• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

‘আমি প্রধানমন্ত্রীর ভিশন বাস্তবায়ন করতে চাই’

প্রকাশ:  ২১ জুলাই ২০১৮, ২০:৪২ | আপডেট : ২২ জুলাই ২০১৮, ১৫:৪৮
এম. এ. কাইয়ুম, মৌলভীবাজার

আ.স.ম. কামরুল ইসলাম। বর্তমান কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান। মৌলভীবাজার-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী তিনি। এর আগে ছিলেন এ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান। বাবার শেখানো রাজনীতিতে রয়েছে বর্নাঢ্য জীবন। কামরুল ইসলামের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল জব্বার ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহযোগী ও মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক।

আব্দুল জব্বার ১৯৬৮ সাল থেকে আজীবন কুলাউড়া উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গণমানুষের ভোটে কুলাউড়া থেকে ১৯৮৯ সালে এমপি, ১৯৯০ সালে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। প্রয়াত এই নেতার পুত্র আসম কামরুল ইসলাম আসন্ন একাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে কাজ করছেন তৃনমূলের মানুষের সঙ্গী হয়ে।

বাবার অনুপ্রেরণায় ১৯৯০ সাল থেকে রাজনীতির অঙ্গনে পা রাখেন আসম কামরুল। রাজনীতি অঙ্গনে পা রাখার ২ বছরের মাথায় অর্থাৎ ১৯৯২ সালে ২৮ আগষ্ট আকস্মিক তিনি বাবাকে হারান। বাবাকে হারিয়ে পরিবারিক জীবনে একটু বিচলিত হলেও বাবার শেখানো হাতে খড়ির রাজনীতিতে বিমুখ হননি তিনি। বলিষ্ঠ নেতৃত্বের ফলে ১৯৯৩ সালে কুলাউড়া ডিগ্রি কলেজ (বর্তমান কুলাউড়া সরকারি কলেজ) ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পান।

পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালে কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। দু’বছর পর ১৯৯৭ সালে উপজেলা ছাত্রলীগের প্রার্থী হলে সহ-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আবার ২০০৩ সালে কুলাউড়া উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন পর থেকে একাধারে উপজেলা আ.লীগের সম্পাদক মন্ডলীতে স্থান পান তিনি।

আ.স.ম কামরুল ইসলাম ২০০৯ সালে বিপুল ভোটে কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন। গেল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চাইলেও পাননি তিনি। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনে দলীয় মনোয়ন প্রত্যাশী হিসেবে মাঠে-ঘাটে খেটে খাওয়া মানুষের সুখ দুঃখের সাথী হয়েছেন।

দেশের অন্যান্য আসনের মতো মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) নির্বাচনী এলাকায় রাজনৈতিক সমীকরণ মেলানো হিমালয়ের পর্বত জয় করার সমানুপাত বলা যায়। জেলার মোট চারটি আসনের বিপরীতে এবারের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ বলা যায় এ আসনটি। কেননা বিগত ১৮ বছর ধরে নানা কারণে জাতীয় রাজনীতিতে উপেক্ষিত মৌলভীবাজার-২ আসূেনর নির্বাচনী এলাকার মানুষের বেশ আগ্রহ দেখা গেছে আগামী সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে।

এই আসনে স্বাধীনতা পরবর্তীতে ধারাবাহিকভাবে আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হলেও ৮০’র দশক থেকে দলীয় প্রার্থীরা জয়ের মুখ দেখছেন না বললেই চলে। প্রায় তিন দশকে শুধু মাত্র ১৯৭৯ নির্বাচনে আব্দুল জব্বার ও ১৯৯৬ সালে সাবেক ডাকসু ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ নৌকা প্রতীকে বিজয়ী হন। বিগত ১৮ বছরে টানা তিন দফা জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীরা ধরাশয়ী হয়েছেন।

তাই তৃনমূলের মানুষের আগ্রহের পাশাপাশি এবার মৌলভীবাজার-২ আসনের নির্বাচনী নতুন মেরুকরন লক্ষ্য করা গেছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের বড় দুটি দল আ’লীগ ও বিএনপি প্রার্থী বাছাইয়ে বিন্দু পরিমান ক্রুটি করলে অনায়াসে হাত ছাড়া হবে আসন।

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ.লীগের একজন প্রার্থী হিসেবে বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করে পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজকে একটি সাক্ষাৎকার দেন।

পূর্বপশ্চিম: আপনি তো বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান, তবে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী কেন ?

