ধর্মঘটে নেমে লাইসেন্স স্থগিতাদেশ পেলেন দক্ষিণ কোরীয় চিকিৎসকরা
সরকারি নির্দেশের পরও ধর্মঘট ছেড়ে কাজে না ফেরায় আন্দোলনরত চিকিৎসকদের লাইসেন্সে স্থগিতাদেশ দেওয়া শুরু করেছে দক্ষিণ কোরিয়া।
সম্পর্কিত খবর
এরই জেরে ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চিকিৎসকদের কাজে যোগ দেওয়ায় সময়সীমা বেঁধে দেয় কর্তৃপক্ষ।
সরকার বলছে, ধর্মঘটের কারণে চিকিৎসা সেবা ও অস্ত্রোপচার ব্যহত হচ্ছে। এজন্য জনস্বাস্থ্যের সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে সরকার।
দেশটির আইন অনুযায়ী, সরকার মেডিকেল খাতের পেশাজীবীদের ধর্মঘট বন্ধের নির্দেশ দিতে পারে ও তাদের লাইসেন্স স্থগিত করতে পারে। এমনকি সর্বোচ্চ তিন বছরের জেল ও জরিমানাও করতে পারে।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে উপ-স্বাস্থ্যমন্ত্রী পার্ক মিন-সু বলেন, “সরকারি নির্দেশের পর মাত্র ৫৬৫ চিকিৎসক কাজে যোগ দিয়েছেন। প্রায় ৯,০০০ চিকিৎসক ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছে। এখন সরকার আইনি ব্যবস্থা প্রয়োগ শুরু করছে।”
তিনি বলেন, “সরকারের কাজে ফেরার নির্দেশ লঙ্ঘন করলে তিন মাসের জন্য তাদের লাইসেন্স স্থগিত করা হবে।”
এছাড়াও বিশেষায়িত মেডিকেল সার্টিফিকেট পাওয়ার চেষ্টারতদের সনদ পাওয়া এক বছর পর্যন্ত দেরি হয়ে যেতে পারে বলেও জানান তিনি।
এতে চিকিৎসকদের কর্মজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে মন্তব্য করেন পার্ক মিন-সু।
এদিকে রবিবারও রাজধানী সৌলেতে বিক্ষোভ করতে দেখা যায় অনেক চিকিৎসককে। যেখানে ধর্মঘটে না থাকা অনেক চিকিৎসকও ছিলেন। বিক্ষোভরতদের অনেকের হাতে, আমরা অপরাধী নই' লেখা ব্যানার ছিল।
উন্নত দেশগুলোর মধ্যে রোগী প্রতি চিকিৎসকের সংখ্যা রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে বাড়ছে বৃদ্ধ নাগরিকের সংখ্যা। ফলে চিকিৎসকের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে মেডিকেলে ভর্তির আসনসংখ্যা বছরে ৩,০০০-৫,০০০ এ উন্নীত করার পরিকল্পনা নেয় সরকার।
সরকারের এই পরিকল্পনায় মেডিকেল শিক্ষার মানের অবনতি হবে বলে দাবি ধর্মঘটরত চিকিৎসকদের। তারা বলছেন, চিকিৎসক বৃদ্ধি পেলে অপ্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেওয়ার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে। নতুন চিকিৎসকেরা প্লাস্টিক সার্জারি ও ডার্মাটোলজির মতো অপ্রয়োজনীয় সেবায় ঝুঁকতে পারেন।
আর এই ধর্মঘটের বিরোধীরা বলছেন, বেতন ও স্ট্যাটাস রক্ষায় অতিরিক্ত আগ্রহের কারণেই ওই চিকিৎসকরা ধর্মঘট করছেন।
একটি বেসরকারি জরিপের মতে, দক্ষিণ কোরিয়ার তিন-চতুর্থাংশ মানুষ চিকিৎসকদের ধর্মঘটের বিরোধিতা করছেন।
বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় এক লাখ ৪০ হাজার চিকিৎসক আছেন। জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকেরা ধর্মঘট না করলেও অনেকেই ধর্মঘটের সমর্থনে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।