• বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

আমদানির প্রভাব

কমতে শুরু করেছে আলু ও ডিমের দাম

প্রকাশ:  ০৮ নভেম্বর ২০২৩, ০১:২৭
শিপন মন্ডল

আমদানির প্রভাবে কমতে শুরু করেছে আলু ও ডিমের দাম। পাইকারি ও খুচরা উভয় পর্যায়ে আলুর দাম কেজিতে কমেছে ১৫ টাকা। পাইকারিতে ভারতীয় আলু কেজি ৩০ টাকা এবং দেশি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৪ টাকাতে। যদিও খুঁচরা বাজারে আলুর দাম এখনো সেভাবে কমেনি। বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে। অপরদিকে, পাইকারিতে লাল ডিম প্রতিটি ৯ টাকা ৭০ পয়সা ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ৯ টাকা ৩০ পয়সায়। এক দিনে দাম কমেছে প্রতিটি ২০ পয়সা। যদিও খুচরা এখনো ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে দেড়শ টাকাতেই।

পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, ‘আমদানির কারণে দাম কমেছে’- এ তথ্য ঠিক নয়। তাদের যুক্তি, চাহিদা আগের তুলনায় কম। ফলে দাম কমেছে।

তারা বলছেন, বর্ষার সময় ডিমের চাহিদা বাড়ে। সে জন্য দামও বেশি থাকে। কিন্তু এখন শীত মৌসুম শুরু হয়েছে। তাই বাজারগুলোতে শিম, মুলা, নতুন আলু, ফুলকপি ও বাধাকপিসহ শীতকালীন অনেক সবজি এসেছে। সেগুলোর চাহিদা বেশি, দামও কমতে শুরু করেছে।

দেশে দফায় দফায় বেড়ে রেকর্ড ১৭০ টাকায় পৌঁছায় ডিমের ডজন। এমন পরিস্থিতিতে বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে গত ১৮ সেপ্টেম্বর প্রথম দফায় চার কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর আরো দুই দফায় যথাক্রমে ৬ কোটি ও ৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

তিন দফায় মোট ১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। অনুমতি দেওয়ার দেড় মাস পর প্রথম চালানে ভারত থেকে দেশে প্রায় ৬২ হাজার ডিম এসেছে।

প্রতিটি ডিমের আমদানি মূল্য দেখানো হয়েছে ৫ টাকা ৪৩ পয়সা। এর ওপর শুল্ক এক টাকা ৮০ পয়সা। ঋণপত্র বা এলসি, পরিবহন ও রপ্তানি খরচ, পোর্ট ও সিঅ্যান্ডএফ চার্জ ধরলে ৯ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১০ টাকার মতো আমদানি খরচ হতে পারে। খুচরা পর্যায়ে এসব ডিম প্রতি পিস ১২ টাকা দরে বিক্রি হওয়ার কথা।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি ডজন ফার্মের বাদামি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা দরে। তবে পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে ডজন ১৫০ টাকা দরে বিক্রি করছেন ছোট ব্যবসায়ীরা। এতোদিন ডিমের ডজন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছিলো।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী আবুল বলেন, বৃষ্টি-বাদলের সময়ে মানুষ বাজারে না গিয়ে আশপাশের দোকান থেকে ডিম কিনে নেয়। এতে ডিমের চাহিদা বেড়ে যায়। ফলে দামও বাড়তে থাকে। কিন্তু এখন শীত শুরু হয়েছে। বাজারে শীতের সবজি আসা শুরু করেছে। অনেকেই নতুন সবজি কিনছেন। ফলে ডিমের চাহিদা কমেছে। এ কারণে দামও কমছে। তবে দাম কমার ক্ষেত্রে আমদানিরও কিছুটা প্রভাব রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

এদিকে, সরকারের বাজারে নজরদারি জোরদার করার পরও দাম নিয়ন্ত্রণে আসছিলো না আলুর। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আলু আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় লাখ টনের বেশি আলু আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) থেকে মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) পর্যন্ত আমদানি হয় ২ হাজার ৭০০ টন। এরপরই পাইকারি বাজারে কমতে শুরু করে আলুর দাম। তবে, আলু চাষের সাথে জড়িতরা বলছেন, মৌসুমের আগে এ আমদানি আত্মঘাতি। হিমাগারের মালিকদের অতিমুনাফার সুযোগ না দিয়ে আরো আগেই আমদানি করা উচিৎ ছিলো।

পাইকারি বাজারের ব্যাবসায়িরা বলছেন, আমদানির খবর আসতেই বাজারে আলুর দাম কেজি প্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে গেছে। তবে এই কম দামের নেতিবাচক প্রভাব কৃষকের বহন করতে হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই।

দেশের বিভিন্ন বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আসা আলু ঢুকছে। প্রতি কেজি আলুতে খরচ পড়ছে ২৬ টাকা। পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।

কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, মুন্সীগঞ্জের লাল ও সাদা উভয় প্রকার আলু পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৩৪ টাকায়। রাজশাহীর আলুর দাম একটু বেশি, বিক্রি হচ্ছে লাল সাদা আলু ৩৮ থেকে ৩৯ টাকা কেজিতে। যদিও খুঁচরা বাজারে আলুর দাম এখনো সেভাবে কমেনি। বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি।

আমদানি,প্রভাব,দাম,ডিম,আলু
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close