আসম কামরুল ইসলাম: এ উপজেলার মানুষ আমার বাবাকে ভোট দিয়ে বারবার নির্বাচিত করেছেন। সাধারণ মানুষের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। তাই আমার পিতার মৃত্যুর পরই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি মানুষের কল্যাণে কাজ করব, মানুষের সেবা করব। আর উপজেলা নির্বাচনে মানুষ অনেক আশা প্রত্যাশা নিয়ে আমাকে ভাইস চেয়ারম্যান এবং পরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছে। একজন জাতীয় সংসদ সদস্যই পারেন মানুষের আশার বাস্তব প্রতিফলন সফলভাবে মানুষের মাঝে পৌঁছে দিতে।

দুইবার উপজেলা নির্বাচনের ১০ বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে চাই, দল থেকে মনোনয়ন দিলে কুলাউড়া উপজেলার সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূর্ণ হবে, পাশাপাশি আমার বাবার অনেক অসমাপ্ত কাজ সফলভাবে সমাপ্ত করতে পারব। উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে ভিশন, তা বাস্তবায়ন করে কুলাউড়া উপজেলাকে একটি আধুনিক উপজেলায় রূপ দিতে চাই।

আপনারা জানেন যে সিলেট বিভাগের মধ্যে একমাত্র কুলাউড়া উপজেলা নিয়ে একটি নির্বাচনী আসন। এখানে আমার বাবা যখন সংসদ সদস্য নির্বাচন করেছেন, তিন বার দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন এবং উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন বিধায় আমার বাবার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে আমি নির্বাচনে অংশ নিব।

পূর্বপশ্চিম: ১৯৯১ সালে আপনার বাবাকে এ আসনটি ছেড়ে দিতে হয়েছে, সে হিসেবে আপনার প্রতি কোন গ্রিন সিগনাল আছে কি ?

আসম কামরুল ইসলাম: দলের জন্য যারা নিস্বার্থভাবে কাজ করেছেন তাদের পরিবারের সদস্যদের মূল্যায়ন করছেন আমাদের সভানেত্রী। তাছাড়া আমরা কে কি করছি, তা দলীয় হাইকমান্ডে তথ্য রয়েছে। নেত্রী সব খবর রাখছেন। তাই সেখানে গ্রিন সিগনালের প্রয়োজন নেই। যারা মানুষের কল্যাণে কাজ করছেন তাদের মূল্যায়ন অবশ্যই রয়েছে।

আমি মনে করি আমার বাবা দীর্ঘ দিন এ আসনের মানুষের জন্য কাজ করেছেন, তাই আমিও বড় পরিসরে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ পাব। আর ১৯৯১ সালে আমার বাবাকে এ আসনটি ছেড়ে দিতে হয়েছে, কেন্দ্রীয় একজন নেতার কারণে। নৌকা প্রতীক পেয়েও কেন্দ্রীয় নেতার কারণে নেত্রীর নির্দেশে মাথা পেতে নিয়েছেন। আমি মনে করি সেই বিবেচনায় আমার মমতাময়ী নেত্রী এ আসনে আমায় কাজের সুযোগ করে দিবেন।

পূর্বপশ্চিম: ভাইস চেয়ারম্যান থেকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, এখন এমপি নির্বাচন করতে চান, নিজেকে কিভাবে মূল্যায়ন করছেন ?

আসম কামরুল ইসলাম: আমি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। আমার বাবা নেহাত একজন আমজনতার সেবক ছিলেন। আমিও চেষ্টা করছি বাবার নীতি আদর্শ লালন করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে।

পূর্বপশ্চিম: আপনার বাবার অনেক অবদান রয়েছে আ’লীগে, আপনার অবস্থান জানতে চাই ?

