• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

জিতেছেন ইমরানের প্রার্থী উল্লেখ করে আসন ছাড়লেন তিনি

প্রকাশ:  ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২২:১৯
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

পাকিস্তানের ৮ ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত সাধারণ নির্বাচনে একটি আসনে জয়ী হন জামায়াত–ই–ইসলামীর প্রার্থী হাফিজ নাঈম উর রেহমান। কিন্তু তিনি আসনটি ছেড়ে দিচ্ছেন। তাঁর অভিযোগ, ভোট কারচুপি করে তাঁকে জিতিয়ে দেওয়া হয়েছে।

করাচি শহরের প্রাদেশিক বিধানসভার পিএস–১২৯ আসনে হাফিজ নাঈম উর রেহমানকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। এ সপ্তাহে তিনি বলেছেন, পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফের (পিটিআই) নেতা ইমরান খানের দলর সমর্থন পাওয়া প্রার্থী ওই আসনে তাঁর বিপক্ষে লড়েছিলেন। মূলত এই আসনে তিনিই জয়ী হয়েছেন। স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর নাম সাইফ বারী। তিনি তাঁর চেয়ে ভোট বেশি পেয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের আসন কমাতে তাঁকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। এ কারণে তিনি আসনটি ছেড়ে দিচ্ছেন।

গত সোমবার জামায়াত-ই-ইসলামীর ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে হাফিজ নাঈম উর রেহমান বলেন, ‘কেউ যদি আমাদের অবৈধ উপায়ে জেতাতে চায়, আমরা তা মেনে নেব না।’ তিনি আরও বলেন, ‘জনমতকে সম্মান করতে হবে। বিজয়ীকে জিততে দিন, পরাজিতকে হারতে দিন। কেউ যেন অতিরিক্ত সুবিধা না পায়।’

হাফিজ নাঈম উর রেহমান দাবি করেন, তিনি মোট ২৬ হাজার ভোট পেয়েছেন। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফ বারী পেয়েছেন ৩১ হাজার ভোট। কিন্তু তাঁর ভোটকে কমিয়ে ১১ হাজার দেখানো হয়েছে।

তবে ভোটে কারচুপির এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কর্তৃপক্ষ। এখন পিএস-১২৯ আসনটি কে পাবে, তা নিশ্চিত নয়।

ঘটনাটি গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের নির্বাচন ঘিরে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তার একটি উদাহরণ। গত সপ্তাহের এ নির্বাচন ঘিরে ব্যাপক নির্বাচনী কারচুপি, প্রতারণা, নির্বাচনে হস্তক্ষেপের মতো নানা অভিযোগ সামনে আসতে শুরু করেছে। এ ঘটনায় ইমরান খান সমর্থিত প্রার্থীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সবচেয়ে বেশি।

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গত আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন। তাঁর দলকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি। দলীয় প্রতীকও বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। ফলে তাঁর দলের প্রার্থীদের স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে হয়েছে। এত বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও ভোটারদের ব্যাপক অংশগ্রহণে স্বতন্ত্ররা অধিকাংশ আসন পেয়েছেন। ২৬৫ আসনের মধ্যে পিটিআই–সমর্থিত স্বতন্ত্ররা জিতেছেন ৯৩টি। কোনো দল এত আসন পায়নি।

পিটিআই দাবি করেছে, তাদের সমর্থিত প্রার্থীরা আরও ভোট ও আসন পেতেন। তাদের পক্ষ থেকে ভোটে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তোলা হচ্ছে। গত সপ্তাহে জামায়াত-ই-ইসলামীর করাচির ওই আসন ছেড়ে দেওয়ার ঘটনাটিকে স্বাগত জানিয়েছে পিটিআই।

এবারের নির্বাচনে পিএমএল-এন ৭৫ ও পিপিপি ৫৪ আসন পেয়েছে। তারা ছোট দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে জোট সরকার গঠন করতে চাইছে। নারী ও অমুসলিমদের জন্য সংরক্ষিত আসনগুলো স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পাওয়ার সুযোগ নেই। পিএমএল-এন ও পিপিপি জোট গঠন করে সরকারে গেলে প্রয়োজনীয় ১৬৯ আসন তারা দেখাতে পারবে।

এর আগে ২০২২ সালে ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করে জোট সরকার গঠন করেছিল পিএমএল-এন ও পিপিপি। ওই সময় নওয়াজ শরিফের ভাই শাহবাজ শরিফ প্রধানমন্ত্রী হন। এবারও তিনি প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন।

ইমরান খান অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে তাঁকে তিনটি মামলায় আলাদা আলাদা মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ৭১ বছর বয়সী ইমরান খানের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তার বেশির ভাগই বানোয়াট ও বৃহত্তর রাজনৈতিক কূটচাল। পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকার অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

পাকিস্তান,সরকার,নির্বাচন,ভোট,ইমরান খান
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close