• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

কবরীর চোখে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্পের বিবর্তন

প্রকাশ:  ১৮ এপ্রিল ২০১৯, ১৯:০৪ | আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০১৯, ১৯:৩৬
হাসনাত কাদীর

কিংবদন্তী অভিনেত্রী কবরী তার দেখা বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্পের উত্থান-পতনের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলেন শিক্ষার্থীদের সামনে। কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ আয়োজিত ‘কবরীর চোখে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্পের বিবর্তন’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি তার কাজের অভিজ্ঞতা ও চলচ্চিত্রশিল্পের বিশ্লেষণাত্মক মূল্যায়ন তুলে ধরেন। সিইউবি অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সেমিনারে কবরী বলেন, মাত্র ১৩ বছর বয়সে সুভাস দত্ত পরিচালিত 'সুতরাং' চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আমার অভিনয়যাত্রা শুরু। এরপর লম্বা একটি ক্যারিয়ার গড়তে পারার অন্যতম কারণ- আমার সহকর্মীদের পেশাদারী মনোভাব ও সহযোগীতাপূর্ণ আচরণ।

তিনি আরও বলেন, ষাট-সত্তরের দশকে আমরা যখন কাজ করেছি তখন কাজের প্রতি আমাদের ডেডিকেশন ও ভালোবাসা ছিলো মারাত্মক। আমরা আমাদের কাজের প্রতি সৎ ও শ্রদ্ধাশীল ছিলাম। ফলে নিজেদের সর্বোচ্চ ঢেলে দিয়ে একটা কাজকে সুন্দর করার চেষ্টা থাকতো। যেকারণে আমরা কিছু ভালো কাজ করতে পেরেছি বলে মনে করি।

চলচ্চিত্র শিল্পের বর্তমান সংকট ও সম্ভাবনা সম্পর্কে তিনি বলেন, চলচ্চিত্রের প্রতি ভালোবাসা ও নিষ্ঠার অভাবই আমাদের আজকের অবস্থার জন্য দায়ী। তবে আমি আশাবাদী যে, এখন এখানে চলচ্চিত্র নিয়ে তরুণ প্রজন্ম পড়াশোনা করছে এবং ভালোবেসে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে এগিয়ে আসছে। আশা করি, আমাদের চলচ্চিত্রের সুদিন অচিরেই ফিরে আসবে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখার পাশাপাশি কবরী শিক্ষার্থীদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন।

প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি চলচ্চিত্রাঙ্গনে কাজের ক্ষেত্রে নারীর নিরাপত্তার প্রশ্নে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও পেশাদারিত্বের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া যেকোন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির বিরুদ্ধে তিনি নারীদেরকে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানান।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সিনেমাটোগ্রাফার আব্দুল লতিফ বাচ্চু। তিনি চলচ্চিত্র শিক্ষার্থীদেরকে ভালো নির্মাতা হিসেবে গড়ে ওঠার ব্যাপারে ‘সিরিয়াস ও সৎ’ হওয়ার পরামর্শ দেন।

কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ‘ফিল্ম এন্ড টিভি’ বিভাগের প্রধান ড. নুরুল ইসলাম বাবুলের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন, ভাইস চ্যান্সেলর প্রোফেসর ড. মোহাম্মাদ মাহফুজুল ইসলাম এবং প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রোফেসর ড. নজরুল ইসলাম।

ড. নুরুল ইসলাম বাবুল পূর্বপশ্চিমকে বলেন, সেমিনারটি তরুণ চলচ্চিত্র শিক্ষার্থীদেরকে আমাদের চলচ্চিত্রের ইতিহাস ও ভবিষ্যতের রূপরেখা অনুধাবনে সহায়ক হিসেবে ভূমিকা রেখেছে।

তিনি একজন চলচ্চিত্র শিক্ষক হিসেবে আগামী দিনের বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের উন্নয়নে পঠন-পাঠনের উপর গুরুত্ব প্রদান করে বলেন, দেশে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে চলচ্চিত্র শিক্ষার সুযোগ আরও অবারিত করতে হবে। আমি মনে করি আমাদের দেশের চলচ্চিত্র অচিরেই বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। কারণ, অনেক তরুণ এখন জেনে-বুঝে, স্ট্যাডি করে চলচ্চিত্র নির্মাণে ঝুঁকছেন। তাদের অনেকের ভেতরই আমি প্রবল সম্ভাবনা দেখতে পাই।

ড. বাবুল বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার পরামর্শ থাকবে- এখানে কেউ শর্টকাটে সাফল্য খুঁজবে না। চলচ্চিত্র একটা লাইফটাইম প্র্যাকটিস। জীবন দেখো, মানুষের হৃদস্পন্দন অনুধাবন কোর, তাদের দুঃখে দুঃখী হবে, সুখে আনন্দিত হবে। আর প্র্যাকটিস চালিয়ে যাবে। তাহলে তোমাদের হাত ধরে বিশ্বদরবারে আমাদের চলচ্চিত্র মাথা তুলে দাঁড়াবে।

পিবিডি/ এইচকে

কবরী,ড. বাবুল
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close