• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

জাতিসংঘ: বড় ঝুঁকিতে গাজার ৫০ হাজার গর্ভবতী

প্রকাশ:  ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ২২:৩৫
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় অন্তত ৫০,০০০ গর্ভবতী বড় ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) ইউএন রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর ফিলিস্তিনি শরণার্থী (ইউএনআরডব্লিউএ) এ তথ্য জানায়।

সংস্থাটি বলছে, চিকিৎসক ও মিডওয়াইফরা সাতটি অপারেশনাল ইউএনআরডব্লিউএ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রসব পরবর্তী এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভবতী নারীদের যত্নে কাজ করছেন।

যুদ্ধ শুরুর আগে গাজায় জাতিসংঘ পরিচালিত এমন মোট ২২টি হাসপাতাল ছিল। সাতটি ছাড়া বাকিগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার করুণ অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান। একই সঙ্গে গাজায় কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীদের ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন তিনি।

এক্সে দেওয়া এক পোস্টে টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস লিখেন, গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থার ধ্বংস হয়ে যাওয়া অত্যন্ত শোচনীয় একটি ব্যাপার। অনিশ্চয়তা এবং আহতদের ভীড়েও গাজার স্বাস্থ্যকর্মীরা নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন, যা অভূতপূর্ব।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, যুদ্ধ শুরুর আগে গাজার হাসপাতালগুলোতে যে পরিমাণ শয্যা খালি ছিলো তার মাত্র ৩৮% এখন পর্যন্ত টিকে আছে।

আর যুদ্ধ শুরুর আগে যে পরিমাণ স্বাস্থ্যকর্মী কাজ করছিলেন তাদের মাত্র ৩০% এই মুহূর্তে কাজ করছেন।

২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনী গাজার হাসপাতাল এবং অ্যামবুলেন্সগুলোর ওপরে ২৪৬ বার হামলা চালিয়েছে।

জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী, গাজার ৩৬টি হাসপাতালের মধ্যে মাত্র নয়টি হাসপাতাল এখন পর্যন্ত অবশিষ্ট আছে।

গাজার ২.৩ মিলিয়ন বাসিন্দার প্রায় ৮০% দক্ষিণ গাজায় বাস্তুচ্যুত হয়েছে। হাজার হাজার বাসিন্দা জাতিসংঘের স্কুলে আটকা পড়েছে বা অস্থায়ী তাঁবুতে অবস্থান নিয়ে ঠান্ডা থেকে নিজেদের রক্ষা করছে।

১১ সপ্তাহের যুদ্ধে কমপক্ষে ২০,৪২৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

গাজার কর্মকর্তাদের তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘন্টায় ১৬৬ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়াও হাজার হাজার মানুষ আহত ও অনেক মরদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছে।

জাতিসংঘের তথ্য বলছে, ইসরায়েলের সামরিক হামলার ফলে গাজায় নিহত প্রায় ৭০% নারী ও শিশু, একই সময়ে আরও ৫৩,৩২০ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে।

ডাব্লিউএইচও প্রধান বলেন, “ক্রমাগত লড়াই খাদ্য এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহে বাধা তৈরি করেছে। এতে গাজায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিচ্ছে।”

জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) সতর্ক করেছে, গাজায় পাঁচ বছরের কম বয়সী অন্তত ১০,০০০ শিশুর জীবন-হুমকিপূর্ণ অপুষ্টির সম্মুখীন।

আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “সব জিম্মি মুক্তি ও হামাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া হবে।”

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, “ইসরাইল যেভাবে গাজায় যুদ্ধ চালাচ্ছে তা মানবিক সাহায্য বিতরণে বিশাল বাধা সৃষ্টি করেছে। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত অঞ্চলের মানুষ দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন।”

এদিকে মানবিক বিপর্যয়ে থাকা গাজা উপত্যকায় আরও সহায়তা পাঠানোর অনুমতি চেয়ে একটি প্রস্তাব পাস করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। সংস্থাটি গাজায় দুর্ভিক্ষের আসন্ন ঝুঁকি ও রোগের বিস্তারের কথাও জানিয়েছে।

দাতা সংস্থা যে সহায়তা গাজায় পাঠাচ্ছে তাকে অপর্যাপ্ত বলে অভিহিত করেছেন মানবাধিকার সংগঠনগুলো।

এরমধ্যে জাতিসংঘ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আনলেও যুক্তরাষ্ট্র বিরোধিতায় সেটি পাস হয়নি।

সহায়তা পাঠানোর অনুমতি প্রস্তাব পাস হওয়ার ঘটনাকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস।

জাতিসংঘ,ফিলিস্তিন,অবরুদ্ধ,ইসরায়েল
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close