দেশের নিট রিজার্ভ এখন ১৮ বিলিয়ন ডলারের নিচে

নিট রিজার্ভের পরিমাণ এখন ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নিচে নেমে গেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন। বুধবার (৪ অক্টোবর) গুলশান ক্লাবে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরামের (আইবিএফবি) বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

আইবিএফবির সভাপতি ও এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন রশীশের সভাপতিত্বে আইবিএফবি বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা।

জাহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী রিজার্ভ ২১ দশমিক ১ বিয়িলন ডলার। একই সময়ে পেমেন্টে করতে হবে বা দেনা রয়েছে প্রায় ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার। এগুলো হলো, এসডিআর অ্যালোকেশন দুই বিলিয়ন ডলার, এফসি ফরেন কারেন্সি ক্লিয়ারিং একাউন্টস ৯৭৮ মিলিয়ন ডলার, আকুর দেনা ৫৮৬ মিলিয়ন ডলার, আইএমএফকে এক বছরের মধ্যে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হবে। সব মিলিয়ে ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার।

তিনি বলেন, দেশে কতো বিদেশি মুদ্রা ঢুকছে এবং কতো মুদ্রা বেরিয়ে যাচ্ছে, তার হিসাব রিজার্ভ দিয়ে মিলছে না। সাধারণত এই হিসাব কখনো ধনাত্মক, আবার কখনো ঋণাত্মক। কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, এই হিসাব বেশ কিছুদিন ধরে ঋণাত্মক।

জাহিদ হোসেন বলেন, দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার পেছনে বৈশ্বিক কারণের সঙ্গে দেশিয় কারণও আছে। সেটা হলো সরকারের নীতি পরিবর্তন। সরকারের অগতানুগতিক নীতির কারণে গত ২৪ মাস বা ২ বছরে প্রতি মাসে ১০০ কোটি ডলার করে রিজার্ভ কমেছে। ২০২২ সাল থেকে দেশে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের প্রবাহও কমছে। ২০২২ সালে যেখানে মাসে ২০০ কোটি ডলার আসতো, সেখানে ২০২৩ সালের প্রথম ৩ ত্রৈমাসিকে দেশে প্রতি মাসে গড়ে ১৫০ থেকে ১৬০ কোটি ডলার প্রবাসী আয় এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, এটি অনন্য; এ কারণে যে এটি একদিক থেকে সংকোচনমূলক, আরেক দিক থেকে সম্প্রসারণমূলক। এটা কোনোভাবে ব্যাখ্যা করা যায় না। আবার বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহ কমলেও সরকারের ঋণ বাড়ছে।

মুদ্রার বিনিময় হার নিয়ে ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ বলেন, বাজারে বিদেশি মুদ্রা চাহিবামাত্র পাওয়া না গেলে মুদ্রার প্রতিযোগিতামূলক, বাজারভিত্তিক, নমনীয় ও একক বিনিময় হার নির্ধারণ করেও লাভ হবে না।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম