• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

বৈশাখে তারুণ্যের ভাবনা ও প্রত্যাশা

প্রকাশ:  ১৬ এপ্রিল ২০২২, ১৫:১১ | আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২২, ০১:৩৯
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

এসো হে বৈশাখ, এসো এসো। কবিগুরুর এই শুভ প্রত্যয়কে ঘিরেই বাঙালি জাতি ঘরে ঘরে নববর্ষকে বরণ করে নিতে উন্মুখ। ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে’ চিরায়ত বাঙালির জীবনে নতুন সম্ভাবনা বয়ে আনবে নতুন বছর এমনটিই প্রত্যাশা সবার। পহেলা বৈশাখ আমাদের বাংলা বর্ষের প্রথম দিন। ইংরেজী ক্যালেন্ডার অনুযায়ী প্রতি বছর ১৪ই এপ্রিল আমাদের দেশে এ দিনটি আসে। বাংলা নববর্ষ হিসেবে দিনটিকে একটি সার্বজনীন লোক উৎসব হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাংলা ভাষাভাষি মানুষ দিনটিকে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে পালন করে থাকে। নতুন বছরকে কেন্দ্র তরুণ প্রজন্মেরও রয়েছে নানা ভাবনা ও প্রত্যাশা।তাদের সেই ভাবনা ও প্রত্যাশার কথা জানাচ্ছেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মী মো.ফয়সাল আহমেদ (ফাহিম)।

বৈশাখ আমাদের ঐতিহ্য

বাঙালির চিরায়ত সংস্কৃতি রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণের আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়েই শুরু হবে নতুন বছরের আনুষ্ঠানিকতা। একইভাবে রাজধানী জুড়ে বর্ষবরণের আনুষ্ঠানিতার কমতি নেই কোথাও।

এখন যেমন নববর্ষ নতুন বছরের সূচনার নিমিত্তে পালিত একটি সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে, এক সময় এমনটি ছিল না। তখন নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ আর্তব উৎসব তথা ঋতুধর্মী উৎসব হিসেবে পালিত হত। তখন এর মূল তাৎপর্য ছিল কৃষিকাজ, কারণ প্রাযুক্তিক প্রয়োগের যুগ শুরু না হওয়া পর্যন্ত কৃষকদের ঋতুর উপরই নির্ভর করতে হত। ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর সম্রাটরা হিজরি পঞ্জিকা অনুসারে কৃষি পণ্যের খাজনা আদায় করত। কিন্তু হিজরি সন চাঁদের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় তা কৃষি ফলনের সাথে মিলত না। এতে অসময়ে কৃষকদেরকে খাজনা পরিশোধ করতে বাধ্য করতে হত। খাজনা আদায়ে সুষ্ঠুতা প্রণয়নের লক্ষ্যে মুঘল সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। তিনি মূলত প্রাচীন বর্ষপঞ্জিতে সংস্কার আনার আদেশ দেন। সম্রাটের আদেশ মতে রাজকীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী ফতেহউল্লাহ সিরাজি সৌর সন এবং আরবি হিজরী সনের উপর ভিত্তি করে নতুন বাংলা সনের নিয়ম বিনির্মাণ করেন।কিন্তু বাংলাদেশে ১৯৬৬ সালে মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এর নেতৃত্বে গঠিত হওয়া ১৯৬৬ সালের একটি কমিটিতে পুরনো বাংলা দিনপঞ্জিকে সংশোধিত করা হয়। এখানে প্রথম পাঁচ মাসকে ৩১ দিন, আর বাকি মাসগুলোকে ৩০ দিন বানানো হয়। প্রতি অধিবর্ষে ফাল্গুন মাসে ৩১ দিন ধার্য করা হয়। ১৯৮৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে এই দিনপঞ্জি গ্রহণ করা হয়। এরপর, জাতীয় দিনপঞ্জির সূচনা ও প্রতি বছর নববর্ষ ১৪ এপ্রিলেই হয়ে থাকে।

মো.রাজ মাহমুদ ,

সিএসই বিভাগ,

নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ।

.

নববর্ষ নিয়ে আসুক আলোর বার্তা

নববর্ষ আমাদের জীবনে আসে নতুন স্বপ্ন, প্রত্যাশা আর সম্ভাবনা নিয়ে। পুরনো বছরের সকল ব্যর্থতা, নৈরাশ্য ও জরা-জীর্ণতা ভুলে নতুন বছরকে স্বাগত জানাই। মূলত পহেলা বৈশাখ, এই শব্দ দুটো শুনলেই আবেগাপ্লুত হয়ে যাই আমরা। বর্তমান সময়ে তরুণ প্রজন্মের কাছে বৈশাখ মানে শুধুমাত্র বিশেষ একটি দিন। নববর্ষ হলো বাঙালির সহস্র বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য, রীতি-নীতি, প্রথা, আচার অনুষ্ঠান ও সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। তবে আমরা জানি প্রতিবছর জাঁকজমকভাবে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হলেও এবার তার ব্যতিক্রম দেখা যাবে। কারণ রমজান মাস চলছে। বিদায়ী বছরের দুঃখ-বেদনা, নৈরাশ্য, স্বজনহারা আর্তনাদ, স্থবিরতার, হতাশা ও বঞ্চনাকে পেছনে ফেলে ভাল কিছু প্রাপ্তির স্বপ্ন নিয়ে মানুষ বরণ করে নেবে নতুন বছরকে। আমাদের সমাজে নববর্ষকে কেন্দ্র করে অশালীন ও আপত্তিকর কিছু চিত্র সামনে আসে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ থেকে বিরত থাকতে হবে সমাজকে। তরুণ সমাজের নববর্ষের শুরু হোক উদ্ভাবনীমূলক কর্ম-পরিকল্পনা নিয়ে। আমাদের প্রত্যেকের ভালো পরিকল্পনাগুলো সম্পন্ন করার প্রত্যয় নিয়ে যদি আমরা নতুন বছর শুরু করি তাহলে দেশের সামগ্রিক উন্নতি হবে। বাংলার ইতিহাস ঐতিহ্যকে আগামীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজে আমাদের তরুণদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে। অসাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, স্বৈরাচারিতা, অন্যায় ও অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে উঠতে হবে তরুণ প্রজন্মকে। নতুন বছরের প্রতিটি দিন, প্রতিটি ক্ষণ সকল প্রকার অশুভ শক্তিকে বিনাশ করে সবার জন্য মঙ্গল বার্তা বয়ে আনুক। প্রত্যাশা নতুন বছর সবার জন্য সুখ ও সৌভাগ্য বহন করে আনবে । নববর্ষে আমাদের জীবন কল্যাণের প্রাচুর্যে ভরে উঠুক। শান্তিময় হয়ে উঠুক দেশ ও জাতি। সর্বোপরি অন্যায়, অবিচার, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত একটা সমৃদ্ধশালী উন্নয়নশীল সমাজ ও জাতি চাই। পহেলা বৈশাখ আমাদের জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি বয়ে আনবে এমনটাই প্রত্যাশা।

সিনথিয়া সুমি,

ইতিহাস বিভাগ,

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

.

