• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

রায়ের আনুষঙ্গিক কাগজ না পাওয়ার অভিযোগ ড. ইউনূসের আইনজীবীর

প্রকাশ:  ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ২২:৪৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

শ্রম আইন লঙ্ঘনের যে মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের ছয় মাস করে কারাদণ্ড হয়েছে, সেই মামলার বিচারসংশ্লিষ্ট কাগজপত্র বারবার চেয়েও পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন তাঁদের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন। হাইকোর্টের বর্ধিত ভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আজ মঙ্গলবার দুপুরে তিনি এ অভিযোগ করেন।

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের করা ওই মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দিয়ে ১ জানুয়ারি রায় দেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রায় ঘোষণার পর আপিল করার শর্তে ড. ইউনূসসহ চারজনকে এক মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন একই আদালত।

সাক্ষীদের জবানবন্দি, ক্রস এক্সামিনেশন (জেরা) ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক–সংবলিত কাগজপত্রের জন্য আবেদন করা হয়েছে বলে জানান আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রতিদিন আমাদের আইনজীবীকে পাঠাচ্ছি। আজকে দেব, কালকে দেব—এ কথা বলেছে। কিন্তু বিভিন্ন কথা বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এসব দিচ্ছেন না। এতে ড. ইউনূসসহ চারজন তাঁদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’

আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আপিল করার জন্য আমাদের সময় হচ্ছে ৬০ দিন। শ্রম আদালত এক মাসের মধ্যে আপিল করার বাধ্যবাধকতা দিয়েছেন। এর মধ্যেও রায়ের কপি দিতে ১১ দিন চলে গেছে। বাকি কাগজগুলোও এখনো দেওয়া হয়নি, যার ওপর ভিত্তি করে রায় দেওয়া হয়েছে।…যদি কাগজগুলো পেতাম, তাহলে হয়তো ইতিমধ্যে আপিল দাখিল করে ফেলতে পারতাম। আজকেও আইনজীবীকে পাঠিয়েছি।’

ড. ইউনূসের আইনজীবী আরও বলেন, ‘শ্রম আদালতে কন্ট্রাডিকশন (সাক্ষীদের বক্তব্যের অসংগতি) দিয়েছি ১০৯টি, বাদীপক্ষের সাক্ষীদের বিপক্ষে সাজেশন দিয়েছি ১০৫টি, লিখিত আর্গুমেন্ট দিয়েছি—এসবের কপি আদালতের অনুমতি ছাড়া সরবরাহ করা হবে না বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, যা আইনিবিরোধী।…এক ঘণ্টার ভেতরে যা দেওয়া সম্ভব, আজকে ২৩ দিন হয়ে গেল—আমরা আনুষঙ্গিক কাগজগুলো পাইনি, যা ন্যায়বিচারের প্রতি একধরনের প্রতিবন্ধকতা।’

আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, নিয়ম হচ্ছে আপিলের শর্তে জামিন চাওয়া যায়। শ্রম আইনের ২১৭ ধারা অনুসারে আপিলের সময় হচ্ছে ৬০ দিন। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬(২ক) ধারায় জামিনের কথা বলা হয়েছে। যদি এক বছর পর্যন্ত সাজা হয়, তাহলে আপিলের শর্তে জামিন দেওয়া যায়। সেখানে ৩০ দিন বলা হয়নি। অর্থাৎ আপিল করার জন্য যত দিন সময়, জামিনও তত দিন হওয়ার কথা। শ্রম আদালত ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করার কথা বলেছেন, ৩০ দিনের জামিন দিয়েছেন। আদেশ দিয়ে বলেছেন ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আপিলের মেমো দাখিল করতে হবে। এখানে আইন খণ্ডিত হয়েছে।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাগজপত্র না পেলে কী করবেন—এমন প্রশ্নে আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমরা আপিল করব। ড. ইউনূস আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আপিল করতে হবে। নির্ধারিত সময়ে কাগজপত্র না পেলে হয়তো আপিলটা দাখিল করে বাকি কাগজের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। কী ধরনের একটা বেকায়দার মধ্যে আমরা আছি, তারই বর্ণনা দিলাম।’

‘রায়ের কপি তো তাঁরা পেয়েছে’ শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষে ওই মামলা লড়েছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। ড. ইউনূসসহ চারজনের আইনজীবীর বক্তব্যের বিষয়ে হাইকোর্টের বর্ধিত ভবনের সামনে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপিল করতে কী লাগবে? শ্রম আদালতের রায়ের কপি। তা তো উনি (আবদুল্লাহ আল মামুন) নিজেই বললেন ১১ তারিখে (জানুয়ারি) পেয়েছেন। ১১ জানুয়ারি যদি উনি পেয়ে থাকেন, তাহলে আপিল করে অভিযোগ থাকলে বলতে পারেন। শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল হলো যথাযথ ফোরাম। কাজেই সাজা মাথায় নিয়ে আপিল না করে সাজাপ্রাপ্ত অবস্থায় এ ধরনের বক্তব্য আদালত অবমাননার শামিল।

আদালত,বিচার,ড. মুহাম্মদ ইউনূস,মামলা,আইন ও আদালত,আইন ও বিচার
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close