• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

এআই ৪০ শতাংশ চাকরি দখল করবে, এটা মানেন না বিল গেটস

প্রকাশ:  ১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮:৩৩
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

মাইক্রোসফট করপোরেশনের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে অনেক দিন ধরেই উৎসাহ প্রকাশ করছেন। সম্প্রতি এক ভবিষ্যদ্বাণী করে বিল গেটস বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাপ্রযুক্তি আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে পৃথিবীর সব মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনবে। যদিও এরই মধ্যে এআইয়ের উত্থান নিয়ে অনেকেই ভয় পাচ্ছেন। এআইপ্রযুক্তি বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের চাকরি খেয়ে ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে এআই সারা বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশ চাকরিতে প্রভাব ফেলবে। বিল গেটস অবশ্য এই ধারণার সঙ্গে একমত পোষণ করেন না। তিনি মনে করেন, ইতিহাসে যখনই নতুন প্রযুক্তি এসেছে, তখনই ভয়ও এসেছে। তবে ভয় কাটিয়ে তারপর নতুন সুযোগও আসে। আইএমএফের প্রতিবেদন দাবি করেছে যে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ না করলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে বৈষম্য বাড়বে।

মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনে গত মঙ্গলবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে বিল গেটস বলেন, ১৯০০ সালে আমাদের কৃষিনির্ভর উৎপাদনশীলতা ছিল। নতুন কিছু নিয়ে মানুষের তখন প্রশ্ন ছিল, ‘আরে, মানুষেরা কী করতে যাচ্ছে?’ আমরা দেখতে পাই যে প্রযুক্তির আবির্ভাবে অনেক নতুন ক্ষেত্র আর নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি হয়। সবাই খামারের কাজের পাশাপাশি নতুন চাকরির সুযোগ পান। এআইয়ের কারণেও এমনটাই হবে।

সাংবাদিক ফরিদ জাকারিয়াকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বিল গেটস ভবিষ্যদ্বাণী করেন যে, এআই প্রত্যেকের জীবনকে আরও সহজ করে তুলবে। বিশেষ করে চিকিৎসকদের কাগজপত্র তৈরি করতে বেশ সাহায্য করবে। চিকিৎসকেরা যে কাজ পছন্দ করেন না, সেটির অংশ নিয়ে এআই কাজ করতে পারে। এই প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য অনেক নতুন যন্ত্রাংশের প্রয়োজন নেই। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাপ্রযুক্তি যেকোনো ফোনে বা কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই ব্যবহার করা যাবে। ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি ৪ দারুণভাবে উন্নত হয়েছে। এটি প্রয়োজন বুঝে পড়তে ও লিখতে পারে। এআই শিক্ষক হিসেবেও কাজ করছে। এআই স্বাস্থ্য পরামর্শ দিতে, প্রোগ্রামিং সংকেত বা কোড লিখতে সাহায্য করার মতো কাজে পারদর্শী। কারিগরি কাজেও সাহায্য করছে। শিক্ষা বা চিকিৎসা খাতে এআই প্রযুক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করাকে চমৎকার বিষয় বলে মনে করেন বিল গেটস। ওপেনএআইয়ের সঙ্গে মাইক্রোসফটের অংশীদারত্বের সম্পর্ক রয়েছে, যার আর্থিক মূল্য শতকোটি মার্কিন ডলার।

বিল গেটস মাইক্রোসফটের সবচেয়ে বড় অংশীদারদের (শেয়ারহোল্ডার) একজন। বিল গেটস সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমাদের গেটস ফাউন্ডেশনের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য হলো, দরিদ্র ও ধনী দেশগুলোর মধ্যে নানা সুবিধা পৌঁছানোর সময়টা কমিয়ে ফেলা। পশ্চিমা দেশের তুলনায় আফ্রিকায় চিকিৎসকের ও শিক্ষকের ঘাটতি অনেক বেশি। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।’

ব্লুমবার্গের বিলিয়নিয়ার্স ইনডেক্স অনুসারে বিল গেটসের সম্পদের পরিমাণ ১৪ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। পৃথিবীর চতুর্থ শীর্ষ ধনী বিল গেটস। বিল গেটস নিজের সব অর্থ দান করার ঘোষণা না দিলে বিশ্বের শীর্ষ ধনীর খেতাব পেতেন।

সাক্ষাৎকারে নিজের সম্পদের কোনো বিষয়ে তাঁর কোনো চিন্তা নেই বলে জানান বিল গেটস। তিনি বলেন, ‘আমার নিজের খরচের জন্য যথেষ্ট অর্থ আছে। আমি নিজেকে ধনীর তালিকার নিচে নামিয়ে এনেছি। যখন আমি সম্পূর্ণভাবে তালিকা থেকে বাদ পড়ে যাব, তখন আমি গর্বিত হব।’ বিল গেটস তাঁর সাবেক স্ত্রী মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ গেটসের সঙ্গে নিজের সম্পদের সিংহভাগ ২০ বছর আগে দান করার ঘোষণা দিয়েছেন। নিজেদের নামে প্রতিষ্ঠিত ফাউন্ডেশনে সেই সম্পদ দান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

২০২২ সালে বিল গেটস জানান, তিনি ২০২৬ সালের মধ্যে প্রতিবছর ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার দান করবেন। তিনি ও আরেক শীর্ষ ধনী ওয়ারেন বাফেটের মতো অংশীদারেরা বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনে প্রায় ১০ হাজার কোটি ডলার দিয়েছেন। বছরে ৯০০ কোটি ডলার হারে বিল গেটস ২০ বছর ধরে দান করে যাচ্ছেন।

চাকরিজীবী,বিল গেটস,কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা,এআই
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close