প্রথমবারের মতো সিনিয়র আইনজীবীদের সনদ দিলেন প্রধান বিচারপতি
সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আপিল বিভাগে নতুন সিনিয়র আইনজীবীদের সনদ প্রদান করেছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। প্রধান বিচারপতির এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি ও সিনিয়র আইনজীবীরা।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে নতুন তালিকাভুক্ত ২৭ জন সিনিয়র আইনজীবীকে এ সনদ তুলে দেওয়া হয়।
সম্পর্কিত খবর
সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবীদের দায়বদ্ধতা কেবল সুপ্রিম কোর্টেই নয়, সমগ্র বিচার বিভাগেই। বিচার বিভাগের সার্বিক মানোন্নয়নে সিনিয়র আইনজীবীদের বর্ধিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা প্রয়োগ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
সদ্য তালিকাভুক্ত সিনিয়র আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে, বিচার সেবার সহজিকরণ, ডিজিটাইলেজশন ও বিচার বিভাগের মানোন্নয়নে আপনাদের গঠনমূলক মতামত ও পরামর্শ আমাদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। আপনাদের সুচিন্তিত মতামত পেলে আমরা বিচার বিভাগের জন্য একটি দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে সক্ষম হব বলে আমার বিশ্বাস।
প্রধান বিচারপতি বলেন, সিনিয়র আইনজীবী শুধু একটি টাইটেল নয় বরং তার চেয়েও বেশি কিছু। কোনো সিনিয়র আইনজীবী যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করেন এবং রিভিউ শুনানিতে অংশ না নেন, তাহলে তার সনদ বাতিলের বিষয়েও আমরা প্রয়োজনে সিদ্ধান্ত নেব।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে সনদ দিলাম, আর আপনারা কিছুই করলেন না, কোনো মামলায় আপনার কোনো রেকর্ডই থাকবে না, এটা লাগামহীনভাবে চলেতে পারে না।
বিচার ব্যবস্থা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে সিনিয়র আইনজীবীদের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে জুনিয়র আইনজীবীদের কাছে নিজেদেরকে রোল মডেল হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বানও জানান প্রধান বিচারপতি।
অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম সিনিয়র আইনজীবীদের প্রথমবারের মতো সনদ প্রদানের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য প্রধান বিচারপতিকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি সিনিয়র আইনজীবীদের বিচার বিভাগের মর্যাদা রক্ষা ও পেশাগত মান উন্নয়ন করতে আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী। অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নতুন ২৭ জন সিনিয়র আইনজীবী হলেন— অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী, মো. দেলোয়ার হোসেন, আব্দুস সোবহান, মো. আসাদুজ্জামান, একেএম ফজলুল হক খান ফরিদ, মো. রুহুল কুদ্দুস, মো. অজিউল্লাহ, ড. নাইম আহমেদ, কামরুন্নেছা রত্না, এম কামরুল হক সিদ্দিকী, পঙ্কজ কুমার কুন্ডু, মো. রমজান আলী শিকদার, আবুল খায়ের, শাহ মঞ্জুরুল হক, এবিএম সিদ্দিকুর রহমান খান, এম এ আজিম খাইর, ফাওজিয়া করিম ফিরোজ, মমজাত উদ্দিন আহমেদ মেহেদী, গোলাম আব্বাস চৌধুরী, সৈয়দ মিজানুর রহমান, জহিরুল ইসলাম খান, রবিউল আলম বুদু, মো. আব্দুল নূর, ফরহাদ আহমেদ, আব্দুল মাবুদ মাসুদ, মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান খান ও আবু সায়েদ (সাগর)।
