• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

৫৪ কোটি টাকা মুক্তিপণে ছাড় পেয়েছে এমভি আব্দুল্লাহ, জানাল জলদস্যুরা

প্রকাশ:  ১৪ এপ্রিল ২০২৪, ২১:১৮
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

মুক্তিপণ হিসেবে ৫৪ কোটি টাকা পাওয়ার পর বাংলাদেশি জাহাজ “এমভি আবদুল্লাহ” ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সোমালি জলদস্যুরা। রবিবার ভোরে জাহাজটি ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানান দুই জলদস্যু।

জলদস্যুরা জানায়, বাংলাদেশি জাহাজ “এমভি আবদুল্লাহ” ও এর ২৩ জন নাবিকের জন্য তারা ৫০ লাখ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি টাকায় ৫৪ কোটি ৩৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা) বুঝে পাওয়ার পর সেটি ছেড়ে দেন।

আবদিররাশিদ ইউসুফ নামে এক জলদস্যু রয়টার্সকে বলেন, ‘‘দুই রাত আগেই আমাদের কাছে ডলার আনা হয়...। আমরা যাচাই করে দেখেছি, ডলারগুলো আসল না জাল। তারপর আমরা ডলারগুলো কয়েকটি দলের মধ্যে ভাগ করে সরকারি বাহিনীকে এড়িয়ে জাহাজ ত্যাগ করি।’’

জাহাজের সব নাবিকসহ জাহাজটিকে মুক্তি দেওয়া হয় বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে সোমালিয়ার সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা সাড়া দেননি।

আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ১২ মার্চ দুপুরে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিশু থেকে প্রায় ৬০০ নটিক্যাল মাইল পূর্বে সোমালি জলদস্যুর কবলে পড়ে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ “এম ভি আবদুল্লাহ”। এরপর তারা জাহাজটি সোমালিয়া উপকূলে নিয়ে যায়।

নিজ দেশের উপকূলে নেওয়ার নয় দিনের মাথায় দস্যুরা মুক্তিপণের জন্য জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এরমধ্যে সোমালি পুলিশ ও আন্তর্জাতিক বাহিনী ওই জাহাজে অভিযান চালাতে চাইলেও নাবিকদের সুরক্ষা বিবেচনায় তাতে সায় দেয়নি জাহাজটির মালিকপক্ষ।

তবে নানা পর্যায়ে দর-কষাকষির পর দস্যুদের সঙ্গে সমঝোতা আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছছিল বলে ঈদের আগেই আভাস দিয়েছিল জাহাজটির মালিকপক্ষ।

বিভিন্ন সূত্রের বরাতে জানা যায়, পাঁচ মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণ পাওয়ার পর “এম ভি আবদুল্লাহ” ছেড়ে দেয় সোমালি জলদস্যুরা।

২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ উপকূলরেখা জুড়ে সোমালি জলদস্যুরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল। তবে সোমালিয়ার আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সমর্থনে উপকূলরেখা বরাবর নজরদারি বৃদ্ধি হলে ওই অঞ্চলে জলদস্যুতা কমে আসে।

সাম্প্রতিককালে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের জেরে ইয়েমেন উপকূলের লোহিত সাগরে হুতিদের আনাগোনা বেড়ে গেলে ভারত মহাসাগর থেকে নজর কিছুটা সরিয়ে নেয় যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের নৌ-বাহিনী। এই সুযোগে গত কয়েক মাস ধরেই মহাসাগরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল সোমালি জলদস্যুরা।

এর আগে, ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর আরব সাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল একই প্রতিষ্ঠানের জাহাজ “এমভি জাহান মণি”। ওই জাহাজের ২৫ বাংলাদেশি নাবিকের পাশাপাশি এক ক্যাপ্টেনের স্ত্রীসহ ২৬ জনকে ১০০ দিন জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। পরে মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। সেবার ৩০ লাখ মার্কিন ডলারের বিনিময়ে জিম্মি নাবিকরা মুক্তি পায় বলে জনশ্রুতি আছে। ওই সময় কেনিয়া হয়ে সোমালিয়ায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল টাকাভর্তি দুটি ব্যাগ।

তবে এবার কিভাবে উভয় পক্ষ মুক্তির বিষয়ে একমত হলো তা জানা যায়নি।

সমুদ্র সৈকত,জাহাজ,সোমালিয়া
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close