করেন। তাই এই ঘটনায় ঢামেকের উপ-পরিচালক বিদ্যুৎ কান্তি লালকে প্রধান করে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এর আগে, নবজাতকের মামা শরিফুল ইসলাম জানান, সকালে ঢামেকে শিশুটির জন্ম দেন তার বোন শারমিন আক্তার (২০)। তখন চিকিৎসকরা জানান, শিশুটি মৃত। এরপর তার মরদেহ দাফনের জন্য আজিমপুর গোরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু গোরস্থানে নেওয়া হলে গোসল দেওয়ার সময় সে নড়েচড়ে ওঠে এবং শ্বাস নিতে থাকে।
শিশুটিকে গোরস্থান থেকে তাৎক্ষণিক আজিমপুর ম্যাটার্নিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে নেওয়া হয় শ্যামলীর ঢাকা শিশু হাসপাতালে। এখন ওই হাসপাতালের কার্ডিয়াক আইসিইউতে (হৃদরোগের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে) লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে তাকে।
এদিকে, রাজধানীর ঢাকা শিশু হাসপাতালের কার্ডিয়াক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন সেই ‘মৃত’ নবজাতক শিশুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। বর্তমানে ভেন্টিলেটর মেশিনে কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে।
সোমবার রাত সাড়ে ৭টায় হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবদুল আজিজ জানান, নবজাতককে বাঁচিয়ে রাখতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তবে শিশু প্রিম্যাচিওর হওয়ায় নিজে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারছে না। ফলে ভেন্টিলেটর মেশিনের সাহায্যে তার শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে। ভর্তির পর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, শারমিনের স্বামীর নাম মিনহাজ উদ্দিন। তাদের বাড়ি ঢাকার ধামরাইয়ের শ্রীরামপুরে। গত শনিবার (২১ এপ্রিল) শারমিনকে ঢামেকের ১০৫ নং ওয়ার্ডের ৪ নং বেডে ভর্তি করা হয়।