মামলায় শিশুর পরিচিতি প্রচারে গণমাধ্যমকে সতর্ক করলেন হাইকোর্ট
শিশু আদালতে বিচারাধীন কোনও মামলায় শিশুর নাম, ঠিকানা, ছবি বা তার পরিচিতি প্রচারে গণমাধ্যমকে সতর্ক থাকতে বলেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ বিষয়টি তদারকি করতে আইনসচিব ও তথ্য সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এ বিষয়ে জারি করা এক রুলের শুনানি শেষে মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
সম্পর্কিত খবর
আদালতে রিট আবেদনকারী ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়্যেদুল হক সুমনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সাগুফতা তাবাসসুম আহমেদ। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোখলেছুর রহমান। আর ওই ইংরেজি দৈনিকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কাজী এরশাদুল আলম।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, গত ৫ নভেম্বর ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার ‘বয় গেটস টেন ইয়ার্স ফর কিলিং ক্লাসমেটস’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশ করে। সে খবরে শিশু অপরাধীর পরিচিতি প্রকাশ করা হয়েছে; যা স্পষ্টত শিশু আইন, ২০১৩ এর ২৮ ধারার লঙ্ঘন।
এ কারণে রিট করা হয়। এ রিটের শুনানি নিয়ে গত বছরের ১৯ নভেম্বর শিশু আইন, ২০১৩ এর ২৮ ধারা অনুসারে শিশু অপরাধীর নাম, ঠিকানা, ছবিসহ তার পরিচিতি সংবাদপত্র, ম্যাগাজিনসহ যেকোনো সংবাদমাধ্যমে প্রচার-প্রকাশ বন্ধের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে রুল দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ডেইলি স্টারে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে ১৫ দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে ইংরেজি পত্রিকাটির সম্পাদককে বলা হয়।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, আইনে স্পষ্টভাবে আছে—শিশু আসামির নাম ব্যবহার করতে পারবেন না। ওই পত্রিকাটির একটি নিউজে একজন শিশুর নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করেছে। তাকে আইডেন্টিফাই করা হয়েছে। বিষয়টি হাইকোর্টে আনার পর শুনানি শেষে রায় দেন। রায়ে আদালত বলেছেন—নাম, ঠিকানা এবং শব্দ চয়নের কারণে পত্রিকাটি ইলিগ্যাল কাজ করেছে। আদালত উনাদের সতর্ক করে দিয়েছেন যেন পরবর্তীতে আর এ ধরনের ঘটনা না হয়। পাশাপাশি সব গণমাধ্যমকে বলা হয়েছে—এটা (নির্দেশ) মেনে চলার জন্য, যেন শিশু-কিশোরের নাম ও ঠিকানা প্রকাশ না পায়।
শিশু আইন, ২০১৩ এর ‘শিশু-আদালতের কার্যক্রমের গোপনীয়তা’ শিরোনামে ২৮ ধারায় বলা হয়েছে:
(১) শিশু-আদালতে বিচারাধীন কোনো মামলায় জড়িত বা সাক্ষ্য প্রদানকারী কোনো শিশুর ছবি বা এমন কোনো বর্ণনা, সংবাদ বা রিপোর্ট প্রিন্ট বা ইলেকট্রনিক মাধ্যম অথবা ইন্টারনেটে প্রকাশ বা প্রচার করা যাইবে না যাহা সংশ্লিষ্ট শিশুকে শনাক্তকরণে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সাহায্য করে।
(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, শিশুর ছবি, বর্ণনা, সংবাদ বা রিপোর্ট প্রকাশ করা শিশুর স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর হইবে না মর্মে শিশু-আদালতের নিকট প্রতীয়মান হইলে উক্ত আদালত সংশ্লিষ্ট শিশুর ছবি, বর্ণনা, সংবাদ বা রিপোর্ট প্রকাশের অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে।
পিবিডি/এসএম