আসম কামরুল ইসলাম: আমার বাবা যেভাবে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ লালন করে রাজনীতি করেছেন আমিও একটি ধারায় চেষ্টা করছি রাজনীতি করতে। আমার বাবা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে মহান মুক্তিযোদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন এর আগে ৬ দফায় ঘরে ঘরে গিয়েছিলেন। আমার বাবা যেরকম বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে গেছেন আমিও জননেত্রী শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়নে আমার অবস্থান থেকে কাজ করছি।

পূর্বপশ্চিম: দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে অপেক্ষিত এ আসন, তবুও হাফডজন প্রার্থী, এটা কিভাবে দেখেছেন ?

আসম কামরুল ইসলাম: বৃহত্তর সিলেট বিভাগের মধ্যে আমাদের সংসদীয় আসন মৌলভীবাজার-২ নির্বাচনী এলাকা একটি রাজনৈতিক সচেতন, সমৃদ্ধ এবং অতীত ঐতিহ্য রয়েছে। তবে দুর্ভাগ্য কুলাউড়াবাসীর। এলাকার সাধারণ মানুষ যাতেরকে বারবার ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছিল। তারা দলের মূল ধারার বিপরীতে অবস্থান নিয়েছেন।

এখানে হেভিওয়েট নেতারা আছেন বিভিন্ন দলের। জাতীয় রাজনীতিতে যাদের বৃত্তি শক্তিশালী অবস্থান ছিল। তারা এখন ছন্নছাড়া। এতেই ছিটকে পড়েছে কুলাউড়ার উন্নয়ন আর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে আমার কুলাউড়ার। উনাদের ডিগবাজীর কারণে কুলাউড়ার মানুষ উন্নয়ন থেকে সর্বোচ্চ ক্ষতিগ্রস্ত ও বঞ্চিত হয়েছেন।

পূর্বপশ্চিম: এবার কি এ আসনে নৌকা আসবে, আসলে বিজয় কতটা নিশ্চিত বলে মনে করেন ?

আসম কামরুল ইসলাম: প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার ভোট দিয়ে ২০০৮ সালে এ আসেন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে মানুষ নির্বাচিত করেছিল। আমাদের আ’লীগের নেতাকর্মীরা সবাই মিলে ভোট দিয়েছে। কিন্তু যাকে নির্বাচিত করল, আ’লীগের শেষের দিকে জাতীয় রাজনৈতিক সষ্কটময় মুর্হুতে উনি আমাদের বিরুদ্ধে চলে গেলেন। উনি আ.লীগের সমর্থনে মহাজোটের প্রার্থী হয়ে জয়লাভ করেও অবস্থান নিলেন চারদলীয় জোটের পক্ষে যা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত ছিল। আমি মনে করি আমাদের যারা ভোট দিয়েছিল মহাজোটে তাদের সঙ্গে বড় ধরনের বেইমানি করেছেন সাথে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন।

পরবর্তীতে লাঙ্গল নিয়ে যে এসেছিল তাকে কুলাউড়ার মানুষ প্রত্যাখান করেছেন। এ ক্ষোভ নিয়ে এখন আর আ’লীগের নেতাকর্মীরা ওইসব নেতাদের বিশ্বাস করবে না এবং তৃনমূল থেকে যে কাউকে নৌকা প্রতীক দিয়ে পাঠানো হয়, দীর্ঘ দিন পর হলেও দলীয় কর্মীদের বিশ্বাস এবং আস্থার মিলনে দলীয় প্রার্থী জয়লাভ সম্ভব।

বঙ্গবন্ধু যে নৌকা আমার বাবাকে দিয়েছিলেন ৯১ সালে পরে তা ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সে নৌকা যোদি এখন জননেত্রী আমাকে দেন, আমি মনে করি তৃনমূলের সাধারণ মানুষ এবং দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি প্রাণ ফিরে আসবে। আমার বিশ্বাস একটি গতি আসবে কুলাউড়ায়। এ গতিতেই নৌকার জয়লাভ শতভাগ নিশ্চিত।

পূর্বপশ্চিম: আ’লীগের অনেকেই প্রার্থী হয়ে এ আসনে জামানত হারিয়েছেন। তবে কি বলবেন যে কাউকে দিলেই জয়লাভ সম্ভব ?

