• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

লিখতে গিয়ে চোখে পানি আসে

প্রকাশ:  ০৯ মার্চ ২০১৮, ২২:১৭ | আপডেট : ০৯ মার্চ ২০১৮, ২২:৩০
জয়ন্ত রিপন

আদর্শিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ রাজনীতিবিদ কখনো পথভ্রষ্ট হতে পারেন না।এখনও প্রকৃত রাজনীতিবিদ হারিয়ে যায়নি।এখনও মানুষের কল্যানে কাজ করে যাওয়া প্রকৃত রাজনীতিবিদ রয়েছেন।এর প্রকৃষ্ট উদাহরন ত্রিপুরার সদ্য সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার।

ইস্তফা দেওয়ার পর বাড়ি ফিরেই জিনিসপত্র গুছাতে শুরু করেছেন ত্রিপুরার সদ্য সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর আসনটিই নয়, মাথার ওপরে ছাদটুকুও হারিয়ে ফেলেছেন তিনি! তার মায়ের নামে বাড়ি ছিল, কিন্তু অনেক আগেই সেসব পার্টির কাজে দান করে দিয়েছেন তিনি। স্ত্রী পাঞ্চালী সরকারের বাপের বাড়ির সূত্রে জমি আছে। তবে সেখানে বাড়ি তৈরির কাজ শেষ করা হয়নি।

সম্পর্কিত খবর

    তিনি আগেই জানিয়ে দিয়েছেন যে, ধনপুর আসনের জনপ্রতিনিধি হিসেবে বিধায়ক হয়ে বাসা চাইবেন না।তাহলে যাবেন কোথায়? সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দাশ বলছিলেন, ‘যত দিন না কোনো ব্যবস্থা হচ্ছে, পার্টি অফিসের ওপরের ঘর আছে। সেখানেই থাকবেন। ’ তিনি আরও বলেন, ‘মানিক বাবুর তো তেমন কিছুই নেই। আছে শুধু কিছু বই আর সিডি।'

    শুধু বাড়ি নয়, নিজেদের কোনো গাড়িও নেই মুখ্যমন্ত্রীর । আপাতত পার্টি অফিসের একটা ছোট্ট গেস্ট রুমই হয়েছে ঠিকানা। দলের সভাপতি হিসেবে পার্টি থেকে ব্যয় নির্বাহের জন্য দেয়া হয় কিছু টাকা। সেটা দিয়েই চলবে তার প্রতি মাসের খরচ- এমনটাই জানালেন মানিক সরকারের স্ত্রী পাঞ্চালি।

    টানা ২০ বছর ধরে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন মানিক সরকার। ভারতের সবচেয়ে গরিব মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। গত ৩ মার্চ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিজেপির কাছে পরাজিত হয় তার দল। এবার দায়িত্ব ছাড়ার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর বাংলোও ছেড়ে দিলেন তিনি।

    ত্রিপুরার নতুন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব আজ শপথ নেবেন। এর আগেই গতকাল বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর বাংলো ছেড়ে দিয়েছেন মানিক সরকার। উঠেছেন দলীয় কার্যালয় ভবনের একটি ছোট্ট অতিথি কক্ষে।

    মানিক সরকারের বাড়িভর্তি ছিল শখের বই। মুখ্যমন্ত্রীর বেশ কিছু বই তারা দিয়ে দিয়েছেন রাজ্য সরকারের বীরচন্দ্র স্টেট সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে।

    কোনোদিন সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেননি মানিক সরকারের স্ত্রী পাঞ্চালি। রিকশা করে যাতায়াত করেছেন, বাজার করেছেন। নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে ঘোরেননি। অন্য পাঁচজন সাধারণ নারীর মতোই সংসার সামলেছেন। ফলে ক্ষমতা হারালেও তার খুব একটা পরিবর্তন হবে না।

    ২০ বছর ধরে ভারতের মতন একটি দেশের অন্তর্গত একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকেও সামন্যতম বৈষয়িক চিন্তা করেননি তিনি।লোভ,নীতিহীনতা তাকে স্পর্শ করতেও পারেনি।এমন মানুষগুলো আছে বলেই আজও পৃথিবী সুন্দর,আজও পাখী গায়,আজও ফুল ফোটে।তার এই ত্যাগ,এই সততা,এই নীতিবোধ একদিন ইতিহাসের পাতায় স্বর্নাক্ষরে লেখা থাকবে। লাল সালাম কমরেড মানিক সরকার!

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close