গাড় হোক বাঙ্গালিয়ানা

বৈশাখে অনেক স্থানে ইলিশ মাছ দিয়ে পান্তা ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা থাকে। এই দিনের একটি পুরনো সংস্কৃতি হলো গ্রামীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন। এর মধ্যে নৌকাবাইচ, লাঠি খেলা কিংবা কুস্তি একসময় প্রচলিত ছিল। বাঙালির নববর্ষ এক অনন্য বৈশিষ্ট্যময় উৎসব । পরে এর সাথে যুক্ত হয় ব্যবসা-বাণিজ্যের দেনা-পাওনার হিসাব মিটানো । দিনে দিনে পহেলা বৈশাখ হয়ে ওঠে এক সার্বজনীন সাংস্কৃতিক আনন্দ উৎসব। প্রলয়োল্লাস‌‍ কবিতায় নজরুল বলেছেন ধ্বংস আর যুদ্ধ থেকেই নতুন সৃষ্টি তেমনি বাংলা নববর্ষ কালবৈশাখীর ঝড় বা রুদ্র রূপ থেকেই অনুপ্রেরণা পায় বাঙালি । পহেলা বৈশাখ শুরুর দিক ছিল মূলত গ্রামাঞ্চল । গ্রামীণ - মেলা লোকজ খেলাধুলা ও নৃত্য ছিল প্রধান আকর্ষণ । দিনে দিনে তার শহরাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ে । পহেলা বৈশাখ বাঙালির আদি পরিচয় বহনকারী ও অসাম্প্রদায়িক উৎসব। নতুন বছরের উৎসবের সঙ্গে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কৃষ্টি ও সংস্কৃতির নিবিড় যোগাযোগ। গ্রামে মানুষ ভোরে ঘুম থেকে ওঠে, নতুন জামাকাপড় পরে এবং আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের বাড়িতে বেড়াতে যায়। বাড়িঘর পরিষ্কার করা হয় এবং মোটামুটি সুন্দর করে সাজানো হয়। বিশেষ খাবারের ব্যবস্থাও থাকে। কয়েকটি গ্রামের মিলিত এলাকায়, কোন খোলা মাঠে আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলার। মেলাতে থাকে নানা রকম কুটির শিল্পজাত সামগ্রীর বিপণন, থাকে নানারকম পিঠা-পুলির আয়োজন। অনেক স্থানে ইলিশ মাছ দিয়ে পান্তা ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা থাকে। এই দিনের একটি পুরনো সংস্কৃতি হলো গ্রামীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন। এর মধ্যে নৌকাবাইচ, লাঠি খেলা কিংবা কুস্তি একসময় প্রচলিত ছিল।

আরাফাত রাহমান,

বাংলা বিভাগ,

তেজগাঁও কলেজ।

.

সকল ধর্মের পহেলা বৈশাখ

পহেলা বৈশাখ বাঙালি জাতির এক আত্নচেতনা ও মনোতৃপ্তির এক অন্যতম দিন। এছাড়া বাঙালির একীভূত হওয়ার এক উৎসব না বললে অসমাপ্ত রয়ে যাবে কথাটা। পহেলা বৈশাখ বা নববর্ষের নামটায় যেনো বাঙালি ঐতিহ্য ও ইতিহাসের সুগন্ধ মিশে আছে। তাই তো আমরা তার আভাস পাই প্রকৃতির মাঝে, আকাশে বাতাসে। অন্যদিকে আধুনিকতার শহরের বুকেও একদিনের জন্য বাঙালির হয়ে সেজে উঠে তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে বয়সের ছাপ পড়া মানুষটিও। চারিদিক যেনো হিন্দু,মুসলিম বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবাই একটাই নামে নিজেকে পরিচয় দেয় আমি বাঙালি, আমি উজ্জীবিত এক প্রাণ যেখানে অসাম্প্রদায়িকতার চেতনা টকবক করছে। কিন্তু এই পহেলা বৈশাখ কেনো বাঙালির চেতনা, কেনো অসাম্প্রদায়িকতার ছোঁয়া বলা হয়? আপনি হয়তো অনেক বর্ষ পঞ্জিকার কথা শুনেছেন। আর এই অন্যান্য বর্ষ পঞ্জিকা কোনো না কোনোভাবে কোনো ধর্মকে কেন্দ্র করে তার বহিপ্রকাশ। কিন্তু একমাত্র এই পহেলা বৈশাখ, যাকে আমরা নববর্ষ বলে জানি, তা শুরু হয়েছে শুধু বাঙালিয়ানার উপর ভিত্তি করে। কোনো ধর্মকে কেন্দ্র করে নয়। এ নববর্ষে দোকানে দোকানে হালখাতার প্রচলন চালু হয় অনেক আগে থেকেই। আমরা যে মাছে ভাতে বাঙালি তারও বাংলার নতুন বছরেই জানান দিয়ে যায় আমাদের। পহেলা বৈশাখে ইলিশ মাছ আর ভাতের আয়োজন করা হয় বাড়িতে বাড়িতে, বিভিন্ন আধুনিকতার ছোঁয়া দামি দামি হোটেলগুলোতে। বিভিন্ন এলাকায় এলাকায় পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে মেলার আয়োজন। শতশত মানুষের ভিড়ে যেনো নিজের সব পরিচয় হারিয়ে আমিও এক আদর্শ বাঙালি হয়ে তাদের মাঝে নিজেকে মিলিয়ে ফেলি। চারিদিকে শুধু রঙিনে রঙিনে আর নানান রকম ঢাক-ঢোলের চারুশিল্প ফুঁটে উঠে কাপড়ে কাপড়ে। বাংলাদেশ, ভারত সহ বিভিন্ন দেশে বাঙালিরা হয়ে উঠে একই আত্নার প্রতীক। আমিও সেই একই আত্নার প্রতীক বলছি। আমি আমার এই বাঙালিয়ানাকে ছড়িয়ে দিবো পুরো বিশ্বে। আমার বাঙালি সংস্কৃতি আমার অহংকার, এ আমার এক চেতনা। যেখানে আমি আমার অস্তিত্ব খুঁজে পাই। আর তা প্রবলভাবে জানান দিয়ে যায় আজকের এই পহেলা বৈশাখ।