আসম কামরুল ইসলাম: এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাইনা তবে আমার দাবী থাকবে তৃনমূলের যাচাই-বাছাই করে এ আসনে দলীয় প্রার্থী দেওয়া হোক। আমার মমতাময় নেত্রী এ আসন আমার মধ্যে দিয়েই নিজের করে নিবেন এটাই আমার দৃঢ় প্রত্যয়।

পূর্বপশ্চিম: নৌকার কান্ডারী অনেকেই হতে চান, মনোনয়ন লড়াইয়ে কতটা ঠিকতে পারবেন ?

আসম কামরুল ইসলাম: আশাকরী দলীয় হাইকমান্ড আমার বেকগ্রাউন্ড দেখে মূল্যায়ন করবে। আমি মনে করি বিগত নির্বাচনে নেত্রী আ’লীগ পরিবারের উপযুক্তদের মূল্যায়ন করেছেন। আমার বাবা যেহেতু সাধারণ মানুষের সাথে নিয়ে কুলাউড়ায় দীর্ঘদিন আ.লীগের রাজনীতি করেছেন। আ’লীগের দুর্যোগময় সময়, ১৯৭৯ সালে সামরিক শাসনের সময় দেশে মাত্র ৩৯ জন এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন, তন্মধ্যে আমার বাবা নৌকা প্রতীকে জয়লাভ করেছিলেন।

৮৬ সালে মনোনয়ন পেয়েছেন, ৯১ সালেও পেয়েছেন। এর আগে উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। রিলিপ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ছিলেন। যেহেতু আমার বাবাকে বারবার নির্বাচিত করেছেন কুলাউড়াবাসী, আমাকেও ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। এতে আমি চেষ্টা করেছি মানুষের আশা প্রত্যাশা পূর্ন করতে। মানুষের কল্যানে নিজেকে উৎসর্গ করতে।

পূর্বপশ্চিম: চা বাগান অধ্যুষিত চারটি ইউনিয়ন মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, এতে কি আ’লীগ বেগ পেতে হবে ?

আসম কামরুল ইসলাম: আমি উপজেলা পর্যায়ে দুইটি নির্বাচন করেছি। সেখানে দলীয় ভোটের বাইরেও আমি ভোট পেয়েছি যা সাধারণ মানুষের। দলের বাইরেও এসব সাধারণ মানুষের নিজেদের পছন্দ থাকে । সেসব ভোট আমি টানতে পেরেছি। এছাড়া এ উপজেলা (কুলাউড়া) নিয়ে একটি আসন, এখানে আমাদের চা শ্রমীকদের একটি রিজার্ভ ভোট আ’লীগের রয়েছে। এসব ভোটের বাইরের আমার ভোট রয়েছে। গেল ১০ বছরে গরীব দুখী, অসহায় মানুষের পাশে ছিলাম, সেহেতু দল মতের উর্ধ্বে উঠে সাধারণ মানুষ আমাকে ভোট দিবেন।

পূর্বপশ্চিম: এতে কি আ’লীগের নির্বাচনী মাঠে প্রভাব পড়বে ?

আসম কামরুল ইসলাম: কমলগঞ্জের চার ইউনিয়ন মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে বাদ দেওয়াতে আমার ক্ষেত্রে কোন প্রভাব পড়বে না।

পূর্বপশ্চিম: কুলাউড়া উপজেলায় আ’লীগের একটি অংশ মূলধারার বিচ্ছিন্ন, এটা কি আগামী নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে ?

আসম কামরুল ইসলাম: মাননীয় সংসদ সদস্য, আমি, আমরা যারা আ’লীগ করি এটাই মূল ধারা। আমাদের সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক কারাও মধ্যে কোন গ্রুপিং নেই। তবে প্রতিযোগীতা আছে প্রতিহিংসা নেই। আমাদের মধ্যে থেকে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে আমরা সবাই তার পক্ষে কাজ করব। আর একটি গ্রুপ গঠনতন্ত্রের বাইরে অরাজনৈতিক কর্মকান্ড করে বহিস্কৃত হয়ে বিএনপি-জামায়াতের ভূমিকা পালন করছে এবং বিএনপি-জামায়াতের চিহ্নিত নেতা-কর্মীদের মদদ দিয়ে (পারপাস সার্ভ) করছে। এদের দিয়ে নির্বাচনে প্রভাব পড়ার প্রশ্নই আসে না।

দলের বিদ্রোহ করে বহিষ্কৃত হয়ে, বার বার পরাজিত হয়ে গঠনতন্ত্রের বাইরে গুটিকয়েক নেতা দলীয় ব্যানারে কাজ করছে। তাদের সাথে ইউনিয়নের যারা আছে তারা অধিকাংশ বিএনপি-জামায়তের লোক। তাই বিরোধী দলের ভূমিকায় (বিএনপি জামায়াত যা করত) এখন তারা সেটা করছে।

পূর্বপশ্চিম: তাহলে বলা যায় কুলাউড়ায় ‘বিএনপি-জামায়াত’র ভূমিকায় বিচ্ছিন্ন আ’লীগের গ্রুপ ?

আসম কামরুল ইসলাম: নিসন্দেহ বলা যায়। শেখ হাসিনার বাইরে কোন আ’লীগ নেই। আর আমরা শেখ হাসিনার ধারায় আছি। এর বাইরে আ’লীগ হতেই পারে না। বিএনপি-জামায়াতের মদদদাতা আ’লীগ হয় কিভাবে ?

পূর্বপশ্চিম: কুলাউড়ায় হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছে বিএনপির, এতে জাতীয় রাজনীতির সাথে কুলাউড়ার আ’লীগের প্রেক্ষাপট কেমন ?

আসম কামরুল ইসলাম: যেসব হেভিওয়েটের কথা বলছেন, তাদের সাথে জনগনের কোন সম্পৃক্ততা নেই। দীর্ঘ দিনের দুরত্বের ফলে তাদের জনপ্রিয়তা ভাটা পড়েছে । ২০১৬, ২০১৭ ও ১৮ সালে বন্যায় উনাদের কাউকে বানবাসি মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখিনিূ। দিনরাত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে ছিলাম। জনগনের দুঃসময়ে জনগনের পাশে দেখি নাই।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক। তাঁর হাতে ধরে বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, আজকে উন্নয়নের রুল মডেল হিসেবে বাংলাদেশ বিশে^র দরবারে স্থান করে নিয়েছে। উন্নত বিশ^ আজকে বাংলাদেশের প্রশংসা করছে। ইতিমধ্যে মধ্যে আয়ের দেশে হিসেবে মাথা উচু করে দাঁড়িয়েছে। আমি মনে করি সরকারের এসব উন্নয়নের বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থীরা সুবিধা করতে পারবেন না।

পূর্বপশ্চিম: তৃনমূলে একটা জনশ্রুতি রয়েছে, দলীয় করনে ‘জনগন বিছিন্ন কুলাউড়া আ.লীগ এটা কেন হচ্ছে ?

আসম কামরুল ইসলাম: সাধারণ মানুষের সাথে আমাদের কোন দুরুত্ব নেই। বিশেষ করে গরিব অসহায় মানুষের জন্য আমার দরজা সব সময় খোলা। অসহায় মানুষগুলো আমার অফিস এবং বাসায় যে কোন সময় সেবা নিচ্ছে। আর এরকম যদি কিছু থাকে দলীয় নেতা কর্মীর কারণে আমাদের কাছে মানুষ আসতে পারছে না। আমাদের থেকে সাধারণ মানুষদের দুরত্ব রাখতে চায় সেটা বিবেচ্য বিষয় তবে দলীয়করণ নয়।

পূর্বপশ্চিম: কুলাউড়া সরকারী উন্নয়নে কতটা পিছিয়ে রয়েছে বলে মনে করেন ?

আসম কামরুল ইসলাম: সরকারি বরাদ্দ প্রতিটি সংসদীয় আসনে সমানভাবেই বণ্টন হয়। তবে আমাদের সঠিক নেতৃত্ব আর সুষ্ট পরিকল্পনা যদি উন্নয়নে ব্যঘাত হয় সেটা ভিন্ন বিষয়। আমি চাইব এসব বিষয় মাথায় রেখে একটি মডেল কুলাউড়া গঠন করতে।

পূর্বপশ্চিম: সরকারের প্রতিটা উন্নয়নের ছোঁয়া কি আমাদের উপজেলায় লেগেছে ?

