• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

পেঁয়াজ নিয়ে বাংলাদেশে সমস্যা থাকবে না: কৃষিমন্ত্রী

প্রকাশ:  ০৮ অক্টোবর ২০২৩, ২৩:৫৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী দিনে পেঁয়াজ নিয়ে বাংলাদেশে কোনো সমস্যা থাকবে না বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। রোববার (৮ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সম্মেলন কক্ষে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির (এফপিএমসি) সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তারসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা কেন ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করছি না এটা নিয়ে দেশটি থেকে আমাদের ওপর প্রচুর চাপ ছিল। কিন্তু আমরা তাদের কথা শুনিনি। আমরা চেয়েছি বাজারে দাম যা আছে থাক। আমাদের কৃষকরা উপকৃত হোক। একই সঙ্গে স্থানীয়ভাবে পেঁয়াজ উৎপাদন করতে চাই আমরা। সামনে শীতকাল আসছে। প্রচুর সবজি আসবে। ফলে সব সবজির দাম কমে আসবে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের জলবায়ু অনুযায়ী পেঁয়াজ উৎপাদনের জন্য খুবই উপযোগী। আমাদের বিজ্ঞানীরা পেঁয়াজের ভালো জাতও আনতে পেরেছেন। গতবছর যেহেতু আমাদের কৃষকরা পেঁয়াজের দাম পাননি, সেহেতু এবার যাতে দাম পান সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা পেঁয়াজ আমদানি করিনি। এতে যদি সমালোচনা হয় তবে সেটা আমরা মাথা পেতে নিচ্ছিঅ মূল কথা হচ্ছে, পেঁয়াজে আমরা সেলফ সাফিশিয়েন্ট হতে চাই। মানুষ একটু দামে পেঁয়াজ কিনে সাময়িক কষ্ট হলেও আমাদের চাষিরা কিন্তু উৎসাহিত হয়েছেন।

পেঁয়াজ ও আলুর বাজারদর নিয়ন্ত্রণে সরকার হাল ছেড়ে দিয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমরা মোটেই হাল ছেড়ে দিইনি। আমরা এখনো যথেষ্ট তৎপর। সরাসরি উৎপাদনের পার্টটি হচ্ছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের। বাজারদর নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের। তারপরও আমি দায়িত্ব এড়াতে পারি না। মন্ত্রিপরিষদ পদ্ধতিতে সব মন্ত্রীদের যৌথভাবে দায়িত্ব রয়েছে। সব বিপর্যয়ের জন্য এখানে সকল মন্ত্রীরাই দায়ী। সুতরাং আমরা মোটেই হাল ছেড়ে দিইনি।

তিনি বলেন, কোল্ড স্টোরেজের মালিকরা খুবই অসহযোগিতা করছে। তারা সঠিকভাবে পণ্যে সরবরাহ করছে না। এটা একটা বড় অন্তরায়। মাঠ পর্যায়ে আমাদের কর্মকর্তারা চাপ সৃষ্টি করলে তারা সাপ্লাই দেয় না। এতো অসহযোগিতা স্বত্বেও প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমাদের দেশে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। কিন্তু এটি খুবই পচনশীল একটি কৃষিপণ্য। এপ্রিল ও মে মাসে পেঁয়াজ তোলা হয়। কিন্তু এগুলো দুই মাসের বেশি থাকে না। এগুলো পচে যায় কিংবা শুকিয়ে যায়। এ কারণেই পেঁয়াজ নিয়ে আমাদের সমস্যা। এ কারণেই নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে বিদেশ থেকে আমাদের পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। গত বছর আমাদের দেশে প্রচুর পেঁয়াজ হলেও কৃষকরা সেটা বিক্রি করতে পারে নাই। আলুরও একই অবস্থা। আপনারাই রিপোর্ট করেছেন আলু রাস্তায় ফেলে দিয়েছে। কিন্তু এ বছর যেহেতু আলুর উৎপাদন ২-৩ লাখ টন কম হয়েছে সেহেতু কোল্ড স্টোরেজের মালিকরা ও আড়ৎদাররা ব্যাপকভাবে মুনাফা অর্জন করেছে। এতো তো লাভ করা উচিত না মানুষের। যেখানে ২০ টাকা খরচ হয় না সেটাই ৪০ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, গতবছর পেঁয়াজ সংরক্ষণের একটা প্রযুক্তি নিয়ে এসেছি আমরা। রাজশাহী, পাবনা ও ফরিদপুরে ৬০ থেকে ৭০টি করে সংরক্ষণাগার করে দিয়েছি। সেসব সংরক্ষণাগারে চাষিরা পেঁয়াজ রাখছে। এগুলো ভালোভাবেই সংরক্ষণ করা যাচ্ছে। এ প্রযুক্তিতে ৫ শতাংশ পেঁয়াজও পচে নাই। এ প্রযুক্তিটা সফলভাবে কাজ করলে আগামী দুই বছরের মধ্যে বিদেশ থেকে আর পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে না। আমাদের বিজ্ঞানীরা এমন পেঁয়াজের জাত পেয়েছে যেগুলা প্রতি হেক্টর জমিতে ৪০ থেকে ৫০ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। আলু নিয়েও সমস্যা হওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমাদের ব্যবস্থার ঘাটতির কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

কৃষিমন্ত্রী,সমস্যা,পেঁয়াজ,বাংলাদেশ,ড. আব্দুর রাজ্জাক
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close