অজিত মনি দাস,

পপুলেশন সায়েন্স এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট,

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

.

এ এক ভিন্ন বৈশাখ

পহেলা বৈশাখ আদিবাসীদের একটি অন্যতম সামাজিক উৎসব। পহেলা বৈশাখকে আদিবাসীরা বিভিন্ন নামে ডাকে।চাকমারা বলে বিঝু, তঞ্চঙ্গ্যারা বলে বিষু, মারমার বলে সাংগ্রাই, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীরা বলে বৈসাবি। তিন দিন ব্যাপী এই উৎসব পালনকরে থাকে। উৎসবের প্রথম দিন নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্যে দিয়ে আদিবাসী তরুণ তরুণী, ছোট বড় সব ছেলে মেয়ে এক সাথে জড়ো হয়ে পুরনো বছরের সব ক্লান্তি, কষ্ট, ভুলে গিয়ে,নিজের জন্য, পরিবারের জন্য ভালো কিছু প্রার্থনা করে নতুন বছরকে সাদরে আমন্ত্রণ জানায়। উৎসবের দ্বিতীয় দিনে প্রতিটি ঘরে ঘরে তৈরি করা হয় নানা রকমের পিঠা আর বিশেষ করে এক ধরনের তরকারি যেটা (পাইসন) নামে তঞ্চঙ্গ্যারা ডেকে থেকে। এই তরকারিটি মূলত বিভিন্ন রকমের পাহাড়ি সবজি দিয়ে বানানো হয়। তাদের ধরনা মতে এই তরকারি ওষুধের মতো কাজ করে থাকে। এই পাইসন খাওয়ার মধ্যে দিয়ে পুরনো বছরের সব রোগ দূর হয়ে যায়। এই দিনে ছেলে মেয়ে এক সাথে প্রতিটি বাড়িতে দাওয়াত খেতে যায়। এই দিনে বিভিন্ন জায়গায় আদিবাসীরা নিজেদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান,খেলাধুলার আয়োজন করে থাকে, যেমন- চাকমা,তঞ্চঙ্গ্যাদের ঘিলা খেলা, বুলি খেলা, ম্রোদের গো হত্যা, মারমাদের পানি খেলা ইত্যাদি। উৎসবের ৩য় দিন মানে বাংলার ১তারিখে সবাই বিহারে প্রদিপ জ্বালিয়ে নতুন বছরের জন্য প্রার্থনা করে থাকে এবং তরুণ তরুণীরা এক সাথে মিলে গ্রামের বয়স্কদের স্নান করায়। এইভাবে তারা নিজেদের উৎসবে পালন করে থাকে।

সুমী তঞ্চঙ্গ্যা,

ইংরেজি বিভাগ,

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এআরএম/জেএস

পহেলা বৈশাখ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close