আসম কামরুল ইসলাম: বরাদ্দ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন আমাদের সকলের উপর অর্পিত দায়িত্ব। জনপ্রতিনিধি আছেন, সরকারি কর্মকর্তা আছেন। প্রতিটি উন্নয়ন আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি।

পূর্বপশ্চিম: অনেক সময় গনমাধ্যমে এসছে আপনাদের নেতাকর্মীদের অনিয়মের চিত্র, এ বিষয়ে কি বলবেন ?

আসম কামরুল ইসলাম: আমরা টানা ১০ বছর ধরে ক্ষমতায় আছি। এতে যে কেউ অভিযোগ তুলতে পারে। আমি মনে করি এগুলো সঠিক নয়। সরকারের ৩শত জন এমপি আছেন সবাইত সমানভাবে সফল কাজ করতে পারবেন না। সফলতার তালিকায় ১০০/১৫০ জন থাকেন।

পূর্বপশ্চিম: কুলাউড়ার বর্তমান এমপির কার্যক্রম কতটা সন্তুজনক ?

আসম কামরুল ইসলাম: এসব বিচার বিবেচনার বিষয় জনগনের। তবে আমাদের জাতীয় সংসদ সদস্য প্রবীণ একজন নেতা। আমার বাবা (মরহুম আব্দুল জব্বার) এবং তিনি (আব্দুল মতিন) এক সাথে রাজনীতি করেছেন দীর্ঘ দিন। একে অপরের সহযোদ্ধা। উনার আন্তরিকতা প্রচেষ্টার কোন অভাব নেই। তারপরেও এই বয়সে মানুষদের যেভাবে সময় দিচ্ছেন সেটা সত্যিই প্রশংসার বিষয়। আর কার্যক্রম বাস্তবায়নে দাত্বিপ্রাপ্ত অনেক জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা এং আমি আছি। সবাই মিলে সেটা করব।

পূর্বপশ্চিম: সুষ্ঠ নির্বাচন হলে বিএনপির সাথে মোকাবেলা করতে কুলাউড়ার আ’লীগ কি প্রস্তুত?

আসম কামরুল ইসলাম: যে কোন সময়ের চেয়ে কুলাউড়া আ.লীগ সঙ্ঘবদ্ধ ও শক্তিশালী। আর যারা দলকে ডিস্টাব করছে, সেটা বঙ্গবন্ধুর ১৯৭৫ পর থেকে বারবার আ.লীগকে দ্বিখন্ডিত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। আর কুলাউড়ায় একটি গ্রুপ রয়েছে, তাদের সাথে মূলধারার আ’লীগের কেউ নেই। বিএনপি জামায়াতের লোকজন দিয়ে আ’লীগের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। আমি মনে এদের প্রতিহত এবং দলীয় কার্যক্রমে যে কোন সময়ের চেয়ে কুলাউড়া উপজেলা আ.লীগ ঐক্যবদ্ধ।

পূর্বপশ্চিম: কুলাউড়াবাসীর কাছে কোন মেসেজ ?

আসম কামরুল ইসলাম: কুলাউড়া উপজেলাবাসীর কাছে আমি কৃতজ্ঞ। যদিও আমি রাজনীতি করি তবুও সাধারণ মানুষ দলমত নির্বিশেষে আমায় ভোট দিয়ে একাধিকবার নির্বাচিত করেছেন। ভাইস চেয়ারম্যন থেকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হয়েছি। ন্যায় এবং ইনসাফের ভিত্তিতে জনগনের দায়িত্ব পাওয়ার পর যে শপথ নিয়েছিলাম তার ব্যতয় ঘটেনি আমার জানা মতে।

আমার বাবাকে বারবার নির্বাচিত করেছেন কুলাউড়াবাসী, আমাকেও নির্বাচিত করে একই ধারায় কৃতজ্ঞতার বন্ধনে আবদ্ধ করেছেন। তাই চির ঋণী। আগামী দিনে বড় পরিবেশে যদি কোন কাজ করার সুযোগ পাই, তাহলে অবশ্যই আমার প্রাণপ্রিয় জনগনের সহযোগীতা লাগবে।

ওএফ

কুলাউড়া,মৌলভীবাজার,আওয়ামীলীগ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close